গরমে বেড়েছে চার্জার ফ্যান বিক্রি, বেড়েছে দামও
প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ জুন ২০২৩, ১১:১৩:৫৩ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: কয়েকদিন থেকেইে তীব্র তাপদাহ যাচ্ছে। তীব্র গরমের সাথে বেড়েছে লোডশেডিং। এতে ভিড় বেড়েছে ইলেকট্রনিক্স পণ্যের দোকানে। চার্জার ফ্যান, চার্জার লাইট, হাই স্পীড ফ্যানের জন্য ক্রেতারা ঘুরছেন নগরীর জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার, আম্বরখানা, জেলরোডসহ বিভিন্ন জায়গায় এসব পণ্যের দোকানে। সবার চাহিদার প্রথমেই আছে চার্জার ফ্যান ও ব্যাকাপ লাইট। এরপরই বিক্রি হচ্ছে হাই স্পীড ফ্যান। নিজেদের জন্য না হলেও বাচ্চাদের জন্য বাধ্য হয়ে চার্জার ফ্যান কিনতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অনেক ক্রেতা। এসময় কয়েকদিনের ব্যবধানে দামও অনেক বেড়েছে বলে অভিযোগ করেন।
ব্যবসায়ীরা জানান, গত এক সপ্তাহে সিলেটে চার্জার লাইট, ফ্যান ও জেনারেটরের চাহিদা বেড়েছে। প্রায় প্রতিটি ইলেকট্রনিক্স পণ্যের দোকানে দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত ভিড় করছেন ক্রেতারা।
বুধবার নগরীর জিন্দাবাজারে কথা হয় সুফিয়া বেগম নামে পাঠানটুলার এক গৃহিনীর সাথে। তিনি বলেন, প্রচন্ড গরমের সাথে লোডশেডিংও খুব বেড়েছে, আমরা না হয় কষ্ট করে থাকতে পারি, কিন্তু বাসায় বাচ্চাকাচ্চা আছে। তাদের জন্যই বাধ্য হয়ে চার্জার ফ্যান কিনতে এলাম। দুই ঘরের জন্য দুটো ফ্যান কিনেছি। এখানে এলে একটু কমে পাওয়া যায় শুনেছি। নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে এই গৃহিণী আরও বলেন, কাল স্থানীয় এক দোকানে দরদাম করেছিলাম। কিন্তু ওই দোকানে একটা মাত্র ব্র্যান্ডের ফ্যান ছিল। এখানে অনেক রকমের ফ্যান পাওয়া যায়। বিদেশি ব্র্যান্ডের দুটো ফ্যান নিলাম, দাম পড়েছে ৮ হাজার করে ১৬ হাজার টাকা।
বিক্রেতারা জানান, বেচাকেনাও ভালো। বাজারে ১২, ১৪ ও ১৬ ইঞ্চির চার্জার ফ্যান বেশি চলছে। তবে স্ট্যান্ড ফ্যানের চাহিদাও ভালো। ব্যবসায়ীদের দাবি, গত কয়েক দিনে চার্জার ফ্যানের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দামও বেড়েছে। এগুলো আমদানি পণ্য। মার্কেটে সরবরাহে কম হলেই দাম বেড়ে যায়।
সবুজ বিপণীতে চার্জার ফ্যান কিনতে আসা ইমতিয়াজ রাফি বলেন, প্রচণ্ড গরম পড়েছে, লোডশেডিং ভয়াবহ। রাতের ঘুমাতে কষ্ট হয়। তাই চার্জার ফ্যান কিনতে এসেছি। সাধারণত আমরা যে চার্জার ফ্যান ২৫ শ টাকা দিয়ে কিনি এটার দাম এখন ২৯ শ ৩ হাজার হয়ে গেছে।
এই মার্কেটের রাফি ইলেকট্রনিকের শাকিল আহমদ জানান, আমরা এইসব মালামাল ঢাকা থেকে আনা। এই কয়েকদিনে চার্জার ফ্যানসহ কিছু পণ্যের চাহিদা বেড়ে গেছে। বেশিদামে কিনলে বিক্রিও বেশি দামে করতে হয়।
এদিকে বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখাগেছে, গত এক সপ্তাহের তুলনায় প্রতিটি চার্জার ফ্যানের মান ও আকারভেদে এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা বেড়েছে। বেশি বেড়েছে বিদেশ থেকে আমদানি করা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ফ্যান। এসব ফ্যানের দাম পড়ছে চার হাজার থেকে আট হাজার টাকা। ব্যান্ড ছাড়া নরমাল ফ্যানেও দাম বেড়েছে ৪ থেকে ৫শ টাকা।
দেশীয় অনেক প্রতিষ্ঠানও এখন চার্জার ফ্যান তৈরি করে থাকে। ফলে আগে এ বাজার পুরোপুরি আমদানিনির্ভর থাকলেও এখন তা অনেকটাই কাটতে শুরু করেছে। এরপরও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কম হওয়ায় বাজারে প্রতিযোগিতা কম। বিক্রেতারা জানান, কয়েকটি প্রতিষ্ঠান যে দামে চার্জার ফ্যান বাজারে ছাড়ে, সেই দামেই কিনতে হয়। এখন গরম বেশি পড়ায় আমদানিকারকেরা ভালো ব্যবসা করছে। তবে পাইকারি বিক্রেতারা এ নিয়ে সরাসরি কিছু বলতে রাজি নন।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলেছেন, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, এলসি খোলার জটিলতার কারণে আমদানি খরচ আগের তুলনায় বেড়েছে। তবে গরম বেশি পড়ার কারণে সংকটকে পুঁজি করে দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।
জিন্দাবাজার প্যারিস ম্যানসনের মা ইলেকট্রনিক্সের কর্ণধার আলিম উদ্দীন বলেন, গরম ও লোডশেডিংয়ের কারণে ফ্যানের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে ঢাকার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এজন্য আমাদেরকেও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে আমরা সামান্য লাভেই পাইকারি বা খুচরো বিক্রি করি।