খাদ্য ভেজালের দৌরাত্ম্যে হুমকির মুখে শিশুরা
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ জুন ২০২৩, ৭:৩১:০৪ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিা, চিকিৎসা এই পাঁচটি মৌলিক চাহিদার মধ্যে অন্যতম খাদ্য। খাদ্য মানুষের শরীরে কাজ করার শক্তি উৎপন্ন করে। তবে বেঁচে থাকতে হলে শুধু খাদ্য নয় চাই নিরাপদ খাদ্য। অনিরাপদ খাদ্য গ্রহণে স্বাস্থ্য ঝুঁকি যেমন রয়েছে তেমনি শরীরে বাসা বাঁধে নানা রোগব্যাধি।
অপ্রিয় হলেও সত্য, আমাদের দেশে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানকালে অধিকাংশ খাদ্যেই ভেজালের উপস্থিতি পাওয়া যায়। খাদ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে ক্রেতার কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত ভেজালের শেষ নেই। খাদ্যে ভেজালের দৌরাত্ম্যে হুমকির মুখে শিশু থেকে বয়োজ্যেষ্ঠরা।
কথায় আছে মাছে-ভাতে বাঙালি। অথচ এই মাছ দীর্ঘ সময় টাটকা দেখানোর জন্য ব্যবহার করা হয় ফরমালিন। শাক-সবজির উৎপাদন বৃদ্ধিতে ব্যবহার করা হয় অত্যাধিক পরিমাণে রাসায়নিক। যা মানবদেহের তির কারণ। এছাড়া ফলমূলের উৎপাদন বৃদ্ধি ও টাটকা দেখাতে যে পরিমাণ ফরমালিন ব্যবহার করা হয় তা রীতিমতো যে কোনো প্রাণীর শরীরের জন্য হুমকিস্বরূপ।
গবেষকদের তথ্যমতে, শুধু ভেজাল খাদ্য গ্রহণের কারণে দেশে প্রতি বছর প্রায় ৩ লাখ মানুষ ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছে। ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা দেড় লাখ, কিডনি রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ। এছাড়া গর্ভবতী মায়ের শারীরিক জটিলতাসহ গর্ভজাত বিকলাঙ্গ শিশুর সংখ্যা প্রায় ১৫ লাখ। এই পরিসংখ্যানটি আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ভয়াবহ।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, প্রতিবছর প্রায় ৬০ কোটি মানুষ দূষিত খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়। এ কারণে প্রতিবছর মারা যায় ৪ লাখ ৪২ হাজার মানুষ। এছাড়া ৫ বছরের চেয়ে কম বয়সী শিশুদের ৪৩ শতাংশই খাবারজনিত রোগে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে প্রতিবছর প্রাণ হারায় ১ লাখ ২৫ হাজার শিশু।
তাই সময় এসেছে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে সবার এক হওয়ার। এজন্য ভেজালবিরোধী অভিযান কঠোর করা জরুরি। আইনের যথাযথ প্রয়োগও নিশ্চিত করতে হবে। ভেজালপণ্য ও অসাধু ব্যবসায়ীদের ঠেকাতে অভিযান অব্যাহত থাকলে ভেজালকারীদের দৌরাত্ম্য কমবে আশা করা যায়। তবে শুধু আইন দিয়ে নয় ব্যক্তি ও সামাজিক আন্দোলনও গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই আমরা পাবো নিরাপদ খাদ্যের সুন্দর একটি পৃথিবী।