সড়ক দুর্ঘটনায় বিশ্বব্যাংকের ফোকাস
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ জুন ২০২৩, ১২:৩০:৩১ অপরাহ্ন
বাংলাদেশ বিশ্ব ব্যাংক এর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলাপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) থেকে ৮৫৮ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা ঋণ পাচ্ছে। ৩০ বছরের দীর্ঘ সময়ে শোধ করতে হবে এই ঋণ। আর প্রথম ৫ বছর থাকবে গ্রেস পিরিয়ড অর্থাৎ এ সময়ে কোন অর্থ পরিশোধ করতে হবে না। বিশ্বব্যাংক এই অর্থ দিচ্ছে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও সড়ক নিরাপত্তা বিধানের জন্য।
বিশ্বব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, এই ঋণের অর্থের মধ্যে ৫০০ মিলিয়ন ডলার দেয়া হচ্ছে এগ্রিকালচার এন্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন, এন্টারপ্রেনিয়রশীল এন্ড রেজিলেন্স (পার্টনার) কর্মসূচির জন্য। এই কর্মসূচীর লক্ষ্য হচ্ছে শস্য বৈচিত্র্যকরণ উন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তা এবং বাংলাদেশের কৃষি খাদ্য পদ্ধতিতে জলবায়ু সহনীয়তা সৃষ্টির মাধ্যমে কৃষি খাতের রূপান্তরে সহায়তা প্রদান। এছাড়া ৩৫৮ মিলিয়ন ডলার রাখা হয়েছে রোড সেইফটি প্রোজেক্ট এর জন্য। দক্ষিণ এশিয়ায় বিশ্বব্যাংকের এ ধরনের ঋণ প্রদান এই প্রথম।
বাংলাদেশে এতো বিপুল সংখ্যক সড়ক দুর্ঘটনা এবং জেলা সড়ক মহাসড়ক সমূহে দুর্ঘটনার ফলে এতো বেশী মানুষ হতাহত হওয়ার ঘটনা লক্ষ্য করে বিশ্বব্যাংক এই অর্থ বরাদ্দ করেছে। সড়কে নিরাপত্তা বিধান ও সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা হ্রাসে সহায়তায় এ ধরনের প্রকল্প গ্রহণের জন্যই এই অর্থ বরাদ্দ করেছে বিশ্বব্যাংক। সড়কের ইঞ্জিনিয়ারিং ডিজাইন, সাইন স্থাপন, পথচারীদের নিরাপদে চলাচলের ব্যবস্থা করা, গতি সীমা নিয়ন্ত্রণ এবং জরুরী সেবার সুযোগ সুবিধা সম্বলিত সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণে পদক্ষেপ নেয়া হবে এই প্রকল্পের আওতায়। এছাড়া দুর্ঘটনা পরবর্তী সেবাদান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও নির্দিষ্ট জেলা হাসপাতালগুলোতে টোলমুক্ত ও আধুনিক অ্যাম্বুলেন্সসহ অত্যাধুনিক জরুরী সেবা ব্যবস্থা চালুর ক্ষেত্রেও সহায়তা করবে এই প্রকল্প।
বলা বাহুল্য, যে মহতী দু’টি উদ্দেশ্য নিয়ে বিশ্বব্যাংক উপরোক্ত অর্থ প্রদান করছে, এগুলো এখন বাংলাদেশে বার্নিং ইস্যু। কৃষিপণ্য ও শষ্য উৎপাদনে কৃষকদের সহায়তা করা না গেলে এদেশের খাদ্য নিরাপত্তা যে মুখ থুবড়ে পড়বে এতে কোন সন্দেহ নেই। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কৃষি উৎপাদন অনেক ক্ষেত্রেই ঝুঁকির মুখে পড়ছে। এছাড়া খাদ্য শস্য ও কৃষিপণ্য উৎপাদন করে কৃষকেরা যদি এর উপযুক্ত মূল্য না পায় তবে দেশে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হতে বাধ্য। বর্তমানে মধ্যস্বত্বভোগীরা বিপুল মুনাফা করলেও লক্ষ লক্ষ কৃষক বঞ্চিত। শস্য উৎপাদন ব্যয় বাড়লেও, কৃষি উপকরণে ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে না প্রয়োজন অনুযায়ী। এতে কৃষকেরা বিপন্ন বোধ করছেন নিজেদের পেশা নিয়ে। আর সড়ক দুর্ঘটনা কমার পরিবর্তে দিন দিন বাড়ছে। বিশ্বব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হলে সড়কে হতাহতের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসবে। আমরা বিশ্বব্যাংকের বর্ণিত প্রকল্প খাতে এই বিপুল অর্থ যথাযথ কাজে ব্যবহার করা হবে এমন প্রত্যাশা রাখি। আশা করি এতে কোন ব্যত্যয় হবে না কোন অজুহাতেই।