সিলেট বিভাগের ১৪ লাখ শিশু খাবে লাল-নীল ক্যাপসুল
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ জুন ২০২৩, ৩:৪৫:৩৫ অপরাহ্ন
১৮ জুন সাড়ম্বরে ‘ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন’
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটে ১৮ জুন সাড়ম্বরে উদযাপিত হবে ‘জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন’। দিনব্যাপী এ প্লাস ক্যাম্পেইনে সিলেট বিভাগের মোট ১৩ লাখ ৯৫ হাজার ২৮৮ শিশুকে খাওয়ানো হবে ক্যাপসুল। এরমাঝে ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ১ লাখ ৫৭ হাজার ২২৮ শিশুকে নীল এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী ১২ লাখ ৩৮ হাজার ৬০ জন শিশুকে লাল রংয়ের ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
বিভাগের মাঝে সিলেট বিভাগের সিলেট মহানগরী ও জেলার ১৩ উপজেলায় মোট ৫ লক্ষ ৩২ হাজার ৬২৯ শিশুকে খাওয়ানো হবে ক্যাপসুল।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সাথে পৃথক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানায় সিলেট সিটি করপোরেশন ও জেলা সিভিল সার্জন অফিস।
সিলেট মহানগরী : সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় মোট ৭৮ হাজার ১২৯ শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এরমাঝে ৬-৯ মাস বয়সী শিশু ৮ হাজার ৮৬৫ এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী শিশু ৬৯ হাজার ২৬৪ জন। মহানগরীর ৪২টি ওয়ার্ডের স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে মোট ৩৪৮টি কেন্দ্রে চলবে এ ক্যাম্পেইন। এরমাঝে রয়েছে ১টি স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্র, ৩২টি নিয়মিত ইপিআই টিকাদান কেন্দ্র, ২০৮ টি অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্র, ৮২টি ভিটামিন এ অস্থায়ী কেন্দ্র এবং ২৫টি অতিরিক্ত কেন্দ্র। এ কার্যক্রম সফলের লক্ষ্যে সিসিকের স্বাস্থ্য বিভাগের ডাক্তার ও কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়াও ৬৯৬ জন স্বেচ্ছাসেবী ৪২ জন সুপারভাইজার কাজ করবেন। প্রয়োজনে আরো স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ দেয়া হবে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে নগর ভবনে আয়োজিত সাংবাদিক ওরিয়েন্টেশনে এসব তথ্য জানানো হয়। সিসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম সুমন জানান, এ ক্যাম্পেইন সফলের লক্ষ্যে মসজিদে মসজিদে প্রচারণা এবং মাইকিং চালাচ্ছে সিসিক। তারপরও যদি কোনো অসুবিধার কারণে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী শিশুদের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো সম্ভব না হয় তবে আরও ১৫ দিন ‘সার্চিং প্রোগ্রাম’ করে নির্দিষ্ট বয়েসি শিশুদের খুঁজে বের করে তা খাওয়ানো হবে। এছাড়াও মহানগরীর ইপিআই কেন্দ্রগুলোতে ভিটামিন এ ক্যাপসুল রাখা হবে- যাতে কোনো শিশু এ থেকে বঞ্চিত না হয়।
মতবিনিময়কালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বদরুল হক সকল শিশুদের যথা সময়ে কেন্দ্রে নিয়ে যেতে সিলেট মহানগরের অভিবাবকদের প্রতি আহবান জানান। এক্ষেত্রে তিনি সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন।
সাংবাদিক ওরিয়েন্টেশনে উপস্থিত ছিলেন সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ রেনু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, সাংবাদিক শাহ দিদার আলম চৌধুরী নবেল, দৈনিক জালালাবাদের যুগ্ন বার্তা সম্পাদক আহবাব মোস্তফা খানসহ আহবাব মোস্তফা খানসহ সিলেট কর্মরত বিভিন্ন টেলিভিশন ও পত্রিকার সাংবাদিকবৃন্দ।
সিলেট জেলা : এদিকে সিলেট জেলার ১৩ উপজেলায় মোট ৪ লক্ষ ৫৪ হাজার ৫০০ শিশুকে খাওয়ানো হবে ভিটামিন এ ক্যাপসুল। এরমাঝে ৬-১১ মাস বয়সী ৪৬ হাজার ৯৫৬ জন শিশুকে নীল ক্যাপসুল ১ লক্ষ ইউনিট আর ১২-৫৯ মাস বয়সী ৩ লক্ষ ৮৮ হাজার ১৭৩ শিশুকে লাল ক্যাপসুল ২ লক্ষ ইউনিট খাওয়ানো হবে।
বৃহস্পতিবার সিলেট সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ইপিআই ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত।
তিনি জানান, আগামী ১৮ জুন দেশব্যাপী ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইন উদযাপিত হবে। সিলেটের ১৩ উপজেলার মধ্যে সিলেট সদর উপজেলায় ৪৫ হাজার ৪৪৩ জন, দক্ষিণ সুরমায় ২৮ হাজার ৩৬৮ জন, বিশ^নাথ ২৭ হাজার ৯৬ জন, বালাগঞ্জ ১৫ হাজার ৪৭৮ জন, ওসমানীনগর ২৪ হাজার ৬০০, গোলাপগঞ্জ ৪৪ হাজার ৯৮০ জন, ফেঞ্চুগঞ্জ ১৩ হাজার ৪৯৭ জন, কানাইঘাট ৪৫ হাজার ৬২৩ জন, গোয়াইঘাট ৫৬ হাজার ৪০ জন, বিয়ানীবাজার ৩৮ হাজার ৬০৭ জন, জৈন্তাপুর ২৮ হাজার ৭৫০ জন, কোম্পানিগঞ্জ ৩৩ হাজার ৭৪৭ জন এবং জকিগঞ্জ ৩২ হাজার ৯০০ জন।
এছাড়া ১২-৫৯ মাসের ৪ লাখ ১৫ হাজার ৬০৯ জন শিশুকে ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এর মধ্যে সিলেট সদর উপজেলায় ৫৫ হাজার ৯৬৩ জন, দক্ষিণ সুরমায় ৩৪ হাজার ৬৬৩ জন, বিশ^নাথ ২৫ হাজার ৫০ জন, বালাগঞ্জ-ওসমানীনগর ৩৯ হাজার ৭৫০ জন, গোলাপগঞ্জ ৪১ হাজার জন, ফেঞ্চুগঞ্জ ১২ হাজার ৬৭ জন, কানাইঘাট ৩৮ হাজার ৪৭৫ জন, গোয়াইঘাট ৪৮ হাজার ৩৭৩ জন, বিয়ানীবাজার ৩৫ হাজার ৪৭৫ জন, জৈন্তাপুর ২৪ হাজার ৭২৩ জন, কোম্পানিগঞ্জ ২৮ হাজার ৫৩১ জন, জকিগঞ্জ ৩১ হাজার ৫৩৯ জন।
এর আগে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় সিলেট সিভিল সার্ভিন অফিসের ইপিআই ভবনে জেলার অন্যান্য বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে এক অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ইতিমধ্যে সিলেট জেলার সকল উপজেলার তদারককারি মাঠকর্মী ও স্বেচ্ছাসবীগণকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
এদিকে, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শরিফুল হাসান জানিয়েছেন, ক্যাম্পেইন সফলে ইতিমধ্যে বিভাগের ৮ হাজার ১৪৫টি কেন্দ্রের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বিরূপ আবহাওয়ার কারণে কোনো শিশুকে টিকা খাওয়াতে না পারলে পরদিন বিশেষ ব্যবস্থায় টিকা খাওয়াতে হবে। তাছাড়া বাস স্ট্যান্ড, রেল স্টেশন, লঞ্চঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত টিকা কেন্দ্র থাকবে।
তিনি বৃহস্পতিবার তাঁর দপ্তরে আয়োজিত এক অবহিতকরণ ও পরিকল্পনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক মো. কুতুব উদ্দিন, এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভূইয়া, কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল অধ্যাপক মুজিবুল হক, সিভিল সার্জন ডা. এস এম শাহরিয়ার, সহকারী পরিচালক ডা. নূরে আলম, ইউনিসেফের প্রতিনিধি জান্নাতুল ওয়াকেয়া প্রমুখ।