নিরাপত্তার চাদরে নগরী : ভোটগ্রহণের দায়িত্বে ৪২৯১ কর্মকর্তা
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ জুন ২০২৩, ১২:০৫:৪০ অপরাহ্ন
এ টি এম তুরাব :
আজ সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন। বুধবার সকাল থেকে নগরজুড়ে একযোগে শুরু হবে ভোটগ্রহণ। নির্বাচনী পরিবেশ নির্বিঘ্ন রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাড়তি তৎপরতা দেখা গেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে নগরজুড়ে বাড়তি পুলিশ ও র্যাব সদস্যদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে ভোটকেন্দ্রের আশপাশের এলাকায় বাড়তি সতর্কতা রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট স্থাপন করে তল্লাশি করতে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। র্যাব-পুলিশের পাশাপাশি সার্বিক নিরাপত্তায় টহল দিতে দেখা গেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের। পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি মহানগরীতে বিপুল সংখ্যক সাদা পোশাকের সদস্যরা দায়িত্বপালন করছেন।
পুলিশ জানায়, সিটি করপোরেশন নির্বাচন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে র্যাব, আনসার বাহিনী, বিজিবি ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা সমন্বিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
নির্বাচন ঘিরে যেকোনো অপতৎপরতা এড়াতে বিভিন্ন মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামিরাসহ নজরদারিতে রয়েছে বিভিন্ন সংগঠনের কর্মকাণ্ড। নগরীর ভোটার ছাড়া বহিরাগতদের তৎপরতার বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রয়েছে। এছাড়া, পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সাইবার ক্রাইম টিমের মনিটরিংয়ের আওতায় রয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।
নিরাপত্তা রক্ষায় ২৬০০ পুলিশ : সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরবিচ্ছিন্ন করতে মহানগরীতে কাজ করছে প্রায় ২ হাজার ৬০০ পুলিশ সদস্য। মাঠে রয়েছেন ১৪ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ৪২টি ওয়ার্ডে ৪২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। মঙ্গলবার সকালে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্সে এক সংবাদ সম্মেলনে এসএমপি কমিশনার মো. ইলিয়াছ শরিফ এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১ জন পুলিশ পরিদর্শক, ১ জন উপ-পুলিশ পরিদর্শক ও ৫ জন পুলিশ সদস্য এবং কম ঝুঁঁকিপূর্ণ ওয়ার্ডে ১ জন পুলিশ পরিদর্শক, ১ জন উপ পুলিশ পরিদর্শক ও ৪ জন পুলিশ সদস্য এবং ৭ জন নারী এবং ৭ জন পুরুষসহ মোট ১৪ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।
তিনি জানান, নির্বাচন উপলক্ষে প্রতি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে পুলিশের ৪২টি মোবাইল টিম, প্রতি তিনটি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে ১৪টি ট্রাইকিং টিম এবং প্রতি থানায় একটি করে ৬টি করে ৬টি রিজার্ভ স্ট্রাইকিং টিম থাকবে। পাশাপাশি থাকবে ২টি ওয়ার্ডে ১টি করে র্যাবের মোট ২২টি ও ৫টি ওয়ার্ডে এক প্লাটুন করে মোট ১০ প্লাটুন বিজিবির টহল। এ সময় পুলিশ কমিশনার নির্বিঘেœ ভোটদানের জন্য ভোটারদের প্রতি আহবান জানান।
র্যাব-৯ এর অধিনায়ক উইং কামান্ডার বলেন, নির্বাচনে বিজিবি, পুলিশ ও আনসারের সঙ্গে র্যাবের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। তারা মূলত স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ভোটকেন্দ্রের বাইরে দায়িত্ব পালন করবেন। ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে ভোটের দিনও তল্লাশি চলবে। যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এবং নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে।
ভোটগ্রহণের দায়িত্বে ৪২৯১ কর্মকর্তা : সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনী মাঠে ভোটগ্রহণের দায়িত্বে রয়েছেন ৪ হাজার ২৯১ কর্মকর্তা। এ তথ্য নিশ্চিত করেন সিসিকের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসার ফয়সাল কাদের।
তিনি বলেন, সিসিকের ৪২টি ওয়ার্ডে ১৯০টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণে প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং ও পুলিং অফিসারের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন এ কর্মকর্তারা।
ফয়সাল কাদের আরো বলেন, ১৯০টি কেন্দ্রে একজন করে ১৯০ প্রিজাইডিং অফিসার, ১ হাজার ৩৬৭ সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ২ হাজার ৭৩৪ পুলিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন। এর বাইরেও ৪২টি ওয়ার্ডে একজন করে ৪২ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ৭ বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি থাকবে নির্বাচন কমিশনের মনিটরিং টিম মাঠে থাকবে। আর ১ হাজার ৭৪২টি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে ভোট কেন্দ্রের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে নির্বাচন কমিশন।