সিসিক নির্বাচনের খন্ডচিত্র
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ জুন ২০২৩, ১১:১২:১৫ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : বড় ধরনের কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শেষ হয়েছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। দিনভর নগরীর বিভিন্ন কেন্দ্রে সরেজমিনে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। কাউন্সিলার ও মহিলা কাউন্সিলার পদে প্রার্থীদের নানা তৎপরতা চোখে পড়লেও মেয়র পদের ভোট নিয়ে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। নগরী অধিকাংশ কেন্দ্রে নৌকা ছাড়া মেয়র পদের অন্যান্য প্রার্থীদের এজেন্ট কিংবা কর্মী সমর্থকদের দেখা মিলেনি।
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সকাল থেকে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহন। বেলা সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত নগরের অন্তত ১০ টি কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে বিপরীতমুখী চিত্র। কিছু সেন্টারে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন ও কিছু সেন্টার ফাঁকা।
বুধবার সকাল ১১টায় নগরীর ৭নং ওয়ার্ডের পীরমহল্লার গৌছুল উলুম জামেয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ভোটারবিহীন অবসর সময় পার করছেন নির্বাচনী কর্মকর্তা ও পোলিং এজেন্টগণ। সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ঐ কেন্দ্রে ৩৩১৯ ভোটের মধ্যে কাস্ট হয় মাত্র ১৮০টি। গৌছুল উলুম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়েও একই দৃশ্য দেখা যায়। এখানে ৩৫০৭ ভোটের মধ্যে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত কাস্ট হয় ২৯২টি।
৭নং ওয়ার্ডের আব্দুল গফুর উচ্চ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থাপিত পৃথক ২টি কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ৩৪নং কেন্দ্রে ২৪১৮ ভোটের মধ্যে ১২টা পর্যন্ত কাস্ট হয় ৮৩টি। ৩৩নং কেন্দ্রে ২৫৭৫ ভোটের মধ্যে কাস্ট হয় ১৫৫ ভোট।
নগরীর পিটিআই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে স্থাপিত পৃথক ৩টি কেন্দ্রে বেলা ১২টা ১৫মিনিটে গিয়ে দেখা যায় ৬৩৭৩ ভোটের মধ্যে কাস্ট হয় ৮৭৮ ভোট।
বেলা ১টার দিকে নগরীর ৮নং ওয়ার্ডের পাঠানটুলাস্থ শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ঐ মাদ্রাসায় পৃথক ৩টি কেন্দ্রের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ চলছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং অফিসারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে বেলা ১টা পর্যন্ত ৩৭নং কেন্দ্রের ৩১৮৯ ভোটের মধ্যে ৭৭০ ভোট এবং ৩৯নং কেন্দ্রের ২২৮০ ভোটের মধ্যে ৫১৯ ভোট কাস্ট হয়েছে।
একই দৃশ্য দেখা গেছে, ৮নং ওয়ার্ডের পাঠানটুলা দ্বিপাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয় ও ৯নং ওয়ার্ডের বর্ণমালা স্কুল কেন্দ্রে।
১১নং ওয়ার্ডের মধুশহীদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাতালিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে বাইরে লোকের ভিড় বেশী থাকলেও কেন্দ্রের ভিতরে ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলক কম।
২টার দিকে ১০নং ওয়ার্ডের ডহর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে ২ কাউন্সিলার প্রার্থীর মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। কাউন্সিলার প্রার্থী আব্দুল হাকিম উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান নৌকা প্রতীকের ভোট চাইতে গিয়ে সরকার দলীয় কয়েকজন নেতা কাউন্সিলার প্রার্থী তারেককে ভোট দিতে ভোটারদের উপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেন। সাংবাদিকরা এগিয়ে গেলে সরকার দলীয় নেতৃবৃন্দ বেরিয়ে যান। একটু পর কেন্দ্র পরিদর্শনে আসেন সিলেট জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলম। তিনি উপস্থিত প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীকে নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
বেলা পৌনে ৩টার দিকে নগরীর ১২নং ওয়ার্ডের শেখঘাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, বাইরে ভোটারের দীর্ঘ সারি থাকলেও ভোট দেয়া হচ্ছে স্লো গতিতে। এব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং অফিসার জানান, সকালের দিকে ভোটার উপস্থিতি কম থাকলেও বেলা ২টার পর ভোটার উপস্থিতি বাড়তে থাকে। ফলে লাইন দীর্ঘ হচ্ছে। এছাড়া অনেকে ইভিএম সম্পর্কে পূর্বের ধারণা না থাকায় একাধিকবার ট্রাই করতে গিয়ে সফটওয়ার জঠিলতা সৃষ্টি করছেন। ঐ কেন্দ্রে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল সহ সরকার দলের শীর্ষস্থানীয় একাধিক নেতৃবৃন্দকে দেখা গেছে।
বেলা সাড়ে ৩টার দিকে নগরীর ৩৮নং ওয়ার্ডের তেমূখীস্ত রশিদিয়া দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, বাইরে শত শত মানুষের সারি। ঐ মাদ্রাসায় দুটি পৃথক কেন্দ্রের মধ্যে ১৭৫নং কেন্দ্রের ১৯৫৭ ভোটের মধ্যে বেলা ৩টা পর্যন্ত ১২৫০ ভোট এবং ১৭৬নং কেন্দ্রে ২১০৬ ভোটের মধ্যে ১০৫০ ভোট কাস্ট হয়।