ভোট শেষে সিলেটে ফিরলো লোডশেডিং!
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ জুন ২০২৩, ৬:৪৩:১৫ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে সিলেট ছিলো অনেকটাই লোডশেডিংমুক্ত নগরী। প্রচন্ড গরমেও দিন-রাত বিদ্যুৎ পেয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলেছিলেন নগরবাসী। কিন্তু এই তৃপ্তি হাওয়ায় মিলিয়ে গেলো সিলেট সিটি নির্বাচনের পরদিনই। বৃহস্পতিবার থেকে ফের সিলেটে ফিরেছে লোডশেডিং।অনেকে বলছেন, এতদিন লোডশেডিংমুক্ত ‘নির্বাচনী বিদ্যুৎ’ উপভোগ করেছেন নগরবাসী। এখন নির্বাচন শেষ, তাই বিদ্যুৎও কিছু ‘ছুটি’ পেয়েছে। বৃহস্পতিবার নগরের বিভিন্ন এলাকায় ৪-৭ বার করে বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করেছে। একবার বিদ্যুৎ চলে গেলে আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে গ্রাহকদের।
সিলেটে বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের তথ্য মতে, সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় বৃহস্পতিবার বিদ্যুতের চাহিদা ছিলো ১৭১ দশমিক ৫ মেগাওয়াট। কিন্তু পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি বরাদ্দ দিয়েছে ১১৩ দশমিক ৫ মেগাওয়াট। তাই এমন পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সিলেটে পিডিবি ৫৮ মেগাওয়াট লোডশেডিং করছে যা চাহিদার ৩৩ দশমিক ৮২ শতাংশ।
অন্যদিকে, সিলেট বিভাগে ৪৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও গতকাল সরবরাহ করা হয়েছে ৩শ মেগাওয়াট। এতে লোডশেডিং হচ্ছে। সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচারের সময়ই আলোচনায় উঠে আসে লোডশেডিং। নৌকার প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী একাধিকবার শঙ্কা জানিয়েছিলেন, লোডশেডিংয়ের কারণে ভোটে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
এ ব্যাপারে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী গত ১৮ এপ্রিল নগরীর বাগবাড়িস্থ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অফিসে গিয়ে কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন। এ সময় কর্মকর্তারা তাদের ঘাটতির কথা আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে জানান। তখন কর্মকর্তারা জানান, সিলেট মহানগরীতে বর্তমানে প্রতিদিন ২২০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। এর বিপরীতে প্রতিদিন সরবরাহ করা হচ্ছে বর্তমানে ১৩০ থেকে ১৪০ মেগাওয়াট। প্রতিদিন ৮০ থেকে ৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি রয়েছে।পরে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সাথে সাথে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলে সিলেটের বিদ্যুতের ঘাটতি পূরণের অনুরোধ জানান।
জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী জানান, প্রচণ্ড দাপদাহে বিদ্যুতের ব্যবহার বৃদ্ধি ও কয়েকটি কেন্দ্রে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় সারাদেশে চাহিদামত বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হচ্ছে না। ত্রুটি সারিয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে পুরোদমে উৎপাদনে নেওয়ার কাজ চলছে। তবে সিলেটের বিদ্যুতের ঘাটতি পূরণ করতে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন দেন মন্ত্রী।
মন্ত্রীর নির্দেশনা মতো সেই থেকে লোডশেডিং প্রায় কমে গিয়েছিলো। আর গত ৫ জুন থেকে অনেকটাই লোডশেডংমুক্ত ছিলো নগর। ভোটের আগের কয়েকদিন দিন পর্যন্ত নগরের লোডশেডিং বলতে গেলে শূন্যের কোঠায় ছিল। কিন্তু বুধবার ভোট শেষে বৃহস্পতিবার থেকে সিলেটে ফের দেখা দিয়েছে লোডশেডিং।
বিউবো সূত্র বলছে, নির্বাচনের দিন নগর এলাকাগুলোকে লোডশেডিংমুক্ত রাখার নির্দেশনা থাকায় লোডশেডিং হয়নি। এখন নির্বাচন শেষ হওয়ায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে।