ফুটপাত ছড়িয়ে অর্ধেক রাস্তা হকারদের দখলে
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ জুন ২০২৩, ৬:৪০:৩৫ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: লোহার শক্ত পাইপে হকারমুক্ত এলাকায় লেখা সাইনবোর্ড দন্ডায়মান। উপরে পলিথিন বা ত্রিপলের বিশাল সামিয়ানা আর নিচে ফুটপাত জুড়ে সারি সারি দোকান। ঈদের আর মাত্র চারদিন আগে নগরীর কোর্ট পয়েন্ট সংলগ্ন সিটি কর্পোরেশন ঘোষিত হকারমুক্ত এলাকা এখন জমজমাট ফুটপাত বাজারে। জমজমাট এই ফুটপাত হকারদের দখলে অনেকদিন থেকেই। এতদিত ফুটপাত ছাড়িয়ে রাস্তার কিছু অংশ দখলে থাকলেও গতকাল শনিবার থেকে তা ভিআইপি রোডের অর্ধেক জুড়ে নিয়েছে।
শনিবার বিকেলে দেখা যায় নগরীর কোর্ট পয়েন্ট থেকে জিন্দাবাজার পর্যন্ত রাস্তার পশ্চিমদিকের অর্ধেকের বেশি চলে গেছে হকারদের দখলে। রাস্তার অর্ধেক সীমানা নির্ধারিত মোটা সাদা দাগ এখন ফুটপাত দোকানীদের সীমানা। ফুটপাত এবং রাস্তার অর্ধেক দখল হয়ে যাওয়ায় পথচারীদের রাস্তার মাঝখান দিয়ে হেঁটে যাওয়া আসা করতে হচ্ছে। দোকান, পথচারী আর যানবাহন জটে জিন্দাবাজার পয়েন্ট থেকে অগ্রগামী বালিকা বিদ্যালয় পর্যন্ত তৈরি হয়েছে ঘিঞ্জি পরিবেশ। জটলা আর হর্ণের শব্দে পরিবেশ ও শব্দ দূষণ ছিল দৃশ্যমান। ফলে অনেকেই নিতান্ত বাধ্য না হলে এই রাস্তা ব্যবহার করছেন না।
জিন্দাবাজারের মুক্তিযোদ্ধা গলির ব্যবসায়ী মুমিন ইসলাম বলেন, রাস্তার সামনে জটলার কারণে অনেক কাস্টমার এখন আমাদের এদিকে আসেন না। গলির মুখ থেকে নিয়ে জিন্দাবাজার টু কোর্ট পয়েন্ট পুরো এলাকা ফুটপাত ও রাস্তা হকারদের দখলে। এতে প্রায় সারাদিন এই রাস্তায় জ্যাম লেগে থাকে। চালক আর যাত্রীর চেঁচামেচি এবং হর্ণের শব্দে আমাদের দোকানে বসতে কষ্ট হয়।
মুমিন বলেন আমরা বাপের আমল থেকে এখানে ব্যবসা করছি। আগে আমার আব্বা করতেন এখন তার সাথে আমরা ভাইয়েরাও আছি। এক সময় খুব জমজমাট ছিল এই এলাকায় ব্যবসার অবস্থা। কিন্তুজটলা ঠেলে কাস্টমার এখন এদিকে আসতে চান না। পুরানো কিছু পরিচিত কাস্টমার শুধু আসেন। প্রতিযোগিতার বাজারে এখন চতুর্দিকে বিকল্প মার্কেট তৈরি হয়েছে। তাই মানুষ কেন এত যন্ত্রণা সয়ে আমাদের এদিকে আসবে। এ ব্যাপারে নগর কর্তৃপক্ষ দ্রুত কোনো বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে জিন্দাবাজার এলাকা ব্যবসায়ীক গতি হারাবে বলে মনে করেন এই ব্যবসায়ী।
কোরবানি ঈদের পশুর বাজার মূখ্য হলেও পোশাক বিক্রিও কম হয়না। সরেজমিন দেখা যায় ঈদ সামনে রেখে নতুন পোশাক নামিয়েছেন ফুটপাত ব্যবসায়ীরা। এসব পণ্যের মধ্যে টি শার্ট এবং প্যান্টের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। আগে বিশাল ফুটপাতের অর্ধেক আর রাস্তার কিছু অংশ নিয়ে বসতেন তারা। এতে দোকানের পেছনে দেওয়াল ঘেষে লোকজন একজন করে যেতে পারতেন। শনিবার দেখা যায় সেই অংশও ভরাট হয়ে গেছে। ফলে এখন রাস্তার মাঝখান ছাড়া অন্যদিকে যাতায়াতের কোনো বিকল্প নেই পথচারীদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হকার বলেন নির্বাচনের জন্য আমরা এতদিন অপেক্ষা করেছিলাম। নির্বাচন শেষ আবার ঈদ ঘনিয়ে আসছে তাই শনিবার থেকে আমরা ফুল স্পীডে দোকান সাজানো শুরু করেছি। তিনি বলেন এতদিন মেয়র আরিফর জন্য আমাদের রয়ে সয়ে ব্যবসা করতে হয়েছিল। কারণ আরিফ ফুটপাত নিয়ে খুব কঠোর ছিলেন। আগের মেয়র বদরুদ্দিন কামরানের সময় খুব আরামে ব্যবসা করতাম। এখন আরিফের পর নতুন করে আবার আমাদের মেয়র নির্বাচিত হয়েছন। যদিও কামরান আজ বেঁচে নেই কিন্তু নয়া মেয়র আনোয়ার তার দলেরই লোক। তাই আমরা আশাবাদী। তিনি বলেন ব্যবসা ছাড়া চলবো কীভাবে? তাই ম্যানেজ করে হোক আর অন্যকোনোভাবে আমাদের চলতে হবে। লোকজনও আমাদের থেকে পণ্য কিনে। না কিনলে এত মানুষ কী করে আর এত মাল কোথায় যায়?