হাওরপাড়ে কেটেছে বন্যার শঙ্কা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ জুন ২০২৩, ১২:১৫:২০ অপরাহ্ন
জালালাবাদ রিপোর্ট : ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিতে সুনামগঞ্জের হাওর ভরে উঠছিল। বাড়ছিল বন্যার শঙ্কা। তবে সেই শঙ্কা কেটে শনিবার সকাল থেকে ঝলমলে রোদের দেখা মিলেছে। আগের রাতে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় তলিয়ে যাওয়া সড়ক থেকে নামতে শুরু করেছে পানি। এতে হাওরবাসীদের মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
শুক্রবার সকাল ৯টার পর থেকে পানি কমতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। শনিবার পানি কমে সুরমা নদীর ছাতক পয়েন্টে বিপদসীমার ৯১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া সুনামগঞ্জের ষোলঘর পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
জানা গেছে, গত ১৫ জুন থেকে সুরমা নদীর পানি জেলার সব কটি হাওর উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করে। ফলে নি¤œাঞ্চলে গ্রামগুলোতে পানির চাপ বেড়ে যায়। তবে সেই চাপ কিছুটা কমলেও আতঙ্ক কমেনি হাওরবাসীর। সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়াও হাওর পরিপূর্ণ হয়ে রয়েছে। নতুন করে পাহাড়ি ঢল আর বৃষ্টিপাত হলে বন্যা হতে পারে বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন।
এক সপ্তাহ পরে রোদ ওঠায় সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার ডেকার হাওরে মাছ ধরতে এসেছেন বড়কাপন গ্রামের ওয়ারিছ উদ্দিন। তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহের বেশি সময় আমরার ইবায় (এদিকে) দিন ভালা আছিল না। ওই দেখো বৃষ্টি ওই আয় ঠাডা (বজ্রপাত) ইতা ভয়ে হাওরে বারাইতে পারছি না। রোদ উঠায় নিচিন্তায় (চিন্তামুক্ত) মাছ ধরতে পারছি।
ডেকার হাওরের আরেক কৃষক জসিম উদ্দিন। তিনিও রোদের দেখা পেয়ে খুশি। কদিনের বৃষ্টিতে বোরো ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। পচন ধরেছে গবাদিপশুর খাবার খরে। সকাল থেকে রোদ পেয়ে তিনি স্ত্রী আসমা বেগমকে নিয়ে ধান ও খর সড়কে শুকাচ্ছিলেন।
তিনি বলেন, রোদ ওঠায় রক্ষা পেলাম। না হলে আমার ধান বিনাশ হয়ে গেছিল। দুইদিন পরে ঈদ দুইটা গরু বাজারে নিয়া বিক্রি করতাম। কিন্তু পানির লাগি ঠিক মতো খাবার না খাবাইতে পেরে গরু শুকাই গেছে। বন্যা হইলে তো আমার খুবই বিপদ হইতো। গরু বিক্রি করতে না পারলে এবছর চলতে পারতাম না।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামসুদ্দোহা বলেন, পাহাড়ি ঢল আর বৃষ্টির কারণে স্বল্প মেয়াদি বন্যার শঙ্কা ছিল। তবে আগামী দুদিন বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। আর বৃষ্টি না হলে নদীর পানি কমবে। এতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হবে না।