জামালগঞ্জ-সুনামগঞ্জ সড়কের বেহাল দশা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ জুন ২০২৩, ৫:৫৯:৩৫ অপরাহ্ন
জামালগঞ্জ প্রতিনিধি: জামালগঞ্জ-সুনামগঞ্জ সড়ক পথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে জামালগঞ্জের লাখো মানুষ চরম দুর্ভোগ আর দুর্দশা পোহাচ্ছেন। স্বাধীনতার ৫১ বছর পেরিয়ে গেলেও জামালগঞ্জ-সুনামগঞ্জ সড়ক যোগাযোগে যাত্রীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন চলতে হচ্ছে। জামালগঞ্জ-সুনামগঞ্জ সড়কে জামালগঞ্জ ছাড়াও ধর্মপাশা, মধ্যনগর ও নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার কিয়দাংশ যাত্রীরাও সিলেট-সুনামগঞ্জে যাতায়াত করেন।
দিরাই রাস্তার মোড়ে কাঠইর নামক রাস্তা থেকে জামালগঞ্জ সদর পর্যন্ত প্রায় ১৯ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা, ভাঙ্গা ও খানাখন্দের কারণে যাত্রী চলাচলে সীমাহীন দুর্ভোগ ও দুর্দশা যেন পিছু ছাড়ছেনা। এই সড়কের জামালগঞ্জের প্রবেশদ্বার উজ্জ্বলপুর নামক স্থানে ভাঙ্গা সড়কে ও ইট সলিং এর কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এই স্থানটি এখন যাত্রীদের মরনফাঁদে পরিণত হচ্ছে। যে কোন মুহুর্তেই বড় ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন যে কেউ। বর্ষায় বৃষ্টির কারণে ও সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধিতে যে কোন মুহুর্তে উজ্জ্বলপুরের অংশ ভেঙ্গে যান চলাচল বন্ধ হওয়ার আশংকা করছে যাত্রী ও চালকরা।
জামালগঞ্জ থেকে কোন রোগীকে সুনামগঞ্জ কিংবা সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে হলে চরম দুর্দশায় পড়তে হয় রোগীর স্বজনদের। স্থানীয় গাড়ি চালক ও যাত্রীরা জানান, এই সড়ক তাদের জীবনের গতিশীলতা কমিয়ে দিয়েছে। চরম দুর্ভোগ আর জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলতে হচ্ছে তাদের। এ ছাড়া জামালগঞ্জ সদরের নতুন পাড়ার মুল সড়কের ইট সলিং, নয়াহালট ও উত্তর কামলাবাজ গ্রামের অভ্যন্তরীন সড়ক আজো সংষ্কার না হওয়ায় রোগী, বয়ষ্ক মানুষ, শিশু ও গর্ভবতী মা’দের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসতে দুর্দশা পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ২০২২ সালে বন্যার পর থেকে এক বছরেও সড়কে যান চলাচল উপযোগি করতে সরকারিভাবে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
ফেনারবাঁক ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা মুহিবুর রহমান বলেন, এই রাস্তায় একবার গেলে আরেকবার যাওয়ার মন চায়না। কয়েক দিন আগে আমার আত্মীয় উজ্জ্বলপুর ভাঙ্গায় দুর্ঘটনার শিকার হয়। নোয়াগাঁও-বাহাদপুর গ্রামের ইজিবাইক চালক দিলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বন্যার সময় জাল্লাবাজ গ্রামের ব্রিজের দুই পাশের পাকা সড়ক ভেঙে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। হেমন্ত মওসুমে কিছু কাজ করে যার কারণে যাত্রীদের ঝুঁকি নিয়ে চলতে হচ্ছে। কলকতখাঁ গ্রামের বাসিন্দা সাগর মিয়া বলেন, রাস্তা ভাঙার কারণে মানুষের কী যে কষ্ট হচ্ছে তা বলার মতো না। রাস্তা ভাঙার কারণে গাড়ি ভাড়া বেড়ে গেছে।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে জামালগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো: আব্দুল মালেক বলেন, ২০২২ সালে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এই সড়কের জামালগঞ্জ অংশের জরুরী মেরামতে কিছু কাজ করে যান চলাচলে উপযোগী করে দেয়া হয়েছে। আগামী অর্থ বছরে পল্লী অবকাঠামো পুন:স্থাপন এর লক্ষে টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রাক্ষলন প্রস্তুতির কাজ চলছে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা, মধ্যনগর ও তাহিরপুর উপজেলায় ২০২২ সালে বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক টিমকে নিয়ে কয়েক দফা পরিদর্শন করেছি। তারা ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা পরিদর্শন করে প্রকল্প বাস্তবায়নের সম্মতি ও অর্থ যোগানের আশ্বাস দিয়েছেন। জামালগঞ্জ-সুনামগঞ্জ এই সড়কটিসহ ধর্মপাশা, মধ্যনগর ও তাহিরপুর উপজেলার সকল সড়কেই আগামী মওসুমে বিশেষ প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ হবে। এই কাজ বাস্তবায়ন হলে সুনামগঞ্জ-সিলেটের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে মাইল ফলক হয়ে থাকবে।