সপ্তাহ পর সিলেটে আলো ঝলমলে দিন
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ জুলাই ২০২৩, ৯:৫২:৪৭ অপরাহ্ন
কমেছে বৃষ্টি, কমেছে নদ-নদীর পানি
স্টাফ রিপোর্টার: টানা এক সপ্তাহ বৃষ্টির পর মঙ্গলবার অনেকটা আলো ঝলমলে রৌদ্রময় দিন পার করেছে সিলেট। এতে সিলেটে সব নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে কমেছে বৃষ্টিপাতের পরিমাণও। ফলে নিম্নাঞ্চলের মানুষের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে।
শেষ ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ৮৬ দশমিক ১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৩০৭ মিলিমিটারের বেশি।
মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় সিলেটে দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়নি নগরে। তবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।
এক সপ্তাহের মধ্যে সিলেটে মঙ্গলবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বনিম্ন ২৪ দশমিক ৫।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে সোমবার সন্ধ্যায় পানির উচ্চতা ছিল ১১ দশমিক ৮৭ সেন্টিমিটার। মঙ্গলবার বেলা ৩টায় সেটি কমে ১১ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার উচ্চতা দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। নদীর এই পয়েন্টে বিপদসীমা ১২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার।
নদীর সিলেট পয়েন্টে বিপদসীমা ১০ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার। সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় সেখানে ১০ দশমিক ২১ সেন্টিমিটার উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। মঙ্গলবার বেলা ৩টায় সেটি কমে ৯ দশমিক শূন্য ৯৪ সেন্টিমিটারে দাঁড়ায়। কুশিয়ারা নদীর শেওলা পয়েন্টে পানির বিপদসীমা ১৩ দশমিক শূন্য ৫ সেন্টিমিটার। সেখানে সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় পানি ছিল ১০ দশমিক ৬৫ সেন্টিমিটার। মঙ্গলবার বেলা ৩টায় সেখানে ১০ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্ট বিপদসীমা ৯ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার। মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় সেখানে ৯ দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।
লুভা নদীর লুভাছড়া পয়েন্টে সোমবার সন্ধ্যায় ১২ দশমিক ২৭ সেন্টিমিটার উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। মঙ্গলবার বেলা ৩টায় সেটি কমে ১১ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটারে দাঁড়িয়েছে। সারি নদের সারিঘাট পয়েন্ট পানির বিপদসীমা ১২ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার। সেখানে বেলা ৩টায় ১০ দশমিক ৭৩ সেন্টিমিটার উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।
সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন জানিয়েছেন, সিলেটে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।
এদিকে, এক সপ্তাহ পর মঙ্গলবার সুনামগঞ্জের আকাশে রোদের দেখা মিলেছে। ফলে সুরমা নদীসহ জেলার অন্যান্য নদ-নদীর পানি কমেছে। তবে নদীর পানি বিপদসীমার উপরেই রয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আগের দিন একই সময়ে এখানে পানি ছিল বিপদসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপরে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে বৃষ্টি হয়েছে ৫০ মিলিমিটার। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছিল ১৭০ মিলিমিটার। সুনামগঞ্জের ছাতকে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ১৩০ সেন্টিমিটার ওপরে রয়েছে। নদ-নদীর পানি কমলেও জেলার কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চলে পানি থাকায় মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।
গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও উজানের ঢলে জেলার সদর, দোয়ারাবাজার, ছাতক, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, শান্তিগঞ্জ উপজেলায় পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। টানা ভারী বর্ষণে মানুষজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অনেকের মধ্যে গত বছরের মতো ভয়াবহ বন্যা হবে কি না, এ নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেয়।
সুনামগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার জানিয়েছেন, বৃষ্টি না হলে পানি আরও কমবে। তবে হালকা ও মাঝারি বৃষ্টির পুর্বাভাস আছে। হাওর-নদী এখন পানিতে পরিপূর্ণ। তাই ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢল নামলে পানি আবারও বাড়তে পারে। তবে বড় বন্যার কোনো আশঙ্কা নেই।