শান্তিগঞ্জে মসজিদের কাঁঠাল নিলাম নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ৩
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ জুলাই ২০২৩, ৪:২৪:১৬ অপরাহ্ন
শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় মসজিদে দানকৃত একটি কাঁঠাল নিলামে তোলা ও দাম হাকাঁনো নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে ৩ জন নিহত হয়েছেন। এসময় উভয়পক্ষের আরও ৪০ জন আহত হয়েছেন। সোমবার (১০ জুলাই) বেলা ১১টায় উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের হাসনাবাদ গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নিহতরা হলেন, হাসনাবাদ গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে নরুল হক (৪৫), আব্দুস সুফির ছেলে বাবুল মিয়া (৫০) ও আব্দুল বাসিরের ছেলে শাহজাহান মিয়া (৩৬)। তাৎক্ষনিক আহতদের নাম ও পরিচয় জানা যায়নি।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, হাসনাবাদ গ্রামে দ্বীন ইসলাম ও মালদার মেম্বারের পক্ষের মাঝে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। চলছে মামলা মোকদ্দমা। সম্প্রতি উপেজলা চেয়ারম্যান, ইউএনওসহ উপজেলার, ইউনিয়নের স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে শালিশ বৈঠকে দীর্ঘদিনের পুরনো বিরোধ মীমাংসা হয়।
আজ সোমবার সকালে হাসনাবাদ গ্রামের মসজিদে এক ব্যক্তি একটি কাঁঠাল দান করেন। গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে এই কাঁঠালটি নিলামে তোলা হয় এবং দাম হাকাঁনো হয়। এতে গ্রামের দ্বীন ইসলামের পক্ষের একজন দামের কথা শুনা যাচ্ছে না বলে আওয়াজ তুললে প্রতিপক্ষ মালদার মেম্বারের পক্ষের সুনু মিয়া ও জুনাব আলী গংরা বলে উঠেন মসজিদের ভেতরে অবস্থানকারী সবাই শুনলেও তোমরা কেন শুনতে পাওনি। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাাকটি হয়।
এরই জেরে সকালে দ্বীন ইসলামের লোকজনের সঙ্গে প্রতিপক্ষ সুনু মিয়া ও জনাব আলীর লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। এতে দ্বীন ইসলামের পক্ষের বাবুল মিয়া ও নুরুল ইসলাম ঘটনাস্থলেই নিহত হন এবং মালদার মেম্বারের গোষ্টীর সুনু মিয়া জনাব আলী গংদের পক্ষে মো. শাহজাহান মিয়াকে গুরুতর আহত অবস্থায় সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে রাস্তায় তিনি মারা যান। এতে উভয়পক্ষের ৪০ জন আহত হন। তবে তাৎক্ষনিক আহতের নাম ও পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে জয়কলস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল বাছিত সুজন জানান, গ্রামের দুই পক্ষের মাঝে কয়েকদিন থেকে উত্তেজনা চলে আসছিলো। রোববার রাতে এবং আজকে ভোরে হাসনাবাজ গ্রামে গিয়ে উভয়পক্ষের লোকজনের সাথে আলাদা আলাদাভাবে বৈঠক করে কথা বলেছি। উভয়পক্ষের লোকজন আমাকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে কোন পক্ষই মারামরিতে যাবেন না। এমন আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের শান্ত করে উপজেলা পরিষদের মিটিংয়ে আমি চলে বাসার পর শুনতে পাই উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। একটি কাঁঠাল নিয়ে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক।
এ ব্যাপারে শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদ চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ সন্দেহজনক ৩ জনকে আটক করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।