ছাতকে একই রাতে মোটরসাইকেলসহ ৪ চুরি
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ জুলাই ২০২৩, ৬:০১:০২ অপরাহ্ন
ছাতক সংবাদদাতা: সুনামগঞ্জের ছাতকে ব্যাপকহারে চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে। মোটরসাইকেল চোর সিন্ডিকেটদের দৌরাত্ম্য মারাত্মকভাবে বেড়েই চলেছে। কমিউনিটি সেন্টার, ব্যাংক, বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামন থেকে চোরেরা একের পর এক মোটর সাইকেল চুরি এবং প্রত্যন্ত এলাকায় প্রতি রাতেই ঘটছে চুরির ঘটনা। এর মধ্যে গরু চুরি ও সিঁদেল চুরির ঘটনা প্রতিনিয়ত। প্রশাসন তৎপর না থাকায় এখানে দীর্ঘদিন ধরে বেশ দাপটের সাথে সংঘবদ্ধ চোরেরা তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।
ছাতক পৌর শহরে একই রাতে ৩ টি চুরির ঘটনায় জনসাধারণের মধ্যে আতংক দেখা দিয়েছে। রোববার রাতে শহরের ৩ টি দোকান ঘর, একটি মোটর সাইকেলসহ ৪টি চুরি হয়েছে। এতে কয়েক লক্ষ টাকার মালামালসহ নগদ টাকা নিয়ে পালায় চোর চক্ররা। গত রোববার রাতে শহরের বাগবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন গ্যালারি ষ্টোরে চুরির ঘটনা ঘটে। এদিকে রেলওয়ে মসজিদ মার্কেটের ২টি দোকানেও একই রাতে চুরি সংঘটিত হয়।
রোববার রাতে উপজেলার ছৈলা-আফজলাবাদ ইউনিয়নের দিঘলী রামপুর গ্রামের আতিকুর রহমানের ছেলে ছাতক অনলাইন প্রেসক্লাবের সদস্য আশফাকুর রহমান সায়েমের ব্যবহৃত লাল-কালো রঙের হিরো ফ্যাশন প্রো মোটর সাইকেল নিজ বাসা থেকে চুরি হয়। একাধিক ভুক্তভোগিরা জানান, মোটরসাইকেল চোর সিন্ডিকেট ২০১৭ সাল থেকে ছাতক উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, কমিউনিটি সেন্টার, ব্যাংকের সামন থেকে ব্যবসায়ী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজনের মোটর সাইকেল চুরি করে আসছে। দুই একটি ছাড়া এখন পর্যন্ত চোরাই যাওয়া কোন মোটর সাইকেল উদ্ধার হয়নি। সাংবাদিক এ আর সায়েম পেশাগত কাজ শেষে রাত ১টার দিকে মোটর সাইকেলটি ঘরের বারান্দায় রেখে প্রতিদিনের মতো ঘুমিয়ে পড়েন। সোমবার সকালে ঘুম থেকে উঠে যথাস্থানে তার মোটর সাইকেলটি না পেয়ে আশপাশ এলাকায় খোঁজতে থাকেন। অবশেষে সন্ধান না পেয়ে ওইদিনই বিকেলে তিনি ছাতক থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এদিকে, গত চার বছর আগে ছাতক প্রেসক্লাবের সদস্য উপজেলার উত্তর খুরমা ইউনিয়নের মৈশাপুর গ্রামের বাসিন্দা সাংবাদিক মোশাহিদ আলীর ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি গোবিন্দগঞ্জের ডাচ বাংলা ব্যাংকের সামন থেকে চুরি হয়। চকলেট কালারের ১০০ সিসি ডিসকভার মোটরসাইকেলটি চোরেরা নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে তিনি ছাতক থানায় একটি জিডি করলেও আজ পর্যন্ত কোন সন্ধান দিতে পারেনি থানা পুলিশ। এক সপ্তাহ আগে শহরের পশ্চিম বাজারের গৌরাঙ্গ পাল ও গোবিন্দগঞ্জ ট্রাফিক পয়েন্ট সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে কলেজ গেইটে করিম মিয়ার দোকান ঘরের টিনের চালা খুলে চোরেরা প্রবেশ করে নগদ টাকা, মোবাইল কার্ড, বিভিন্ন ব্রান্ডের সিগারেট, তেল-সাবানসহ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি ছাতকে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। এখানে কয়েকটি খুনের ঘটনাসহ চুরি, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, চোরাচালানের মাধ্যমে অবৈধ পণ্য আমদানি এবং বিভিন্ন ধরনের অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ম্যানেজ করেই এখানে এসব অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এলাকার একাধিক বাসিন্দা। তারা জানান, দিনে-রাতে ছাতক শহরকে চোরাচালানের একটি প্রধান রুট হিসেবে ব্যবহার করে পুলিশের নাকের ডগা দিয়ে ভারতীয় গরু মহিষ পাচার করছে চোরাচালানীরা। বিনা বাধায় তারা দীর্ঘদিন ধরে এ কার্যক্রম চালিয়েই যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে ছাতক থানার ওসি খাঁন মোহাম্মদ মাইনুল জাকির এসব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মোটর সাইকেল চুরিসহ ঘটনায় একটি চার্জ কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির মাধ্যমে চোর চক্রকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে থানা পুলিশ।