শান্তিগঞ্জে ৪ জন নিহতের ঘটনায় পুরুষশুন্য গ্রাম
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ জুলাই ২০২৩, ৮:০৫:৫৮ অপরাহ্ন
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার হাসনাবাদ গ্রাম পুরুষশুন্য হয়ে পড়েছে। গ্রেপ্তারের ভয়ে বিভিন্ন গ্রামে আশ্রয় নিয়েছেন তারা। অনেকেই নিরপরাধ হয়েও গ্রাম ছেড়েছেন। কাঁঠাল কান্ডে ৪ জন খুন হওয়ার পর এমন অবস্থা বিরাজ করছে গ্রামে।
এদিকে, গ্রেফতারের ভয়ে লোকজন পলাতক থাকায় থানায় কেউ মামলা করতে আসেনি। পুলিশও অভিযোগকারী কাউকে পাচ্ছে না।
এলাকার জনৈক ব্যক্তি জানান, এ গ্রামে প্রায়ই ছোটখাট ঘটনা নিয়ে সংঘর্ষ বাধে। এর আগে লিচু নিয়ে দেন দরবার হয়। থানায় একাধিক মামলাও আছে। শালিসে একাধিকবার চেষ্টা করলেও নির্বৃত্ত হয়নি গ্রামের নেতারা। গোষ্ঠিগত আধিপত্য ও বিচার ব্যবস্থা না থাকায় ৪টি খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করেন সচেতন মহল। প্রবাস থেকে এসে উস্কানী দিয়ে ঘটনাকারী এবাদুল পালাতে চেষ্টা করেছিল। শেষ পর্যন্ত বিমানবন্দর থেকেই আটক করা হয় তাকে।
হাসনাবাদ ও আশপাশের গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘটনার পর থেকে দুই পক্ষ এবং তাদের সমর্থক পরিবারগুলোর পুরুষেরা গ্রেপ্তারের ভয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন। এখন বাড়িতে শুধু নারী ও শিশুরা আছে। সংঘর্ষে নিহত ব্যক্তিদের লাশ মঙ্গলবার দাফন করেছেন আশপাশের গ্রামের লোকজন। হাসনাবাদ গ্রামের বাসিন্দা মকসুদ আলীর স্ত্রী রাজিয়া বেগম বলেন, তাঁর স্বামী ও দুই ছেলে ঘটনার পর থেকে বাড়িছাড়া। তাঁরা কোথায় আছেন রাজিয়া জানেন না। পাশের জামলাবাজ গ্রামের বাসিন্দা পারভেজ আহমদ বলেন, পুরো গ্রামই এখন নীরব। মনে হয় কোনো মানুষ নাই। বাড়িঘর খালি। তবে গ্রামে পুলিশ মোতায়েন আছে। গত সোমবার সকালে শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের হাসনাবাদ গ্রামে মালদর আলী ও দীন ইসলাম পক্ষের লোকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে চারজন নিহত হন। আহত হন ২০ জন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন হাসনাবাদ গ্রামের নজরুল ইসলাম (৪০), বাবুল মিয়া (৫০), শাহজাহান মিয়া (৫০) ও মোখলেছুর রহমান (৬২)। এর মধ্যে দ্বীন ইসলাম পক্ষের লোক নজরুল ও বাবুল। আর মালদর মিয়া পক্ষের লোক শাহজাহান ও মোখলেছ।
এ প্রসঙ্গে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাঈদ বুধবার সকালে বলেন, এখনো মামলা হয়নি। বলা যায়, পুলিশ অভিযোগ নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে, কিন্তু দুই পক্ষের লোকজনই পলাতক। আমরা চেষ্টা করছি। আসলে অভিযোগকারী পাওয়া যাচ্ছে না। তবে এ বিষয়ে পুলিশ আজকেই একটা সিদ্ধান্ত নেবে বলে তিনি জানান।