৫ বছর পর শাবির সিন্ডিকেট নির্বাচন ৯ আগস্ট
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ জুলাই ২০২৩, ৯:২৭:৩৪ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : দীর্ঘ ৫ বছর পর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নীতি-নির্ধারণী ফোরাম ‘সিন্ডিকেট’ নির্বাচন আগামী ৯ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে। একই সঙ্গে অনুষ্ঠিত হবে একাডেমিক কাউন্সিলের নির্বাচন। এতে শিক্ষকদের মনোনয়ন দাখিলের শেষ সময় ২৫ জুলাই।
বুধবার বিকালে নির্বাচনের রিটার্র্নিং কর্মকর্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. ফজলুর রহমান নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন-১৯৮৭ এর ২৪(১) (ঘ) ধারানুসারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের দুইটি সদস্য পদে এবং ধারা ২৬ (১) (ঝ) অনুসারে একাডেমিক কাউন্সিলের চারটি সদস্য পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
সিন্ডিকেটের দুইটি পদের মধ্যে ক্যাটাগরি-১ এ অধ্যাপক বা সহযোগী অধ্যাপক এবং ক্যাটাগরি-২ এ যেকোনো শিক্ষক নির্বাচন করতে পারবেন; এ দুই ক্যাটাগরি থেকে দুজন শিক্ষক নির্বাচিত হবেন। অন্যদিকে, একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য পদে বিভাগীয় প্রধান নন, এমন চারজন শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচিত হবেন। এর মধ্যে সহযোগী অধ্যাপক ক্যাটাগরিতে দুইটি পদে এবং সহকারী অধ্যাপক ক্যাটাগরিতে দুইটি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
শাবিতে সর্বশেষ সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৭ সালের ২১ ডিসেম্বর। এর প্রায় চারবছর পর ২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি শাবির সিন্ডিকেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এর আগেই ১৬ জানুয়ারি উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনের কারণে সেই নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়। এরও প্রায় দেড় বছর কেটে গেলেও সিন্ডিকেট নির্বাচন আয়োজন করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে বলা আছে, নির্বাচিত সদস্যদের মেয়াদ দুই বছর। কিন্তু গত নির্বাচনের পর পুনরায় নির্বাচন আয়োজনের সময় থেকে আরও তিন বছর পেরিয়ে গেলেও সেই নির্বাচন আয়োজন করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। বিষয়টিকে ‘নিয়মের ব্যত্যয়’ বলে মনে করছেন শিক্ষকরা। অবশেষ আগামী মাসে নির্বাচনের আয়োজন করতে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
নির্বাচনের তফসিলে বলা হয়, নির্বাচনে প্রাথমিক ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে ১৩ জুলাই, প্রাথমিক ভোটার তালিকার ওপর আপত্তি দাখিল ১৭ জুলাই, চ‚ড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ ২০ জুলাই, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ২৩ জুলাই সকাল ৯টা থেকে ২৫ জুলাই সকাল ১১টা পর্যন্ত, মনোনয়নপত্র দাখিল শেষ হবে ২৫ জুলাই।
মনোনয়নপত্র বাছাই ও প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ২৫ জুলাই বিকেল ৫টা, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ৩০ জুলাই দুপুর ১২টা, চ‚ড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ একই দিন দুপুর ১২টার পর। এরপর ৯ আগস্ট সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবন-২ এর চারতলায় অবস্থিত সভাকক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
শাবির সিন্ডিকেটের মোট ১৩ সদস্যের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সভাপতি ও রেজিস্ট্রার সদস্য সচিব থাকেন; ৯টি পদে থাকেন সরকার কর্তৃক মনোনীত ব্যক্তি; দুটি সদস্য পদের বিপরীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া হয়। সবশেষ সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিল নির্বাচনে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের দুটি প্যানেল সবকটি পদে জয় পেয়েছিল। সেই সময় কোনো পদে জয়ের মুখ দেখেনি বিএনপি-জামায়তাপন্থী শিক্ষকদের প্যানেল।
সিন্ডকেটের দুই সদস্যপদে গত নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছিলেন ক্যাটাগরি-১ (অধ্যাপক বা সহযোগী অধ্যাপক) থেকে আওয়ামীপন্থী ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তচিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’র প্যানেলের হয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক জহির বিন আলম।
ক্যাটাগরি-২ (যেকোনো শিক্ষক) থেকে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তচিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ প্যানেলের হয়ে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড পলিমার সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক মো. মস্তাবুর রহমান জয়লাভ করেন।
একাডেমিক কাউন্সিলের চারটি সদস্য পদে সহযোগী অধ্যাপক ক্যাটাগরি ও সহকারী অধ্যাপক ক্যাটাগরিতে শুধূ ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ প্যানেলের শিক্ষকরা জয়লাভ করেছিলেন।
তারা ছিলেন- সমাজবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেন ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজির সহযোগী অধ্যাপক আসিফ ইকবাল। সহকারী অধ্যাপক ক্যাটাগরিতে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়রিংয়ের সহকারী অধ্যাপক মো. সাইফুল ইসলাম ও স্থাপত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুব্রত দাশ নির্বাচিত হন।
শিক্ষকরা জানান, পূর্বের নির্বাচনে শিক্ষকদের তিনটি প্যানেল সক্রিয় ছিল। বর্তমানে শিক্ষকদের চারটি প্যানেল সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে আওয়ামীপন্থী, আওয়ামী-বামপন্থী, বিএনপি-জামায়াত ও শুধু বিএনপি সমর্থকদের প্যানেল রয়েছে। এই সক্রিয়তা সর্বশেষ দেখা যায়, চলতি বছরের শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে। তবে সিন্ডিকেট কিংবা একাডেমিক কাউন্সিলের নির্বাচনে প্যানেলগুলো সক্রিয় থাকবে কিনা- তা সময়ই বলে দিবে বলে জানান শিক্ষকরা।