মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সুষ্ঠু নির্বাচনের পূর্বশর্ত
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ জুলাই ২০২৩, ১২:৩০:২১ অপরাহ্ন
সাম্প্রতিক ভিসানীতির বদৌলতে বিরোধী দলগুলোর সভা সমাবেশের ওপর বিধি নিষেধ কিছুটা শিথিল হতে দেখা গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় কিছুদিন আগে জামায়াতে ইসলামীকে ঢাকায় একটি সমাবেশ করার অনুমতি দেয়া হয়। জামায়াতও অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে সভা সমাবেশ করে, যা দেশবাসীসহ আন্তর্জাতিক মহলের সপ্রশংস দৃষ্টি ও মনোযোগ আকর্ষণ করে। কিন্তু জামায়াত তাদের এই রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের এই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক সভা অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নিলে খোঁড়া অজুহাত দেখিয়ে সভা সমাবেশের অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। প্রায় সকল ক্ষেত্রেই নাশকতার অজুহাত দেখানো হচ্ছে। সম্প্রতি দ্বিতীয় দফায় আবেদন করেও সিলেটে জামায়াতে ইসলামীকে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়া হয়নি। গতকাল শুক্রবার সিলেটের রেজিস্ট্রারী মাঠে এই সমাবেশ অনুষ্ঠানের কথা ছিলো। এ প্রসঙ্গে এসএমপি’র বক্তব্য হচ্ছে, সহিংসতার আশংকা থাকায় সিলেটে জামায়াতকে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হবে না, এটাই চূড়ান্ত। এ প্রসঙ্গে এসএমপি কমিশনার বলেন, জামায়াতের আবেদনটি গ্রহণ করে যাচাই বাছাই করা হয়। সব মিলিয়ে তাদের সমাবেশ আয়োজনের অনুমতি দেয়া হয়নি।
দেশের জনগোষ্ঠীর এক বড় অংশ এই দলের নেতাকর্মী ও সমর্থক। অতীতের নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনগুলোতেও এটা প্রমাণিত। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, ক্ষমতাসীনরা অন্যতম দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলটিকে ভয় পাচ্ছে। গণতন্ত্র, বাক স্বাধীনতা ও স্বাধীনভাবে রাজনৈতিক অনুশীলন এতো ঠুকনো বিষয় নয় যে, কথায় কথায় অভিযোগ এনে তা বন্ধ বা ব্যাহত করা যাবে। একজন অপরাধীকে যতো সহজে নাশকতাকারী হিসেবে অভিযুুক্ত করা যায়, ততো সহজে লক্ষ লক্ষ এমনকি কোটি কোটি মানুষের একটি রাজনৈতিক সংগঠনকে বিনা বিচারে নাশকতার জন্য অভিযুক্ত করা যায় না। এটা যেমন বেআইনী তেমনি অগণতান্ত্রিক ও সংবিধান বিরোধী। জামায়াত কোন নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলও নয়। একটি বৈধ রাজনৈতিক দলের প্রতি এহেন আচরণ দেশের সংবিধান, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার মূলে কুঠারাঘাত।
দেশে জাতীয় নির্বাচন আসন্ন। আগামী কিছুকালের মধ্যে নির্বাচনের তফশীল ঘোষণা হতে পারে। সরকার বার বার একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টির জন্য জামায়াতে ইসলামীসহ সকল গণতান্ত্রিক দলকে অবাধে রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা ও গণতন্ত্র চর্চার সুযোগ দেয়া সুষ্ঠু নির্বাচনের পূর্বশর্ত।