সুবর্ণ সুযোগ বটে!
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ জুলাই ২০২৩, ১২:৩০:২৮ অপরাহ্ন
বাংলাদেশ ও ভারতসহ এশিয়ার অধিকাংশ দেশে যখন জনসংখ্যা বাড়ছে, তখন ইউরোপের বিভিন্ন দেশে জনসংখ্যা স্বল্পতা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। অবশ্য জাপানের মতো এশিয়ার কিছু দেশে এবং অস্ট্রেলিয়ায় জনসংখ্যা স্বল্পতা এখন রীতিমতো সংকটে রূপ নিয়েছে। দেখা যাচ্ছে, ইউরোপের বিভিন্ন দেশসহ এশিয়ার কিছু দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমে যাওয়ায় কর্মক্ষেত্রে শ্রমিক কর্মীর সংখ্যা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। এ অবস্থায় এসব দেশকে বিদেশী শ্রমিক কর্মীদের উপর বিশেষভাবে নির্ভর করতে হচ্ছে। শ্রমিক স্বল্পতার কারণে অস্ট্রেলিয়ার খামারগুলোতে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। উৎপাদিত ফলমূল সংগ্রহ করতে না পারায় শত শত কোটি ডলারের ফলমূল গাছে কিংবা গাছের নীচে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। মাসিক ২ লাখ টাকা কিংবা ততোধিক বেতনেও শ্রমিক পাচ্ছন না অস্ট্রেলীয় খামারিরা। ইউরোপের বেশ একটি বড় দেশ ইতালি। এখানে খামারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শ্রমিক কর্মীর বিপুল ঘাটতি রয়েছে। কয়েক লাখ বিদেশী শ্রমিক নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে দেশটির। একইভাবে কানাডাও চাইছে বিদেশী শ্রমিক কর্মী সংগ্রহ করতে। ইউরোপের গুরুত্বপূর্ণ দেশ যুক্তরাজ্যেও প্রচুর শ্রমিক আবশ্যক।
জানা গেছে, কয়েকটি খাতে তীব্র শ্রমিক সংকট দেখা দেওয়ায় বিদেশী কর্মী নিয়োগের জন্য ভিসা নীতি শিথিল করেছে যুক্তরাজ্য। নির্মাণ খাতে শ্রমিক সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করায় নতুন করে বিদেশী শ্রমিক নিয়োগে এই উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির সরকার। নীতিমালা শিথিল করায় ইট প্রস্তুতকারী শ্রমিক, রাজমিস্ত্রি এবং ছাদ, ছাদের টাইলসের শ্রমিক কর্মীরা কাজের সুযোগ পাবেন যুক্তরাজ্যে। ব্রেক্সিটের পর যুক্তরাজ্য থেকে ইউরোপের অন্যান্য দেশের শ্রমিকরা চলে যাওয়ায় এবং কড়া ভিসানীতি আরোপের ফলে ব্রিটেনে শ্রমিক সংকট তীব্র হয়েছে। এজন্য অনেকে ব্রেক্সিট ও ভিসা নীতিকে দায়ী করছেন।
যুক্তরাজ্য ছাড়াও পূর্ব ইউরোপের পোলান্ড ও রোমানিয়াসহ বিভিন্ন দেশে শ্রমিক ঘাটতি রয়েছে। রাশিয়ার জাহাজ শিল্পসহ অন্যান্য শিল্পক্ষেত্রে বিদেশী দক্ষ শ্রমিক নিতে আগ্রহী। বিশ্বের এসব দেশে যখন শ্রমিক ও কর্মীর বিপুল চাহিদা বিদ্যমান, তখন প্রতিবেশী দেশগুলো বিশেষভাবে ভারত এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করছে। কিন্তু বাংলাদেশে লাখ লাখ শিক্ষিত তরুণ বেকার অবস্থায় হতাশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। তাদের তারুণ্য ও শক্তি সামর্থ্য কোন কাজে লাগাতে পারছে না। এ অবস্থায় সরকারের উচিত এই জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তরিত করে অধিক পরিমাণে প্রবাসী রেমিট্যান্স আয়ের পথ প্রশস্ত করা। যেহেতু দেশে এখন বৈদেশিক মুদ্রা তথা ডলার সংকট বিদ্যমান এবং দেশের অর্থনীতি বৃহদাংশে ডলারকেন্দ্রিক, তাই বিদেশে দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিক ও কর্মী প্রেরণ এখন সেই সংকট দূরীকরণের মোক্ষম উপায়। এজন্য দেশের সকল গুরুত্বপূর্ণ শহর ও নগরে আরো আধুনিক সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তুলতে হবে। দক্ষ ও অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। একই সঙ্গে প্রশিক্ষণের জন্য আধুনিক সরঞ্জাম ও উপকরণের ব্যবস্থা করতে হবে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে। আমরা এদিকে সরকারের প্রবাসী বিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগ ও কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।