সিলেটে ৪৫ দিনে সড়কে ঝরল ৬৮ প্রাণ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ জুলাই ২০২৩, ৮:৩৬:২৫ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। বড় দুর্ঘটনাগুলো গণমাধ্যমের খবরে আসলেও ছোটখাটো দুর্ঘটনা আসছেনা আলোচনায়। এমনকি হতাহতের ঘটনাও অনেকটা গা-সওয়া হয়ে গেছে। তবে বাস্তবতা হলো সড়ক-মহাসড়কে কোনোভাবেই কমানো যাচ্ছে না দুর্ঘটনা। আজকাল সড়ক দুর্ঘটনা স্বাভাবিক খবর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত দেড় মাসে সিলেট বিভাগের চার জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন অন্তত ৬৮ জন। নিহতদের মধ্যে শিশু, অন্তঃসত্ত্বা নারী, পর্যটক ও শ্রমিক রয়েছে। বেশির ভাগ এসব দুর্ঘটনাই ঘটছে ভোরে ও সকাল বেলা।
সর্বশেষ শুক্রবার সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় প্রীতম নামের পাঁচ বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়। এর আগের দিন সিলেটের কোম্পানিগঞ্জের বঙ্গবন্ধু মহাসড়কে চাকা ফেটে নিয়ন্ত্রণহীন মাইক্রোবাস (হাইয়েস) ধাক্কায় অটোরিকশার ছয় যাত্রীসহ ৭ জন মারা যান। নিহতদের মধ্যে একজন অন্তঃসত্ত্বা নারী।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি জানিয়েছে, গত জুন মাসে সিলেট বিভাগের চার জেলায় ৩৩টি সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এতে প্রাণহাণি হয়েছে ৪৬ জনের এবং আহত হয়েছেন ১১৪ জন। এছাড়া চলতি জুলাই মাসের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলায় এ মাসের ২১ তারিখ পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনায় ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ২ জন শিশু রয়েছেন এবং একজন ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যান।
জানা যায়, গত ৭ জুন ভোর সাড়ে ৫টার দিকে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার নাজিরবাজার এলাকার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে। পিকআপ ও ট্রাকের সংঘর্ষে ১৫ জন নিহত হন। তারা সবাই নির্মাণশ্রমিক ছিলেন। এছাড়া গত ৮ জুলাই রাত ১০টায় সিলেট-তামাবিল সড়কের দরবস্ত এলাকার পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে বাস-টমটম সংঘর্ষে ৫ জন নিহত হন। এ দুর্ঘটনায় কয়েকজন গুরুতর আহত হন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চালকদের অতিরিক্ত ডিউটি ও আয় করার প্রবণতায় দুর্ঘটনা বাড়ছে। ভাঙাচোরা ও ক্রুটিপূর্ণ সড়ক, ভুয়া লাইসেন্সধারী চালক, অতিরিক্ত গতি, ওভার টেকিং, নিয়ম না মানার প্রবণতা এবং জনসচেতনতার অভাবে বেশি দুর্ঘটনা ঘটে। এছাড়া যানজটে পড়ে সময় ক্ষেপণ হওয়ায় পরবর্তীতে দ্রুত চালিয়ে তা পুষিয়ে নেয়ার মানসিকতা ও চালকদের বেসামাল আচরণের কারণে ঘটছে বেশির ভাগ দুর্ঘটনা।
হাইওয়ে পুলিশ সিলেট রিজিয়নের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, সিলেটের অনেক স্থানে গাড়ির ছাদে কিংবা ভ্যানে যাত্রী বহন করা হয় যা নিষিদ্ধ। আমরা এ ধরণের যাত্রী পরিবহন গাড়ী হাইওয়েতে চলাচল করতে দেইনা। দেখা গেছে বেশীর ভাগ ঘটনা বেশি ঘটে ঈদ, উৎসব অথবা পিকনিকে যাতায়াতে। এছাড়া সংকীর্ণ রাস্তা, বেপরোয়া গতি আর চালকদের অসচেতনতার বিষয়টি তিনি উল্লেখ্য করেন।