কম খাওয়ার সুফল
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ জুলাই ২০২৩, ১২:২০:৪৩ অপরাহ্ন
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা গেছে, দীর্ঘজীবী হতে হলে কম খেতে হবে। বিপাকের অধিক হার অকালমৃত্যুর ঝুঁকি সৃষ্টি করে। দেখা গেছে, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের যেসব কমিউনিটির লোক স্বল্প ক্যালোরির খাবার গ্রহণের কঠোর নিয়ম মেনে চলেন তারা বিশ্বের গড় আয়ু’র চেয়ে বেশী দিন বাঁচেন। গবেষকদের মতে, দৈনিক ৬০০ ক্যালোরির বেশী গ্রহণ না করলে যে কেউ সুস্থ দেহে দীর্ঘ জীবন যাপন করতে পারবেন।
গবেষকদের উপরোক্ত গবেষণালব্ধ তথ্যটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রবাদ আছে, যতো মানুষ না খেয়ে মারা যায়, তার চেয়ে মরে খেয়ে বেশী। কথাটি অনেকের কাছে অদ্ভূত শোনালেও এটা সত্য। বর্তমান বিশ্বে মানুষের অন্যতম ঘাতক ব্যাধি হচ্ছে হৃদরোগ। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অনেক দেশেই এটা দ্বিতীয় ঘাতক ব্যাধি হিসেবে স্বীকৃত। আর এই ব্যাধির প্রধান কারণ হচ্ছে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমা হওয়া তথা স্থূলতা। অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ থেকে এটা হয়ে থাকে। তাই এই ঘাতক ব্যাধি থেকে বাঁচতে হলে অতিরিক্ত খাবার এবং ক্যালোরীযুক্ত খাবার গ্রহণ থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। গবেষকরা এ বিষয়টির উপরই জোর দিয়েছেন। অতিরিক্ত খাবার বা অতিরিক্ত ক্যালোরীযুক্ত খাদ্য গ্রহণ শুধু হৃদরোগ নয়, ক্যান্সার, ডায়াবেটিসসহ আরো অনেক মারাত্মক রোগের জন্য দায়ী।
বলা বাহুল্য, বাংলাদেশ বিশ্বের একটি অন্যতম দরিদ্র দেশ। এদেশের কোটি কোটি মানুষ অপুষ্টিতে ভুগছে। অতিরিক্ত খাবার বা অতিরিক্ত ক্যালোরীযুক্ত খাবার গ্রহণ তাদের কল্পনার বাইরে। তবে কিছু সংখ্যক বিত্তবান মানুষ বিশেষভাবে শহরাঞ্চলের মানুষের মাঝে স্থূলতা বৃদ্ধি পেতে দেখা যাচ্ছে। তাদের মধ্যে লক্ষ্য করা যাচ্ছে অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস। এর ফলে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপসহ নানা ধরণের রোগ ব্যাধি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে হৃদরোগ একটি অন্যতম প্রধান ঘাতক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। এ অবস্থায় খাবার দাবারের প্রতি সংশ্লিষ্টদের অধিক মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। অপুষ্টিতে মানুষ হয়তো তাৎক্ষণিকভাবে মারা যাবে না, তবে হৃদরোগ ও স্ট্রোক মুহূর্তে মানুষের প্রাণ সংহার করতে পারে। একজন প্রাণবন্ত মানুষকে করতে পারে অচল বা স্থবির।
এছাড়া এদেশে যে হারে খাদ্যদ্রব্যের ভেজাল ও বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ মেশানো হচ্ছে, এ অবস্থায় যতো কম খাবার গ্রহণ করা যায় ততোই মঙ্গল। গবেষকদের আবিস্কৃত তথ্য এবং বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় খাবার দাবারের ব্যাপারে ধনী দরিদ্র সকল শ্রেণীর মানুষেরই অধিক সচেতনতা ও সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে।