২১তম দিনেও অনড় শিক্ষকরা মঙ্গলবার থেকে আমরণ অনশন
প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ জুলাই ২০২৩, ৯:২৭:২২ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক : মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবির আন্দোলনে এখনো অনড় এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। সোমবার ২১তম দিনের মতো টানা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকরা। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) ব্যানারে এ আন্দোলন চলছে। সোমবারের মধ্যে জাতীয়করণের ঘোষণা না আসায় এবং প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ না পাওয়ায় মঙ্গলবার (১ আগস্ট) থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা।
মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে গত ১১ জুলাই থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন কয়েকহাজার শিক্ষক। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি দফায় দফায় ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানালেও শিক্ষকরা লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পরও কোনো ফল আসেনি। এ পরিস্থিতিতে সোমবারের মধ্যে জাতীয়করণের সুস্পষ্ট ঘোষণা বা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পাঁচ মিনিটের সাক্ষাৎ না পাওয়ায় মঙ্গলবার থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকরা।
২১তম দিনে সোমবার সকালে অবস্থান কর্মসূচিতে রাখা বক্তব্যে বিটিএর সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের সুস্পষ্ট ঘোষণা বা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ ছাড়া আমরা ঘরে ফিরে যাবো না। যতোক্ষণ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ না পাবো ততোক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আমাদের গন্তব্য এখন দুটি, হয় ঘোষণা বা পাঁচ মিনিটের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ না পেয়ে ক্লাসে ফিরে যাওয়া অথবা কবরস্থান।
তিনি আরো বলেন, জাতীয়করণের বিষয়টি যাচাই বাছাইয়ে দুইটি কমিটি গঠনের কথা থাকলেও এখনো তা গঠন করা হয়নি। শিক্ষা প্রশাসন শুধু সিদ্ধান্তের কথা জানাচ্ছে। গ্রীষ্মের ছুটি শীতে নিয়ে ও কমিটি গঠনের কথা বলে আন্দোলনরত শিক্ষকদের ক্লাসে ফিরাতে চাচ্ছেন।
শিক্ষামন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ছুটি বাতিল করে আপনারা শুধু শিক্ষকদের ক্ষতিগ্রস্ত করেননি, আপনি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জিম্মি করলেন। আর মাননীয় মন্ত্রী মিডিয়ায় বললেন আমরা নাকি আন্দোলনে নেমে শিক্ষার্থীদের জিম্মি করছি।
অবস্থানরত শিক্ষকরা বলছেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মাত্র ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা, ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া ও ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। একই কারিকুলামে একই সিলেবাসে পাঠদান করিয়েও সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনে রয়েছে বিস্তর পার্থক্য। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধানদের থেকে এক ধাপ নিচে বেতন দেয়া হচ্ছে। বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। তাছাড়া বিগত কয়েক বছর যাবত অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কেটে নেয়া হচ্ছে। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করা হলেও প্রতিকার পাওয়া যায়নি। বর্তমান সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থা স্মার্ট করতে প্রয়োজন স্মার্ট শিক্ষক। তাই স্মার্ট শিক্ষক পেতে শিক্ষায় বিনিয়োগ বৃদ্ধিসহ মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারিকরণের বিকল্প নেই।