সিলেটে গলা কেটে ও কুপিয়ে ২ নারীকে খুন
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ আগস্ট ২০২৩, ৮:০০:৩৪ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটে গলা কেটে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে দুই নারীকে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলায় এই দুটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ তথ্যটি নিশ্চিত করে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) শেখ মো: সেলিম বলেন, দুটি খুনের ঘটনাই পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। গোয়াইনঘাটের ঘটনায় জড়িত একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর কোম্পানীগঞ্জের খুনের ঘটনায় তদন্ত চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনার বিস্তারিত জানা যাবে এবং জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।
নিহতরা হলেন- কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের বালুচর গ্রামে ছালেখা বেগম (৫০) এবং গোয়াইনঘাটের পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের উত্তর প্রতাপপুর গ্রামের আয়েশা সিদ্দিকা জুলি ওরফে জরিনা (৩০)। এরমধ্যে গতকাল সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নিজ ঘরের মেঝে থেকে ছালেখার গলাকাটা ও সকাল সোয়া ৯টার দিকে বাড়ির পাশের সড়ক থেকে আয়েশার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন আগে স্বামী আবদুর রউফের সঙ্গে ছালেখা বেগমের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এরপর থেকেই কোম্পানীগঞ্জের ইসলামপুর ইউনিয়নের বালুচর গ্রামে একটি বাড়িতে তিনি থাকতেন। তার চার মেয়ে ও দুই ছেলে থাকলেও কেউ সঙ্গে থাকতেন না। গতকাল সকালে প্রতিবেশীরা তার ঘরের দরজা খোলা দেখতে পেয়ে তাকে ডাকাডাকি করলেও কোন সাড়া পাচ্ছিলেন না। একপর্যায়ে ঘরের ভেতরে উঁকি দিয়ে দেখতে পান মেঝেতে ছালেখার গলাকাটা রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে আছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিল্লোল রায় বলেন, ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনসহ (পিবিআই) ও পুলিশের অন্যান্য বিভাগের কর্মকর্তারা বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করছেন। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
একইদিন গোয়াইনঘাট উপজেলায় প্রতিবেশী যুবকের দায়ের কোপে আয়েশা সিদ্দিকা জুলি ওরফে জরিনা (৩০) নামের এক গৃহবধূ খুন হয়েছে। সকাল সোয়া ৯টার দিকে উপজেলার উত্তর প্রতাপপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তিনি ওই গ্রামের হাসান মিয়ার স্ত্রী।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে জরিনা তার মেয়েকে নিয়ে পাশের বাড়ির নোয়াব আলীর ছেলে সিদ্দিকুর রহমানের বসতঘরের পিছন দিয়ে স্থানীয় মাদ্রাসায় যাচ্ছিলেন। এ সময় সিদ্দিকুরের সঙ্গে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে সিদ্দিকুর ধারালো রামদা দিয়ে জরিনাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। তখন জরিনার চিৎকারে প্রতিবেশিরা এগিয়ে আসলে সিদ্দিকুর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত জরিনাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জরিনা মৃত্যুবরণ করেন। ময়না তদন্তের জন্য জরিনার লাশ বর্তমানে হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম নজরুল বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় অভিযুক্ত সিদ্দিকুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।