এসএসসি পরীক্ষায় সিলেটের খারাপ ফল
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ আগস্ট ২০২৩, ১২:৩০:৩৬ অপরাহ্ন
গতকাল একটি ইংরেজী মিডিয়ায় ‘হোয়াই আর সিলেট বোর্ড স্টুডেন্টস পারফর্মিং পুওরলি ইন এসএসসি এক্সামস্’? শিরোনামে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেন প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, চলতি বছর সিলেট বোর্ডে এসএসসি পরীক্ষায় পাশের হার ছিলো ৭৬.৬ শতাংশ। কিন্তু ৯টি বোর্ডের গড় পাশের হার ছিলো প্রায় ৮১ শতাংশ। অন্যান্য শিক্ষাবোর্ডের তুলনায় সিলেট শিক্ষাবোর্ডের রেজাল্ট যথেষ্ট খারাপ। বিষয়টি ইতোমধ্যে সচেতন মহলের দৃষ্টি ও মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। অনেকের মতে, বিভিন্ন স্কুলে দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষকের যথেষ্ট মনোযোগের অভাব, হাওরাঞ্চলের শিক্ষার প্রতিকূল পরিবেশ গণিত ও ইংরেজী বিষয়ে যোগ্য শিক্ষকের অভাব এবং মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় অমনোযোগী মনোভাব এসএসসি পরীক্ষায় এ ধরনের খারাপ রেজাল্টের জন্য বিশেষভাবে দায়ী।
দেখা গেছে, সিলেট শিক্ষাবোর্ডে মাত্র ৫ হাজার ৪৫২ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে, যখন ঢাকা বোর্ডের ৪৬৩০৩ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। এই তফাৎটি যেমন বিশাল তেমনি সতর্কতা সৃষ্টিকারী। ঢাকার সাথে সিলেটের শিক্ষাক্ষেত্রে এই অস্বাভাবিক পার্থক্য সিলেট অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাক্ষেত্রে চরম দৈন্যদশারই ইংগিত প্রদান করছে, সতর্ক হওয়ার দাবি জানাচ্ছে।
অনেকের মতে, সিলেটে গণিত ও ইংরেজী বিষয়ে দক্ষ শিক্ষকের ঘাটতি অস্বাভাবিক। ২০২১ সালে সিলেট বোর্ড সারা দেশে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছিলো এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ক্ষেত্রে। ওই বছর পরীক্ষায় মহামারির কারণে গণিত কিংবা ইংরেজী বিষয় ছিলো না। কিন্তু গণিত ও ইংরেজী বিষয়ে পুনরায় পরীক্ষা নেয়া শুরু হলে সিলেট বোর্ডের শিক্ষার্থীদের ফলে অনেকটা বিপর্যয় ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে এখনি চিন্তা ভাবনা ও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া উচিত বলে মনে করেন সচেতন মহল।
দেখা গেছে, সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন স্কুলে বহু শিক্ষকের পদ শূন্য। অনেক ক্ষেত্রে আর্থিক কারণে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মনোযোগ কম। দরিদ্র পরিবারের বহু শিক্ষার্থী শিশুশ্রমে জড়িত। এছাড়া মানবিক বিভাগের অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের ধারণা এই বিভাগ থেকে পাশ করতে তেমন পড়াশোনার প্রয়োজন নেই। দেখা গেছে, কোন কোন স্কুলে এসএসসিতে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই মানবিক বিভাগের। অনেক ক্ষেত্রে স্কুলের শিক্ষকরা স্কুলে যথেষ্ট মনোযোগ সহকারে শিক্ষার্থীদের পড়ান না, যাতে তাদের কাছে প্রাইভেট পড়তে বাধ্য হয় শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি অত্যন্ত নিন্দনীয় ও উদ্বেগজনক।
উপরোক্ত প্রতিবেদনে সিলেট শিক্ষাবোর্ডের শিক্ষার্থীর খারাপ ফল এবং এজন্য দায়ী যেসব কারণ তুলে ধরা হয়েছে, সেগুলো যথেষ্ট যৌক্তিক বলে আমরা মনে করি। শিক্ষা বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় অবিলম্বে এদিকে দৃষ্টি ও মনোযোগ দেবেন, এমন প্রত্যাশা আমাদের।