বরফ গলে ১০ হাজার পেঙ্গুইনের মৃত্যু
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ আগস্ট ২০২৩, ৮:১১:৫৬ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এম্পেরর প্রজাতির প্রায় ১০ হাজার পেঙ্গুইন ছানার মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত বছর অ্যান্টার্কটিকার পশ্চিমে বেলিংশাউসেন সাগরের সম্মুখভাগে এ ঘটনাটি ঘটেছে। স্যাটেলাইটের ছবিতে দেখা যায়, পানিতে সাঁতারোপযোগী পালক গজানোর আগেই পেঙ্গুইনের ছোট ছোট ছানাগুলোর পায়ের নিচের বরফ গলতে শুরু করে এবং তারা বরফ-ঠান্ডা পানিতে পড়ে যায়। পরে হয় পানিতে ডুবে নয়তো বরফে জমে পাখিগুলোর মৃত্যু হয়। খবর বিবিসির।
ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভের ড. পিটার ফ্রেটওয়েল বলেন, এটা ছিল আমাদের জন্য ভয়াবহ এক অশনিসংকেত। এখানকার ৯০ শতাংশ এম্পেরর পেঙ্গুইন এখন বিলুপ্তির পথে। তিনি বলেন, এই প্রজাতির পেঙ্গুইনগুলো বংশবৃদ্ধির জন্য সমুদ্রের ওপরের বরফ প্রয়োজন। এটি স্থির থাকে এবং শিশ পেঙ্গুইনদের এখানে নিয়ে আসে। কিন্তু এখন বরফ গলায় তাদের প্রজাতি হুমকিতে পড়েছে। তবে এখনো আশা আছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণ যদি করতে না পারি, তাহলে সুন্দর প্রাণীগুলো বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
বিজ্ঞানীরা বেলিংশাউসেন সাগরের কাছে পাঁচটি কলোনি ট্র্যাক করেছেন। এগুলো হলো রথসচাইল্ড দ্বীপ, ভার্দি ইনলেট, স্মাইলি দ্বীপ, ব্রায়ান উপদ্বীপ এবং ফ্রগনার পয়েন্ট। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) সেন্টিনেল-২ স্যাটেলাইট ব্যবহার করে তারা পেঙ্গুইনের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হন।
ডিসেম্বর বা জানুয়ারির কাছাকাছি সময়ে সাধারণত নতুন পাখিরা সমুদ্রে চলে যায়। কিন্তু গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন, সাঁতারের জন্য ছানাগুলোর প্রয়োজনীয় পালক গজানোর আগে নভেম্বরেই সামুদ্রিক বরফ ভাঙতে শুরু করেছিল। ফলে পাঁচটি কলোনির চারটিতেই প্রজনন ব্যর্থ হয়, শুধু উত্তরের রথসচাইল্ড দ্বীপ কিছুটা সফল হয়েছে।
অ্যান্টার্কটিকের সামুদ্রিক বরফ বিশেষজ্ঞ ড. ক্যারোলিন হোমস বলেন, আর্কটিকের ওপর বিভিন্ন গবেষণা মতে, জলবায়ু উষ্ণায়ন পরিস্থিতি বদলে দেওয়া গেলে উত্তর মেরুতে সমুদ্রের বরফ পুনরুদ্ধার করা সম্ভব। তবে অ্যান্টার্কটিকেও তা ঘটবে কিনা সেটি আমাদের জানা নেই। কিন্তু এটি মনে করার কারণ আছে যে, যথেষ্ট ঠা-া পেলে সমুদ্রের বরফ পুনর্গঠিত হবে।
প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) এম্পেরর পেঙ্গুইনদের ‘বিলুপ্তের হুমকিতে’ থাকা প্রজাতি হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে। তা ছাড়া বিশ্ব উষ্ণায়ন বাড়তে থাকার কারণে এই পেঙ্গুইনগুলোর জীবনযাত্রা ঝুঁকির মুখে পড়ায় এদের জরুরি ভিত্তিতে অরক্ষিত ক্যাটাগরিতে রাখার প্রস্তাবও করা হয়েছে।