প্রসঙ্গ : ব্রিকস কূটনীতি
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ আগস্ট ২০২৩, ১২:৩০:২১ অপরাহ্ন
একটি বহুল প্রচলিত প্রবাদ হচ্ছে, ‘অনেস্টি ইজ দ্য বেস্ট পলিসি’ অর্থাৎ সততাই সর্বোত্তম নীতি। তবে সততা মানে নির্বুদ্ধিতা নয়, সৎ হতে হলে চালাক চতুর, সতর্ক ও বুদ্ধিমান হওয়া যাবে না, এমন নয়। সৎ মানুষ বুদ্ধিমান হতে পারে। এক্ষেত্রে অসততা ও ধূর্ততা পরিত্যাজ্য।
বলা বাহুল্য, যথেষ্ট সততার সাথে দেশের অভ্যন্তরীন ও পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণ ও পরিচালনায় সক্ষম হচ্ছেন না সংশ্লিষ্টরা। অন্ততঃ বাহ্যিকভাবে এটাই প্রতীয়মান হচ্ছে। এর ফলে ভুগতে হচ্ছে দেশের ষোল-সতেরো কোটি মানুষকে। সম্প্রতি ব্রিকসে যোগদান নিয়ে যে কর্মকান্ড সংঘটিত হয়েছে, এতে রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় হয়েছে। অর্থের অপচয়ের কথা বাদ দিলেও যে ক্ষতিটা সবচেয়ে বড় হয়ে দেখা দিয়েছে তা হচ্ছে দেশবাসীর পাশাপাশি বিশ্ববাসীর সামনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির দুর্বলতা প্রকাশ।
বিশ্লেষকদের মতে, প্রতিবেশী দেশ ভারতের বিরোধিতা তথা ভেটোর কারণেই বাংলাদেশ ব্রিকসের সদস্য হতে পারেনি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রস্তাব করেন, নতুন যেসব সদস্য ব্রিকসে নেয়া হবে তারা আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার টার্গেটে থাকতে পারবে না। নরেন্দ্র মোদী এই শর্ত না দিলেও পারতেন কারণ ব্রিকসের স্থায়ী সদস্য চীন ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও ইরানকে সদস্য হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। তাই আগামীতে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হতে পারে এমন দেশকে না নেয়ার পেছনে এক্ষেত্রে তেমন কোন ভালো যুক্তি নেই। অথচ ভারত এই শর্তে গো ধরায় ধরা খেলো বাংলাদেশ, সর্বোপরি ভারতের এই অযৌক্তিক শর্তের কারণেই ব্রিকসের সদস্য পদ লাভে ব্যর্থ হলো বাংলাদেশ।
এ অবস্থায় অনেকের মনে প্রশ্ন জাগাটা স্বাভাবিক। বন্ধুদেশ হিসেবে দাবিদার ভারত এমন আচরণ করলো কেনো? এরও জবাব দিয়েছেন অনেক বিশ্লেষক অনেকভাবে। অনেকে বলেছেন, বাংলাদেশ সদস্য হলে ব্রিকসে চীনের প্রভাব বলয় বৃদ্ধি পাবে।
এদিকে সরকার যে ভুলটি করেছেন তা হচ্ছে, পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে পূর্ণ স্বচ্ছতা গ্রহণ না করা। আমরা বৈদেশিক নীতির ক্ষেত্রে অতীতের ন্যায় বাংলাদেশের একটি সহজ সরল ও স্বচ্ছ কূটনীতি অনুসরণের দাবি জানাচ্ছি। কারণ দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যত উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য এটা এখন অত্যন্ত প্রয়োজন।