সিলেটের সড়ক সংস্কারে হাজার কোটির প্রকল্প
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ আগস্ট ২০২৩, ৯:১৯:২৯ অপরাহ্ন
অগ্রাধিকার পাবে জরাজীর্ণ সড়ক-কালভার্ট
জালালাবাদ রিপোর্ট : গত বছরের ভয়াবহ বন্যায় সিলেট বিভাগে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বহু সড়ক ও সেতু। সেগুলো এখনো সংস্কার করা হয়নি। এ কারণে ভোগান্তিতে আছেন সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর বাসিন্দারা। উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, সেতু ও কালভার্ট পুনর্নির্মাণ ও সংস্কারে হাজার কোটি টাকার আলাদা একটি প্রকল্প নিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।প্রকল্পের নাম ‘এডিবির জরুরি সহায়তায় বন্যা ২০২২-এ ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামীণ অবকাঠামো পুনর্বাসন’। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ১২৩ কোটি টাকা। প্রকল্পের বড় অংশই বৈদেশিক ঋণ। প্রকল্পে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ৯০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ দিচ্ছে। বাকি টাকা সরকারি অর্থ।
প্রকল্পে সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ময়মনসিংহ, শেরপুর, নেত্রকোনা, জামালপুর ও কুড়িগ্রাম-এ নয়টি জেলা অন্তর্ভুক্ত। প্রকল্পের মেয়াদ চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত। অর্থাৎ তিন বছরের বেশি সময় ধরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ও সেতু মেরামতের কাজ চলবে।সিলেট-সুনামগঞ্জে গত বছর বন্যা হয় তিন দফায়। এর মধ্যে জুনে ভয়াবহ বন্যায় গ্রামীণ সড়ক তছনছ হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় বহু সেতু, কালভার্ট। সড়ক-সেতুর অনেকগুলোই এখনো সংস্কার করা হয়নি। এতে ভোগান্তি শেষ হচ্ছে না স্থানীয় বাসিন্দাদের।
জাতীয় সড়কব্যবস্থার শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের সড়কের একক দায়িত্ব এলজিইডির। নিজেদের আওতাধীন গ্রামীণ সড়কের উন্নয়ন-রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও তাদের। বর্তমানে দেশের সবচেয়ে বিস্তৃত সড়ক নেটওয়ার্ক এলজিইডির। সংস্থাটির আওতায় ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৯২১ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে। এর অর্ধেকের বেশিই কাঁচা সড়ক।
এলজিইডির কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিবছর সংস্থার বাজেটে সড়ক ও সেতু রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ নির্দিষ্ট টাকা বরাদ্দ থাকে। অনেক সময় বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে একাধিক জেলার সড়ক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের বরাদ্দ থেকে সংস্কার করা সম্ভব হয় না। এ পরিস্থিতিতে আলাদা প্রকল্প নেওয়া হয়। একইভাবে গত বছরের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের জন্য এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
প্রকল্পটির আওতায় ৪০৬ কিলোমিটার উপজেলা সড়ক, ৩৪৬ কিলোমিটার ইউনিয়ন সড়ক, ২ হাজার ১৭১ মিটার সেতু ও ৮০৯ মিটার কালভার্ট পুনর্নির্মাণ ও সংস্কার করা হবে। সড়ক রক্ষায় দেয়াল (টো ওয়াল) নির্মাণ করা হবে ৬২ কিলোমিটার। রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে ২ লাখ ২১ হাজার বর্গমিটার সড়কের ঢাল।সম্প্রতি এই প্রকল্পের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মো. রেজাউল হক। তিনি বলেন, ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কোন সড়ক কখন সংস্কার করা হবে, সেটার অগ্রাধিকার তালিকা করা হয়েছে। জেলাগুলো থেকে দরপত্র-সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র আসছে। এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। দ্রুতই কাজ শুরু হবে।অসংখ্য সড়ক সরেজমিনে দেখা গেছে, বন্যার পানিতে ভাঙলেও এখনো ঠিক করা হয়নি। ভাঙাচোরা রাস্তায় গাড়ি চালাতে গেলে গর্তে পড়ে প্রায়সময়ই দুর্ঘটনা ঘটে। এ অবস্থায় হাজার কোটির এ প্রকল্প গ্রামীণ সড়কগুলোতে একটি পরিবর্তন আনবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।