দৃষ্টিনন্দন বাস টার্মিনাল: নানা জটিলতায় আটকে আছে উদ্বোধন
প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ আগস্ট ২০২৩, ৩:০০:৫১ অপরাহ্ন
ইজারা দিয়ে অনানুষ্ঠানিক চালু
মুনশী ইকবাল :
সিলেটের সবচেয়ে ব্যস্ততম, ঐতিহ্যবাহী ও সর্ববৃহৎ বাস টার্মিনাল কদমতলী। ৮ একর ভূমিতে এখানে নির্মিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মানের বাস টার্মিনাল। একসময়ের কর্দমাক্ত নোংরা ঘিঞ্জি এই বাস টার্মিনাল আজ দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, টার্মিনালের সব কাজ সম্পন্ন, এখন কেবল আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষা। তবে তা আটকে আছে নির্মাণে ক্রুটি, নামকরণসহ নানা জটিলতায়।
আর বাস মালিক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাস টার্মিনাল দৃষ্টিনন্দন ঠিক আছে কিন্তু এতে তাদের আশার প্রতিফলন হয়নি। টার্মিনালে বাসের স্থান সঙ্কুলানের চেয়ে অবকাঠানো বেশি গুরুত্ব পেয়েছে, ফলে অধিকাংশ বাস রাস্তায় রাখতে হবে, গ্যাঞ্জাম তৈরি হবে। তারা বলেন, প্রায় ১ হাজারের মতো বাসের মধ্যে মাত্র দেড়শো থেকে ২শ বাসের জায়গা এই টার্মিনালে হবে, বাকিগুলো আগের মতোই রাস্তায় থাকতে হবে। দীর্ঘদিন অপেক্ষা করে মেয়রের সাথে আলোচনা করে তারা অনানুষ্ঠানিকভাবেই টার্মিনাল চালু করতে বাধ্য হয়েছেন। বাস মালিকরা বলেন, টার্মিনাল শুরুর আগেই নানান জটিলতা সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে। চালুর আগেই কিছু জায়গায় পানি পড়া, ফাটল এসব নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। যদিও তা মেরামত করা হয়েছে কিন্তু এতে শ্রমিকরা আতঙ্ক মুক্ত নয়। কারণ কোটি টাকা খরচ করে নির্মাণ করা স্থাপনায় শুরুতেই যদি ফাটল দেখা দেয় তবে মেরামতে কী হয়েছে আল্লাহ মালুম। তবে সিসিক সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, মূল স্থাপনায় কোনো ত্রুটি ছিল না, সৌন্দয্য বর্ধনের কিছু জায়গায় নকশায় ক্রটির জন্য সমস্যা দেখা দিয়েছিল, যা সারিয়ে নেওয়া হয়েছে।
সরকার ও বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে মিউনিসিপ্যাল গভর্নমেন্ট সার্ভিস প্রজেক্ট-এমজিএসপি প্রকল্পে সিলেট সিটি কর্পোরেশন দেশের সর্বাধুনিক সুবিধাসংবলিত ও নান্দনিক নির্মাণ শৈলীতে ‘কদমতলী বাস টার্মিনাল’ নির্মাণ করেছে। ১৫ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষামূলকভাবে চালু হলেও বর্তমানে এটি বলা যায় পুরোদস্তুর চালু আছে। ৯৬ লক্ষ ৫০ হাজার ৫শ টাকায় টার্মিনালটি ইতিমধ্যে ইজারাদারদের ইজারাও দিয়েছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন। হেলালুজ্জামান হেলাল নামে একজন সহ কয়েকজন এই ইজারা টেন্ডারের মাধ্যমে পেয়েছেন বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি লাইন কেটে দেন। পরে হোয়ার্সাপে মেসেজ পাঠালেও তিনি সারা দেননি।
খবর নিয়ে জানা গেছে, মার্চে প্রধানমন্ত্রীর একাধিক প্রকল্পের সাথে টার্মিনাল উদ্বোধনের কথা থাকলেও তা আর হয়নি। উদ্বোধনের আগে টার্মিনাল ভবনের আস্তরে ফাটল ও গ্লাস ফিটিংসের কাজে ত্রুটি ধরা পড়ায় তা থেমে যায়। এখন আর কবে এটি উদ্বোধন হবে তা জানে না সিসিক।
একটি সূত্র জানিয়েছে বাস টার্মিনালটি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে নামকরণের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। সেটি পাশ হলে উদ্বোধন হতে পারে। সে পর্যন্ত বাস টার্মিনালটি উদ্বোধনের আর কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তবে স্থানীয়দের মধ্যে এর উদ্বোধন নিয়ে কোনো চিন্তাভাবনা নেই। তারা টার্মিনাল চালু হয়ে গেছে এতেই খুশি। এর আর কোনো প্রয়োজন আছে বলেও মনে করেন না বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে। আর সিসিক কর্তৃপক্ষ বলছে, এ ব্যাপারে তাদের দিক থেকে সব কাজ সম্পন্ন, এখন আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের বিষয়টি রাজনৈতিক ও সামাজিক সিদ্ধান্তের ব্যাপার। এটা কবে নাগাদ হবে তা তাদের জানা নেই।
সোমবার বিকেলে সরেজমিন দেখা যায় বাস টার্মিনালে জমজমাট চিত্র। টার্মিনালের মতো বাইরেও অনেক বাস রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল। টার্মিনালে একটার পর একটা বাস এসে একদিকে ঢুকছে আবার অন্য পথ দিয়ে বের হচ্ছে। যাত্রীরা উঠানামা করছেন। অনেকে হলরুমে থাকা আসনে বসে অপেক্ষা করছেন। টিকিট কাউন্টারে টিকিট বিক্রি হচ্ছে। নিচতলায় মাঝখানে গোল ঘোরাও দেওয়া অনুসন্ধান ডেস্ক ছিল খালি। ডেস্কের উপরে ফ্যান চললেও সেখানে কোনো লোকজন ছিলেন না। দোতলায় রেস্টুরেন্টেও ছিল লোকজনের আনাগোনা।
ঝকঝকে তকতকে পুরো টার্মিনালের সৌন্দর্য্য দেখে মুগ্ধ অনেক যাত্রী। মোহাম্মদ জাকারিয়া মজুমদার নামে এক যাত্রী বলেন, মৌলভীবাজার যাওয়ার জন্য হবিগঞ্জ এক্সপ্রেসের টিকিট নিয়েছেন। তিনি বলেন টার্মিনাল দেখে বুঝার উপায় নেই এটি দেশী কোনো বাস টার্মিনাল। আর কদমতলীতে তো তা চিন্তারও বাইরে ছিল। সারাজীবন আমরা বাস টার্মিনাল মানে দেখে এসেছি নোংরা, কাদা, কিন্তু এখানে মনে হচ্ছে যেন কোনো বিমানবন্দরের লাউঞ্জে বসে আছেন।
জাকারিয়া বলেন বলেন আমি জানতাম না এখান থেকে বাস চলাচল শুরু হয়েছে। কিন্তু এসে দেখি টার্মিনাল চালু, এটা দেখে খুব ভালো লাগছে। উদ্বোধনের অপেক্ষায় বসে না থেকে টার্মিনাল চালু করার সিদ্ধান্তকে তিনি স্বাগত জানান।
টার্মিনালে বাসের শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা একজন বাস শ্রমিক জানান উদ্বোধনের সময় উদ্বোধন হবে। কিন্তু আমরা তো বসে থাকতে পারি না। উদ্বোধনের অপেক্ষায় আমরা ক্লান্ত। আমাদের বাসের জায়গা হচ্ছে না। তাই আমাদের নেতারা মেয়রকে চাপ দিয়ে এখানে বাস এনে ঢুকিয়েছেন।
এরআগে উদ্বোধনের আগেই সিলেটের কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে ফাটল দেখা দেয়। এতে কোনো নির্মাণত্রুটি রয়েছে কি না তা অনুসন্ধানে ৬ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে সিলেট সিটি কর্পোরেশন। চলতি বছরের ১ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে এই তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানান সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। সংবাদ সম্মেলনে মেয়র জানান, আধুনিক বাস টার্মিনালের একটি অংশে ত্রুটি ধরা পড়ে। তাৎক্ষণিক তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে টার্মিনাল পরিদর্শন করেন। এ নিয়ে জনমনে কোনো বিভ্রান্তি যাতে না ছড়ায় সে জন্য বিশেষজ্ঞদের দিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি আগামী ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে।
সিসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলী আকবর চৌধুরী তদন্ত কমিটির সমন্বয়ক। কমিটিতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, এলজিইডি সিলেটের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, গণপূর্ত অধিদপ্তর সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী, সড়ক বিভাগ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী রয়েছেন।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ২৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌফিক বক্স লিপন বলেন, আন্তর্জাতিক মানের এই বাস টার্মিনাল আমাদের জন্য এক বিরাট গর্বের বিষয়। শ্রমিক সংগঠন, মালিক সংগঠন, সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ, স্থানীয় কাউন্সিলর সবার সম্মিলিত অবদানে আমরা একটি দৃষ্টিনন্দন বাস টার্মিনাল পেয়েছি। এখন এর রক্ষণাবেক্ষণ একটি বড়ো চ্যালেঞ্জের বিষয়। এজন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, কমিটি এর তত্ত্বাবধান করে।
তিনি বলেন, ত্রুটির ব্যাপারে ইতিমধ্যে তদন্ত কমিটি রিপোর্ট দিয়েছে। তারা বলেছেন মূল স্থাপনায় কোনো সমস্যা নেই। সৌন্দর্য্য বর্ধনের নকশায় কিছু ত্রুটি ছিল যা সারিয়ে নেওয়া হয়েছে। ফলে এখন শুধু আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষায়। এছাড়া টার্মিনাল পরীক্ষামূলকভাবে পুরোপুরিই চালু। উদ্বোধনের ব্যাপারে তৌফিক বক্স লিপন জানান নির্বাচনের আগে সিসিকের শেষ যে সাধারণ সভা হয়েছিল তাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের নামে বাস টার্মিনালের নামকরণ প্রস্তাব পাশ হয়। এই প্রস্তাব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এখন তা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায়। আমরা আশা করছি এটা অনুমোদন পেলেই উদ্বোধন হয়ে যাবে।
সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রবাস সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মইনুল ইসলাম জানান, এই বাস টার্মিনালে আমাদের আশার প্রতিফলন ঘটেনি। টার্মিনালে বাস রাখার জায়গার তুলনায় বিল্ডিং বেশি হয়ে গেছে। আমাদের প্রায় ১ হাজারের মতো বাস আছে। কিন্তু যে টার্মিনাল বানানো হয়েছে তাতে মাত্র দেড়শো থেকে দুইশোর মতো বাস রাখা যাবে। বাকি বাস তো আগের মতোই রাস্তায় রাখতে হবে। এতে গ্যাঞ্জাম তৈরি হবে। আমরা শুরু থেকেই কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি বলে আসছি কিন্তু তারা শুনেননি। এখন আমাদের বলেছেন পার্শ্ববর্তী ফল মার্কেটের দিকে টার্মিনাল সম্প্রসারণ করে বাস রাখার জায়গা করে দেবেন।
মইনুল ইসলাম বলেন সামনের টিকিট কাউন্টারসহ যে বিল্ডিং আছে কেবল তা রেখে পুরো পেছন বাস রাখার জন্য অবমুক্ত রাখলে ভালো ছিল, কিন্তু দেখা যাচ্ছে একটু পর পর বিল্ডিং, এতে অনেক জায়গা কমে গিয়েছে। এটি বাস্তব সম্মত হয়নি। তিনি বলেন, এমনিতেই বাস রাখা নিয়ে আমাদের অনেক সমস্যা হচ্ছিলো তাই আমার বাধ্য হয়ে মেয়রের সাথে আলোচনা করে উদ্বোধনের আগেই এখানে বাস ঢুকিয়েছি।
তাছাড়া উদ্বোধনের আগেই পশ্চিম দিকে একটি স্থাপনা এবং মসজিদের পরে একেবারে শেষ মাথায় মালিক সমিতির জন্য যে বিল্ডিং বরাদ্ধ রাখা হয়েছে তাতে পানি পড়ে এবং ফাঁটল দেখা দিয়েছিল। যদিও তা মেরামত করা হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন তো থেকেই যায় শুরুর আগেই যদি এই অবস্থা শুরু হলে কী হবে। এতে আমাদের অনেক শ্রমিক কিছুটা হলেও নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কিত।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ বদরুল হক পররাষ্ট্র মন্ত্রীর নামে বাস টার্মিনালের নামরকরণে প্রস্তাবের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বাস টার্মিনালটি এখন চালু আছে। নিয়মিত সব কার্যক্রম চলছে। সিটি কর্পোরেশন এটি ইজারা দিয়ে দিয়েছে, তারাই এখন তা দেখভাল করছে। আমাদের দিক থেকে যা করার আমরা তা সম্পন্ন করেছি। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের ব্যাপারে আমাদের কিছু জানা নেই। এটি কবে হবে তা রাজনৈতিক ও সামাজিক সিদ্ধান্তের বিষয়, তা সেভাবেই হবে।
সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা যায়, ‘কদমতলী বাস টার্মিনালে’ বিমানবন্দরের আদলে বহির্গমন, আগমনের আলাদা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। স্থাপনার দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে গোলাকার পাঁচতলা একটি টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে, যেখানে টার্মিনাল পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা কার্যালয়, নিয়ন্ত্রণ কক্ষ, পুলিশ কক্ষ এবং পর্যটন কার্যালয় স্থাপন করা হবে।
সিলেটের ঐতিহ্যবাহী ক্বীন ব্রিজ, আলী আমজাদের ঘড়ি ও আসাম টাইপ বাংলোর স্থাপত্যশৈলী থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে কদমতলী বাস টার্মিনাল প্রকল্পের নকশা প্রণয়ন করা হয়। এই টার্মিনালের নকশা করেন স্থপতি সুব্রত দাশ, স্থপতি রবিন দে ও স্থপতি মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।
তারা জানায়, মিউনিসিপ্যাল গভর্নমেন্ট সার্ভিস প্রজেক্ট–এমজিএসপি প্রকল্পের আওতায় সিলেট সিটি করপোরেশন সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল আধুনিকায়নের কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে। প্রায় ৮ একর জমির ওপর এই টার্মিনাল নির্মাণ কাজে ব্যয় ধরা হয় ১১৭ কোটি টাকা। এরমধ্যে ডাম্পিং গ্রাউন্ডের জন্য ৫৬ কোটি টাকা এবং টার্মিনালের অবকাঠামোগত উন্নয়নে ৬১ কোটি টাকা। নির্মাণসামগ্রীর দাম বাড়ায় টার্মিনাল ভবনের ব্যয় অনেকটা বেড়ে যায়।
ছয়তলা ভিত্তির তিনতলা কমপ্লেক্সটি তিনটি অংশে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম অংশের ‘বহির্গমন ভবন’র দৈর্ঘ্য সাড়ে ৩০০ ফুট। এই অংশে ৪৮টি বাস একসঙ্গে থাকতে পারবে। এ ছাড়া যাত্রীদের বসার জন্য রয়েছে ৯৭০ আসনের বিশাল হল। রয়েছে ৩০ আসনের ভিআইপি কক্ষ, ৩০টি টিকিট কাউন্টার ও নামাজের জন্য আলাদা কক্ষ।
রয়েছে পুরুষ, নারী ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের ব্যবহার উপযোগী ছয়টি টয়লেট। প্রয়োজনে হুইল চেয়ার নিয়েও টয়লেট ব্যবহার করা যাবে। উপরে উঠার জন্য রয়েছে লিফট এবং খাবারের জন্য রেস্টুরেন্ট ও ফুড কোর্ট। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যাওয়া যাত্রীর জন্য আলাদা শয্যা ও ব্রেস্ট ফিডিং জোন রয়েছে।
দ্বিতীয় অংশে ‘আগমনী ভবন’ প্রায় ৩০০ ফুট দৈর্ঘ্যের। এখানে রয়েছে বাস বে, ৫১০ আসনের বসার স্থান ও ৩০ আসনের ভিআইপি কক্ষ, আধুনিক টয়লেট সুবিধা, ব্রেস্ট ফিডিং জোন, লিফট, রেস্টুরেন্টসহ অন্যান্য সুবিধা। ‘আগমন ভবন’ ও ‘বহির্গমন ভবন’ আলাদা করা হলেও করিডোরের মাধ্যমে পুরো স্থাপনাকে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এই ভবনের পশ্চিম-দক্ষিণ কোণে সড়কের সঙ্গে গোলাকার পাঁচতলা টাওয়ার ভবনে রয়েছে টার্মিনাল পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা কার্যালয়। যেখানে থাকবে পুরো টার্মিনালের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ ও সিসিটিভি মনিটরিং কক্ষ, পুলিশ কক্ষ ও পর্যটন কার্যালয়।
টার্মিনালের পেছনের দিকে তৃতীয় অংশে নির্মিত হয়েছে একটি মাল্টিপারপাস ওয়েলফেয়ার সেন্টার। যেখানে মালিক ও চালক সমিতির জন্য আছে ২৪ বেডের বিশ্রামকক্ষ, ক্যান্টিন, সভা অনুষ্ঠানের জন্য মাল্টিপারপাস মিলনায়তন। যানবাহনের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ওয়ার্কশপ স্থাপন করা হয়েছে।