বিয়ানীবাজারে পেশাদার ভিক্ষুকদের ভিক্ষাবৃত্তিতে মানা!
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৮:৪২:৩৩ অপরাহ্ন
তোফায়েল আহমদ, বিয়ানীবাজার: বিয়ানীবাজারে বহিরাগত পেশাদার ভিক্ষুকদের নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে ছিলো সাধারণ মানুষের ক্ষোভ। প্রতিনিয়ত মার্কেটে রাস্তাঘাটে শিশু থেকে বৃদ্ধ অনেক বহিরাগত মানুষ দরিদ্রতার বেশে করতো ভিক্ষা, মার্কেটে আসা মানুষদের কাপড় ধরে টানাটানি নিয়েও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। এবার এ ব্যাপারে এগিয়ে এসেছে বিয়ানীবাজার পৌরসভা ও বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদ। পৌরশহরের বাসিন্দা ছাড়া পৌর শহরে এবার আর ভিক্ষা করতে পারবেন না বহিরাগতরা, কাউকে পেলে দেয়া হবে শাস্তি।সোমবার পৌরসভার পক্ষ থেকে পুরো শহরে মাইকিং করে জানানো হয়েছে বিয়ানীবাজার পৌরশহর এবং পৌরসভার ভিতরে কেউ ভিক্ষা করতে পারবে না। প্রতি বৃহস্পতিবার পৌরসভার স্থায়ী প্রকৃত ভিক্ষুক পৌরসভার ভিতরে ভিক্ষা করার সুযোগ পাবেন। কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তের খবরে বেশ খুশি স্থানীয় সাধারণ মানুষ। তাদের অভিযোগ ভিক্ষুকদের জ্বালায় অতিষ্ঠ তারা। এই সিদ্ধান্তকে কার্যকর করার অনুরোধ করেন তারা।
বিয়ানীবাজারে টেলিকম ব্যবসায়ী সাদেক হোসেন বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দীর্ঘদিন থেকে আমরা পেশাদার এসব ভিক্ষুকদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে দাবী জানিয়েছিলাম, পৌরসভার এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানান তিনি।জামান প্লাজার ব্যবসায়ী সাইবুল রেজা বলেন, পেশাদার ভিক্ষুকদের আচরনে বিব্রত হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ৩ বছরের শিশু থেকে ৯০ বছরের প্রচুর পেশাদার ভিক্ষুক অবস্থান করেন গেটে। পথচারি আসলেই টার্গেট করেন পিছু, যতক্ষণ ভিক্ষা না পান ছাড়েন না পিছু।বিয়ানীবাজার সমাজসেবা অফিসের হিসেব মতে, উপজেলায় ভিক্ষুকের সংখ্যা হাজার অতিক্রম করবে না। পৌরসভায় স্থায়ী ভিক্ষুকের সংখ্যা খুবই কম। তবে বিয়ানীবাজার পৌরসভাসহ পুরো উপজেলায় যারা ভিক্ষা করেন তাদের বেশীরভাগই বহিরাগত। স্থায়ী ভিক্ষুকদের পুনবার্সন করতে কাজ করছে বিয়ানীবাজার সমাজ সেবা অফিস।
পৌর মেয়র ফারুকুল হক জানান, বিয়ানীবাজারের বেশীরভাগ মানুষ দেশের বাইরে থাকার কারণে অনেক বাড়ি ফাঁকা থাকে। সেই সুযোগে এসব ভিক্ষুকরা এসব বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটায়। বহিরাগত এবং পেশাগত ভিক্ষুকদের বিদায় করতে এমন সিদ্ধান্ত বলে জানান তিনি। তিনি আরও জানান, মাইকিং করার পরও যদি এখন থেকে কোন ভিক্ষুক পৌরশহর বা পৌরসভার মধ্যে ভিক্ষা করেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। স্থায়ী কোন ভিক্ষুক থাকলে তাদের পুনবার্সন করা হবে। তবে ভিক্ষা করতে দেয়া যাবে না। তিনি জানান, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। সরকার চাচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশে কোন ভিক্ষুক থাকবে না।
উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব বলেন, বিয়ানীবাজারে স্থায়ী ভিক্ষুকের সংখ্যা খুব কম। বেশীর ভাগ ভিক্ষুকের বাড়ি সিলেটের বাইরে বিভিন্ন জেলায়। এসব ভিক্ষুকরা ভিক্ষাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছে। কেউ টাকা না দিলে অনেক সময় অনেককে হেনস্তা করে, খারাপ আচরন করে। আমরা ভিক্ষুকদের বিভিন্নভাবে পুনবার্সন করছি। স্থায়ী কোন ভিক্ষুক থাকলে তাদেরকে সমাজ সেবা অফিসের মাধ্যমে পুনবার্সন করা হবে।