চীন-রুশ প্রেসিডেন্ট ছাড়াই ভারতে জি-২০ সম্মেলন শুরু
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৯:২২:৪০ অপরাহ্ন
বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলায় শেখ হাসিনার ৪ প্রস্তাব
জালালাবাদ রিপোর্ট:ভারতের নয়াদিল্লিতে বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশের প্রতিনিধিত্বকারী জোট জি২০-এর দুদিনব্যাপী শীর্ষ সম্মেলন শুরু হয়েছে শনিবার। তবে দুই ক্ষমতাধর দেশ চীন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট না থাকায় এ সম্মেলনের সাফল্য নিয়ে নিরাশার কথা শুনিয়েছেন বিশ্লেষকরা।তবে শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে রাজধানী নয়াদিল্লিকে সাজিয়ে তুলতে কার্পণ্য করেনি ভারত। সাজসজ্জায় চার হাজার ১০০ কোটি টাকা ব্যয় করেছে ভারত সরকার।রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের কার্যালয় জানিয়েছে, ব্যস্ততার কারণে থাকতে পারছেন না তিনি। কিন্তু ধারণা করা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় গ্রেপ্তার এড়াতে জি২০ সম্মেলন এড়িয়ে গেছেন পুতিন। ইউক্রেন যুদ্ধের যুদ্ধাপরাধ সংগঠিতের অভিযোগে পুতিনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতের পরোয়ানা জারি রয়েছে।
অন্যদিকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং রাষ্ট্রপ্রধান হওয়ার পর থেকে কোনো জি২০ সম্মেলনে অনুপস্থিত থাকেননি। শি জিনপিংয়ের না থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আর ভারত এটিকে অবজ্ঞা হিসেবেই দেখছে।চীন ও রাশিয়া এরই মধ্যে বিশ্ব রাজনীতিতে একে অপরের শক্তিশালী মিত্র হিসেবে কাজ করছে। শুধু রাজনীতি নয়, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়ার ওপর কড়া কড়া সব পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা জারির ফলে গত বছর দুটি দেশের মধ্যকার বাণিজ্য বেড়ে গেছে ৩০ শতাংশ।এবার ‘এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ’, এই মূল প্রতিপাদ্য নিয়ে শীর্ষ সম্মেলন হচ্ছে। জি২০-এর ১৯টি দেশ আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, জাপান, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র, মেক্সিকো, রাশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। জি২০ সদস্যরা বিশ্বব্যাপী জিডিপির প্রায় ৮৫ শতাংশ, বিশ্ববাণিজ্যের ৭৫ শতাংশের বেশি।
ভারতের জি২০ সভাপতিত্ব ২০২২ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয়েছিল। দেশটির মেয়াদকালীন বাংলাদেশসহ সদস্য নয় এমন ৯টি দেশকে জি২০ সম্মেলনে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানায় ভারত। দেশগুলো হলো– বাংলাদেশ, মিসর, মরিশাস, নেদারল্যান্ডস, নাইজেরিয়া, ওমান, সিঙ্গাপুর, স্পেন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে বিশ্বব্যাপী সংহতি জোরদার করার ও বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় সমন্বিতভাবে প্রচেষ্টা গ্রহণের ওপর জোর দিয়েছেন। শনিবার শীর্ষ সম্মেলনে তার চার দফা সুপারিশে এই আহ্বান জানান তিনি।তিনি শীর্ষ সম্মেলনে ‘ওয়ান আর্থ’ অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার সময় তার সুপারিশের প্রথম পয়েন্টে বলেছেন, ‘এখানে জি-২০ এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে ও বাংলাদেশ সংকট মোকাবিলায় কার্যকর সুপারিশ তৈরি করতে তাদের প্রচেষ্টাকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে।শেখ হাসিনা দ্বিতীয় পয়েন্টে বলেন, মানবতার বৃহত্তর স্বার্থে এবং সারাবিশ্বে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য বিশ্বব্যাপী সাহসী, দৃঢ় এবং সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি বলেন, বৈশ্বিক উন্নয়নের জন্য প্রধান অর্থনীতির দেশগুলোকে তাদের যথাযথ দায়িত্ব পালন করা উচিত।তৃতীয়ত, ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের ত্রয়ীকার সদস্য হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ুজনিত অভিবাসন মোকাবিলায় অতিরিক্ত অর্থায়নের ব্যবস্থা করার জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ক্ষতি এবং ক্ষয়ক্ষতি তহবিল চালু করার জন্য আমি সবাইকে অনুরোধ জানাচ্ছি।চতুর্থ দফায় শেখ হাসিনা বলেন, আসন্ন কপ-২৮ এ, আমি সবাইকে জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে ক্ষতি এবং ক্ষতির জন্য তহবিল বাস্তবায়নের ওপর জোর দেওয়ার জন্য অনুরোধ করব।ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রগতি ময়দানের ভারত মান্দাপান কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।