জীবাশ্ম জ্বালানিমুক্ত জলবায়ু ন্যায্যতার দাবীতে সাইকেল র্যালী
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৬:৩৭:৩৩ অপরাহ্ন
জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধ এবং জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে সিলেটে শুক্রবার সাইকেল র্যালীর আয়োজন করে পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠন। সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সকাল সাড়ে ৮টায় এই কর্মসুচীর আনুষ্ঠানিক উদবোধন ঘোষণা করেন সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড জহিরুল হক। ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, ব্রতি, সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার, প্রাধিকার ও গ্রীণ এক্সপ্লোর সোসাইটির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই সাইকেল র্যালীতে প্রায় শতাধিক তরুণ জলবায়ু কর্মী অংশগ্রহণ করেন।
সাইকেল র্যালীর উদ্বোধনকালে আয়োজন করা হয় সমাবেশ। সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার ও বাপা সিলেট-এর সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম-এর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড জহিরুল হক, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট শাখার সভাপতি ও শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক রেজিষ্টার জামিল আহমেদ চৌধুরী, মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির ল’ এন্ড জাস্টিস বিভাগের প্রধান এসোসিয়েট প্রফেসর গাজী সাইফুল হাসান, প্রাধিকারের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি, গ্রীণ এক্সপ্লোর সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফ, সিলেট সাইক্লিং ক্লাবের ইভেন্ট কো-অর্ডিনেটর রেজওয়ান আহমেদ সামি।জীবাশ্ম জ্বালানিমুক্ত জলবায়ু ন্যায্যতার দাবীতে সিলেটে সাইকেল র্যালী আয়োজনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে পাঁচ সংগঠনের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রাধিকারের সভাপতি ও তরুণ জলবায়ু কর্মী মোঃ মাহাদী হাসান।লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আগামী সেপ্টেম্বরের ১৮ থেকে ২৬ তারিখ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশন ও ২০ তারিখ ইউএনএসডিজি ক্লাইমেট অ্যাম্বিশন সামিট অনুষ্ঠিত হবে। জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতিনিধিত্বের ফলে যে কোন আন্তরাষ্ট্রীয় বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশন অন্যতম বৈশ্বিক প্লাটফর্ম। এছাড়াও, গত বছর জাতিসংঘ মহাসচিবের ঘোষিত ইউএনএসডিজি ক্লাইমেট অ্যাম্বিশন সামিট’২৩ জলবায়ু নীতি নির্ধারণে বেশ কিছু প্রয়োজনীয় সংস্কার নিয়ে আসতে পারে। তবে, এ সকল সামিটে ধনী ও শিল্পোন্নত দেশগুলোর অবস্থান জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করে।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশসমূহের দাবি সত্ত্বেও ২০২৩ সালের কপ-২৭ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা পর্যায়ক্রমে জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভর জ্বালানি ব্যবস্থা হতে বেরিয়ে আসতে একমত হতে ব্যর্থ হয়। পূর্বে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে চাইলেও অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক স্বার্থ রক্ষায় বহু দেশের বিরোধিতায় সে সকল উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। বিশেষ করে ধনী দেশগুলোর বিরোধীতার ফলে এসসকল পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সংস্থাগুলো কার্যকরী কোন পদক্ষেপ নিতে পারে নি।
জলবায়ু পরিবর্তনে দায়ি দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন গ্যাসক্ষেত্র তৈরীর ঘোষণা, এশিয়ার এলএনজি বাজারে আধিপত্য জোরদারে জাপানের আগ্রাসী কার্যক্রম, চীন ও কোরিয়া কর্তৃক নৌবহরের সক্ষমতা বৃদ্ধি কিংবা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার প্রচেষ্টা হিসাবে ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার কয়লা ভিত্তিক জ্বালানি ব্যবহার চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা এসকল কিছুই জলাবয়ু পরিবর্তনরোধে তাদের চরম উদাসিনতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সভাপতির বক্তব্যে আব্দুল করিম কিম জানান, আসন্ন জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশন ও ইউএনএসডিজি ক্লাইমেট অ্যাম্বিশন সামিটে কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণে করতে গণমাধ্যম, বিভিন্ন সংগঠন ও সাধারণ মানুষকে জলবায়ু পরিবর্তন, জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার বন্ধের ব্যাপারে অবগত করা, জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার রোধের ব্যাপারে জোরালো আহ্বান, দাবির বিষয়টিকে বৃহৎ পরিসরে ছড়িয়ে দেয়া এবং জীবাশ্ম জ্বালানি বিরোধী জলবায়ু ন্যায্যতার দাবীতে জনমত তৈরির উদ্দেশ্যে বিশ্বব্যাপী আয়োজনের অংশ হিসাবে ঢাকাসহ সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে দিনব্যাপী অসংখ্য কর্মসুচী পালন করা হচ্ছে। বিজ্ঞপ্তি