কমলগঞ্জের হাটবাজারে অবৈধ চিনির ছড়াছড়ি
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৭:৪৭:০৪ অপরাহ্ন
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের সীমান্তবর্তী কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগরসহ বিভিন্ন হাটবাজারে প্রতিনিয়ত মিলছে চোরাই পথে আসা ভারতীয় চিনি। এতে স্থানীয় চোরাকারবারী রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে উঠছে। ফলে মারাত্মকভাবে ঠকছেন ভোক্তারা। সীমান্ত এলাকা থেকে প্রতিদিন ট্রাক ও পিকআপ ভর্তি চিনি আসার কারণে সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব।সম্প্রতি এ সংক্রান্ত সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ায় গত মাসে শমশেরনগর বাজারে অবৈধ চিনি বোঝাই একটি ট্রাক আটক করে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ি। এরপর কয়েকদিন চিনি আমদানি স্থিমিত হয়ে পড়ে। তবে কিছুদিন যেতে না যেতেই ফের হাটবাজারে অবাধে ভারতীয় চিনির রমরমা ব্যবসা শুরু হয়েছে
।
স্থানীয়রা জানান, কুলাউড়ার ফুলতলা, চাতলাপুরসহ সীমান্তের কয়েকটি স্থান দিয়ে প্রতিদিন আনা হচ্ছে ভারতীয় চিনি। সাধারণত ভোর রাতে অবৈধ চিনি আনা হয়। শমশেরনগরের স্থানীয় এক চোরাকাবারীসহ কমলগঞ্জ ও কুলাউড়ার প্রভাবশালী মহল অবৈধ চিনি ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত। সীমান্ত অতিক্রম করেই তারা ভারতীয় বস্তা পরিবর্তন করে দেশীয় বস্তা দিয়ে চিনি পরিবহন করে। ফলে প্রশাসন ইচ্ছে করলেও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছে না। সীমান্ত এলাকার নিরীহ সাধারণ লোকদের দৈনিক ভিত্তিতে মজুরি প্রদান করে এই ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বর্তমানে ভারতে প্রতি কেজি চিনির দাম ৪৪ রুপি। ৫০ কেজি বস্তার দাম ২ হাজার ২০০ রুপি। দেশের বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকায়। মোদি দোকানীরাও অবৈধ চিনি কিনে দেশীয় চিনির তুলনায় লাভবান হচ্ছেন। তবে ভোক্তারা ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা দরে এই চিনি কিনছেন।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শমশেরনগর বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় চিনি কিনে বিক্রি করছি। শমশেরনগর ভেতর বাজারের এক ব্যবসায়ীর দোকান থেকে তুলনামূলক কম দামে ভারতীয় চিনি পাওয়া যাচ্ছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে চিনি সরবরাহ করে ব্যাপক মুনাফা লাভ করছেন। এতে সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে বলে তারা দাবি করেন।
তবে অভিযোগ বিষয়ে ব্যবসায়ী আব্দুস সামাদ সামাইল বলেন, আমি কখনো ভারতীয় চিনি ক্রয় বিক্রয় করি না।পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের একটি সূত্র জানায়, কিছুদিন আগে মৌলভীবাজারে ১৬০ বস্তা চিনিসহ ট্রাক র্যাবের গোয়েন্দা আটক করে। পরে উচ্চ মহল থেকে ফোন আসার কারণে ছেড়ে দিতে হয়েছে। দেশীয় চিনির দাম অধিক থাকায় আর তুলনামূলক ভারতীয় চিনির দাম কম থাকায় চোরাকারবারীরা কৌশলে অবৈধ চিনি কিনে আনছে।এ ব্যাপারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের সহকারী পরিচালক মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, আসলে এই বিষয়টি পুলিশ দেখলে ভালো হয়। সেখানে মামলার বিষয়ও সম্পৃক্ত। তারপরও অভিযানে আসলে তা খতিয়ে দেখা হবে।এ বিষয়ে কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, বিষয়টি আমাদের নলেজে রয়েছে এবং আমরা লোক লাগিয়ে রেখেছি। এব্যাপারে কোন ছাড় নয়। যেখানেই পাওয়া যাবে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।