শান্তিগঞ্জে শিশু বিক্রির অভিযোগে গ্রেফতার ৪
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৫:৩৫:৫১ অপরাহ্ন
শান্তিগঞ্জ সংবাদদাতা: সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে শিশু বিক্রির অভিযোগে নারী-পুরুষসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। প্রায় মাসখানেক আগে আড়াই বছর বয়সী শিশুপুত্র মকবুল হাসানকে তার পিতা এক লক্ষ টাকায় বিক্রির অভিযোগে তাদেরকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মঙ্গলবার দুপুরে গ্রেফতারকৃতদের মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে গ্রেফতার দেখিয়ে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।শান্তিগঞ্জ থানায় ভিকটিমের মা মাফিয়া বেগমের অভিযোগের ভিত্তিতে সুনামগঞ্জের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (জগন্নাথপুর সার্কেল) শুভাশীষ ধরের দিক নির্দেশনায় ও শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সার্বিক সহযোগিতায় তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশের উপ-পুলিশ পরিদর্শক মোহন রায়ের নেতৃত্বে সঙ্গীয় অফিসার ফোর্সের সহায়তায় সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক, জগন্নাথপুর, জামালগঞ্জ ও ঢাকার নরসিংদী থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে আটক করেন এবং ভিকটিমকে উদ্ধার করে থানায় নিসে আসেন।
গ্রেফতারকৃত অভিযুক্তরা হলো, ভিকটিমের পিতা সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ থানা এলাকার মল্লিকপুর গ্রামের সাবা উদ্দিনের ছেলে সালে নুর (৩০), একই জেলার শান্তিগঞ্জ থানা এলাকার বাবনিয়া গ্রামের মৃত আশক আলীর ছেলে মনফর আলী (৪৫), জগন্নাথপুর থানা এলাকার কাজিরগাঁও গ্রামের মৃত দারিছ মিয়ার ছেলে রমাই মিয়া (৫৫) ও নরসিংদী থানা এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা ও সুনামগঞ্জ সদর থানা এলাকার ভাড়াটিয়া খেজাউরা হাছন নগর এলাকার মৃত রফিক আলমের মেয়ে লাকি আক্তার (৩৮)।
পুলিশ ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মাফিয়া বেগম ও তার স্বামী অভিযুক্ত সালে নুরের মধ্যে পারিবারিক দ্বন্দ্বে মাফিয়া বেগমকে তার দুই শিশুপুত্রসহ পিত্রালয় শান্তিগঞ্জ থানা এলাকার বাবনিয়া গ্রামে পাঠিয়ে দেয়। গত এক মাস পূর্বে অভিযুক্ত সালে নুর তার শ্বশুরালয় বাবনিয়া গ্রামে আসে এবং স্ত্রী ও পুত্রদেরকে নিয়ে যায়। মাফিয়া বেগম তার স্বামীর সাথে মনোমালিন্যতা থাকার কারণে পিত্রালয়ে অবস্থান করেন। অভিযুক্ত সালে নুর তার বৃদ্ধ মার অসুস্থতার কথা বলে তার দুই ছেলেকে সাথে নিয়ে যায়। কিছুদিন পর সালে নুর তার বাবনিয়া গ্রামে তার শ্বশুরালয়ে ফিরে আসে। তখন স্বামী অভিযুক্ত সালে নুরকে মাফিয়া বেগম তার দুই ছেলের কথা জিজ্ঞেস করেন। তখন সালে নূর জানায়, তার দুই ছেলে নিজ গ্রামের বাড়িতে আছে। মাফিয়া বেগম তার ছেলেদের দেখার জন্য সেখান থেকে নিয়ে আসার জন্য বলেন। তখন সালে নূর জানান, তার ছেলেরা তার দাদীর সাথে ঢাকা শহরে আছে। মাফিয়া বেগম তার শাশুড়ির সাথে কথা বলে জানতে পারেন, তার বড় ছেলে রাব্বি হাসান তাঁর কাছে আছে। তখন মাফিয়া বেগম সালে নূরকে তার ছোট ছেলে মাকবুল হাসানের কথা জিজ্ঞেস করলে সে তালবাহানা করে। তার কথাবার্তায় মাফিয়া বেগমের সন্দেহ হলে তার আত্মীয় স্বজনকে সাথে নিয়ে তাকে বার বার ছেলের কথা জিজ্ঞেস করেন। একপর্যায়ে ভিকটিমের পিতা সালে নুর জানায়, অভিযুক্ত মনফর আলী ও রমাই মিয়ার সহায়তায় অপর অভিযুক্ত লাকী আক্তারের নিকট এক লক্ষ টাকার বিনিময়ে তার শিশুপুত্র ভিকটিম মকবুল হাসানকে বিক্রয় করে বলে স্বীকার করে।
শান্তিগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. খালেদ চৌধুরী বলেন, শিশু বিক্রির অভিযোগের ঘটনায় ভিকটিমের মা মাফিয়া বেগম থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।