শান্তিগঞ্জে আস্তমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৭:১৩:৫৬ অপরাহ্ন
শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের আস্তমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রয়োজনের তুলনায় অর্ধেক শ্রেণিকক্ষ নিয়ে পাঠদান চলছে। শ্রেণিকক্ষের অভাবে লেখাপড়ায় ব্যাঘাত হচ্ছে, জরাজীর্ণ পুরাতন ভবনে নেওয়া হচ্ছে ক্লাস। পাশাপাশি ভাঙা জরাজীর্ণ ভবনটিতে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষ হিসেবে ব্যবহার করছেন শিক্ষকরা। বৃষ্টি এলে অফিসের সেই কক্ষে বসা যায় না। কাগজপত্র বৃষ্টির পানিতে ভিজে যায়। জরাজীর্ণ ভবনের ওপরের টিন একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। বৃষ্টি এলে অফিসেই ছাতা টানিয়ে বসতে হয়। কক্ষের অনেক জায়গায় বালতি ও বিভিন্ন প্রকারের বাটি দিয়ে টিনের চালা থেকে পড়া পানি আটকানোর চেষ্টা চলে।
অন্যদিকে বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র কাম শ্রেণিকক্ষের ভবনের ওপরের তলায় পাঠদান করার কথা থাকলেও কক্ষ সংকটের কারণে এ ভবনের নিচতলা সংস্কার করে সেখানেও আরও দুটি শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ করা হয়েছে। এ দুই কক্ষও আবার বর্ষা মৌসুমে বন্যা এলেই পানিতে তলিয়ে যায়।প্রায় আড়াই হাজার জনসংখ্যার এ আস্তমা গ্রামের প্রাথমিক শিক্ষার একমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘আস্তমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৯৫১ সালে গ্রামের লোকজন বিদ্যালয়টি স্থাপন করেন। সময়ের প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠানটিতে আরও একটি নতুন ভবন প্রয়োজন। নতুন ভবন ও স্কুলের অবকাঠামো ভালো না থাকায় গ্রামের সচ্ছল অনেক পরিবারের শিশুরা বিভিন্ন কিন্ডারগার্টেনে পড়াশোনা করছে। বর্তমানে আস্তমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে ২৭৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ে দুটি ভবন আছে। একটি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র কাম শ্রেণিকক্ষ, আরেকটি পুরাতন জরাজীর্ণ ভবন। বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র কাম শ্রেণিকক্ষের নিচতলা আগে ফাঁকা ছিল। দুই থেকে তিন বছর আগে ফাঁকা অংশের চারপাশে দেয়াল দিয়ে আরও দুটি শ্রেণিকক্ষ বানানো হয়। এ ভবনের উপরতলায় আগে ছিল দুটি শ্রেণিকক্ষ। এখন নিচতলার ফাঁকা অংশ সংস্কার করায় আরও দুটি কক্ষ হয়েছে। এ ৪ কক্ষ ব্যবহার হয় শ্রেণিকক্ষ হিসেবে। এর একটিতে প্রাক-প্রাথমিক (শিশু শ্রেণি) শিক্ষার্থীদের জন্য, আর বাকি তিন কক্ষে প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান করান শিক্ষকরা।
তবে অফিস কক্ষের জায়গা না হওয়ায় পুরাতন জরাজীর্ণ ভবনের একটি কক্ষে শিক্ষকরা অফিস হিসেবে ব্যবহার করছেন। অন্যদিকে শ্রেণিকক্ষে ২৭৫ শিক্ষার্থী সংকুলান না হওয়ায় পুরাতন ভবনের আরও একটি কক্ষে শিশুদের পাঠদান করানো হচ্ছে।অফিস কক্ষে গিয়ে দেখা যায়, আসবাবপত্রের মধ্যে বৃষ্টির পানির ছাপ পড়ে আছে। উপরের চালার একটি টিনও ভালো নেই। সবগুলোই মরিচা পড়ে ছিদ্র হয়ে গেছে। চালা দিয়ে বৃষ্টি এলেই পানি পড়ে। তাই বৃষ্টির পানি আটকাতে ভেতর থেকে উপরের অংশে ছামিয়ানা টানানো হয়েছে। এর সঙ্গে ব্যবহার হয় বালতি ও বিভিন্ন প্রকারের বাটি।বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সজীব চন্দ্র দাস বলেন, আমরা জরাজীর্ণ ভবনে অফিস করে বাচ্চাদের পাঠদান করছি। তারপরও শিক্ষার্থী সংকুলান না হওয়ায় জরাজীর্ণ পুরাতন ভবনেও একটি কক্ষে ক্লাস করাচ্ছি। বৃষ্টি এলেই আর সেই ভবনে থাকা যায় না। অফিসে বসলে ছাতা টানিয়েই বসতে হয়। বিদ্যালয়ে আরও একটি নতুন ভবন প্রয়োজন।
প্রধান শিক্ষক বিপুল চক্রবর্তী বলেন, সরকারের কাছে দাবি, এই বিদ্যালয়ে যেন একটি নতুন ভবন নির্মাণ করে দেওয়া হয়।বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নাছিমা আক্তার বলেন, বিদ্যালয়টিতে ভবন সংকট থাকায় অনেক কষ্ট করে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে হয়। শিক্ষকরাও ভাঙাচোরা ভবনে বসেন। বিদ্যালয়টিতে জরুরি ভিত্তিতে আরও একটি ভবন প্রয়োজন।শান্তিগঞ্জ উপজেলা প্রথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম খাঁন বলেন, এ বিদ্যালয়ে আরেকটি ভবন নির্মাণের জন্য অগ্রাধিকার তালিকায় দেওয়া আছে। এটি প্রক্রিয়াধীন। আশা করছি, শিগগিরই নতুন ভবন স্থাপন করা যাবে।