সিলেটে স্ত্রী-সন্তান হত্যায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৭:১৫:২১ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটে স্ত্রী ও দুই সন্তান হত্যা মামলায় হাসান মুন্সি ওরফে কামরুল হাসান (৪৪) নামে এক আসামীর মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর আদালতের বিচারক নুরে আলম ভুঁইয়া এ রায় দেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আদালতের অ্যাডিশনাল পিপি অ্যাডভোকেট জুবায়ের বখত।
দণ্ডপ্রাপ্ত হাসান মুন্সি গোপালগঞ্জ জেলার মাকসুদপুর খালপার কমলাপুরের নজরুল মুন্সির ছেলে। তিনি হত্যাকাণ্ডের আগে স্ত্রী সন্তান নিয়ে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার ঝালোপাড়া খেয়াঘাট গলির প্রবাসী কামালের কলোনির ৫ নম্বর বাসায় ভাড়া থাকতেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই সকালে নগরের দক্ষিণ সুরমা ঝালোপাড়া খেয়াঘাট গলির প্রবাসী কামালের মালিকানা সেমিপাকা ঘরের বাথরুম থেকে গৃহবধূ জনি আক্তার জয়নব ওরফে শিউলি (৩৫), তার সন্তান মিম (১৫) ও তাহসিন (১৩) এর গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহত শিউলির চাচাতো ভাই নগরের কালিবাড়ি এলাকার বাসিন্দা বাদশা মিয়া বাদী হয়ে হাসান মুন্সিসহ অজ্ঞাত পাঁচজনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ঘটনার ১৬ বছর আগে জনি আক্তারের সঙ্গে হাসান মুন্সির বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তারা সিলেটের দক্ষিণ সুরমার ঝালোপাড়া এলাকায় বসবাস করতেন। তাদের প্রথম সন্তান হওয়ার পর শিউলিকে নিয়ে হাসান মুন্সি গ্রামে চলে যান। পরে ঢাকায় একটি গার্মেন্টসে ২ বছর ধরে কাজ করেন তিনি। এরই মধ্যে তাদের আরেকটি সন্তানের জন্ম হয়। ঘটনার অনুমান ১৫ দিন আগে হাসান স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সিলেটে চাচাতো ভাই মামলার বাদীর বাসায় ওঠেন। বাসায় দুইদিন থাকার পর ঝালোপাড়ার একটি কলোনিতে বাসা ভাড়া নিয়ে তারা বসবাস শুরু করেন।
২০১৮ সালের ৩০ জুলাই সন্ধ্যার পর বাদী জানতে পারেন হাসান মুন্সি তার চাচাতো বোন ও ভাগ্নিদের ওই বছরের ২৬-২৮ জুলাইয়ে কোনো একদিনে শ্বাসরুদ্ধ করেন এবং বাসায় বাইরে থেকে তালা মেরে পালিয়ে যান। ৩০ জুলাই সকালে দুর্গন্ধ ছড়ালে ঘরের দরজা ভেঙে বাথরুম থেকে গলিত অবস্থায় তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
মামলাটি প্রথমে তদন্ত করেন এসএমপির দক্ষিণ সুরমা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) লোকমান আহমদ। পরবর্তীতে পিবিআইয়ের পরিদর্শক কামরুজ্জামান তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ৫ ফেব্রæয়ারি হাসান মুন্সিকে একমাত্র অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলাটি বিচারের জন্য অত্র আদালতে পাঠানো হলে আসামীর বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের পর ১২ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত হাসান মুন্সিকে মৃত্যুদÐ দেন।