আজ ১২ রবিউল আউয়াল : নবী আদর্শে শপথ নেয়ার দিন
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:৩৫:৫১ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : বছর পরিক্রমায় আবার আমাদের সামনে হাজির হলো বিশ্বমানবতার মুক্তিদিশারী মহানবী হজরত মুহাম্মদ সা. এর জন্ম ও মৃত্যু দিবস। মানুষের জন্য একমাত্র আদর্শ হলেন বিশ্বনবী মুহাম্মদ সা.। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কুরআনুল কারীমের মধ্যে এই কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন।
নবী সা. নিজেও বলেছেন, তোমাদের মধ্যে আমি শিক্ষক হিসেবে এসেছি। তার আদর্শ ছাড়া মুসলমান অন্য কোনো আদর্শ গ্রহণ করতে পারবে না। অন্য কোনো আদর্শ গ্রহণ করে সফল হতে পারবেনা। শিশুকাল থেকে নিয়ে পরিপূর্ণ জীবন। ব্যক্তি জীবন থেকে নিয়ে পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় কিংবা আন্তর্জাতিক প্রতিটি পর্যায়ে তিনি আদর্শ। তাঁর অনুসরণের মধ্যে যে কেবল মুসলমানের জন্যই সফলতা তা নয় বরং দুনিয়াবী জীবনে যেকোনো মানুষ তার অনুসরণ করবে সেই সফলতা লাভ করতে পারবে। আর তাই ১২ রবিউল আউয়াল কেবল মুসলমান নয় বিশ্ব মানবতার জন্য একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন।
এই দিবসটিতে মুসলমানরা মহানবী সা. এর জীবনের শিক্ষা-আদর্শ অনুযায়ী নিজেদের গড়ে তোলার নতুন প্রেরণা লাভ করে। বিশেষ করে মহানবীর আবির্ভাবের আগ মুহূর্তের অন্ধকার যুগ, যে সময় মানব সমাজ চরম এক নিষ্ঠুর পাশবিক অবস্থার যাঁতাকলে নিষ্পেষিত হচ্ছিল। নবীজীর আদর্শের অনুসরণে তখনকার মানুষ কিভাবে মুক্তি পেয়েছিলেন, এদিনে গোটা মুসলিম উম্মাহ সেই অবস্থার কথা স্মরণ করে এবং চলমান অবস্থায়ও ঐ সকল অশান্তির কার্যকারণ থেকে নিজ দেশ ও সমাজকে রক্ষায় দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করতে পারে। নিজেদের ব্যক্তিজীবন, পারিবারিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক জীবনের সকল অশান্তির কার্যকারণসমূহ দূর করে মহানবী সা. ও ইসলামের জন্য তাঁর নিবেদিতপ্রাণ সাহাবীদের জীবনের শিক্ষা-আদর্শের অনুসরণের জন্য নতুন করে শপথ গ্রহণ করে। গত দেড় হাজার বছর ধরে মুসলিম উম্মাহ শত প্রতিকূলতার মাঝেও এভাবেই ইসলামকে ধরে রেখেছে।
মহানবী স. বলেছেন তোমরা যতক্ষণ কুরআন সুন্নাহর পূর্ণ অনুসারী থাকবে, কখনও বিপথগামী হবে না। বলাবাহুল্য, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মুসলিম-অমুসলিম সকল সমাজেই বিশেষ করে মুসলিমপ্রধান সমাজে আজ যেসব সমস্যা ও অশান্তি বিদ্যমান তার একমাত্র কারণ হচ্ছে ইসলামের ওপর মুসলমানদের খন্ডিত আমল। ইসলাম সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণার ফলে নিজেকে মুসলিম বলে দাবি করলেও বহু মুসলিম নেতৃত্ব জ্ঞাত-অজ্ঞাতসারে ইসলামের ক্ষতি করে যাচ্ছে আর তাদের নেতৃত্বাধীন শোষণমুক্ত, অপরাধমুক্ত কোনো ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রও প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে না। আর এই অবস্থার সঙ্গে পাশ্চাত্যের বস্তুবাদী জীবনবোধকেন্দ্রিক ভোগবাদী শাসন, শিক্ষা, সংস্কৃতি, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার প্রভাবতো আছেই।
ফলে আমাদের অনেকেই ইসলামের ওপর খন্ডিতভাবে আমলের দ্বারাই ইসলাম ও নবী জীবনের আদর্শের ওপর পূর্ণ আমল হয়ে যায় ধরে নিয়ে বসে আছেন। বর্তমান জাতীয় ও বিশ্ব পরিস্থিতিতে বস্তুবাদী জীবনব্যবস্থা এবং এই দৃষ্টিভঙ্গির অবশ্যম্ভাবী পরিণতি ও ব্যর্থতা লক্ষ্য করেই আজ সকল শ্রেণীর মুসলমানের কর্তব্য হচ্ছে আত্মজিজ্ঞাসায় তাড়িত হওয়া এবং খন্ডিত ইসলাম ও খন্ডিত নবী অনুসরণে মুক্তির ধারণা থেকে পরিপূর্ণ ইসলাম ও নবীজীবনের পরিপূর্ণ অনুসরণের দিকে নিজেদের নিয়ে আসা। নবী দিবসের এই মোবারক দিনে সকল মুসলমানের কর্তব্য হলো নবীজীবনের উল্লেখিত পূর্ণ আদর্শের অনুসরণের কঠোর শপথ গ্রহণ করা। সরকারীভাবে ১২ রবিউল আউয়ালকে ঈদে মিলাদুন্নবী সা: হিসেবে পালন করা হয়। দিনটিকে সরকারী ছুটিও ঘোষণা করা হয়েছে।