ফুট ওভারব্রিজ নাকি ডাস্টবিন!
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ৬:৫৭:২৮ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : নগরীর কোর্ট পয়েন্টের ফুট ওভারব্রিজ অনেকটা অবহেলা আর অযত্নে পড়ে আছে। এমনিতেই এটি খুব একটা লোকজন ব্যবহার করছেন না, তার উপর অল্প যে ক’জন ব্যবহার করেন তারাও পড়েন বিব্রতকর অবস্থায়। ময়লা আবর্জনা আর ব্যানার ফ্যাস্টুনে অনেকটা ডাস্টবিনে পরিণত হয়েছে এই ওভারব্রিজ।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, পরিষ্কার হয়না নিয়মিত, সিঁড়িতে পলিথিন, প্লাস্টিকের বোতল আর কাগজের টুকরা জমে স্তুপ হয়ে আছে। ব্রিজের উপরে রাতে মাদকসেবীদের ফেলে যাওয়া গাঁজার পুটলির উচ্ছিষ্ট, ফেনসিডিলের বোতল আর ব্যানার ফ্যাস্টুনের টুকরো জমে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। পথচারীরা খুব একটা ব্যবহার না করলেও দিনের বেলা স্কুল কলেজের অল্প সংখ্যক শিক্ষার্থী মাঝে-মধ্যে ব্যবহার করেন এই ব্রিজ। আর রাতের বেলা অন্ধকার ও ময়লায় লোকজন ব্রিজে উঠতে ভয় পান।
বুধবার দুপুর একটার দিকে সরেজমিন দেখা যায় পুরো ওভারব্রিজের এদিক সেদিক ময়লা আবর্জনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে। দু’জন স্কুল ছাত্র নাক চেপে এর মধ্যে সিঁড়ি দিয়ে নামছেন। তারা বলেন, নিচে জ্যাম থাকায় আমরা ব্রিজ দিয়ে রাস্তার পার হই। কিন্তু ময়লা আবর্জনায় আমাদের চলতে কষ্ট হচ্ছে। এটি নিয়মিত পরিষ্কার করা দরকার। কয়েকজন পথচারী বলেন এই ব্রিজটি রাস্তা পারাপারে খুব একটা কাজে লাগে না। তবে সিএনজি স্ট্যান্ড থাকায় সন্ধ্যার পর এই এলাকায় প্রচন্ড যানজট হয়। তখন আমরা এই ব্রিজ ব্যবহার করতে পারলে ভালো লাগতো, কিন্তু তখন ব্রিজে চলাচল নিরাপদ মনে হয় না। ব্যানারে ব্রিজের রেলিং ঢেকে দেওয়া ভেতরে মাদকসেবীরা বা টোকাইরা আড্ডা দেয়। ব্রিজ নিয়মিত পরিষ্কার হয়না তাই অন্ধকারে ময়লায় পা লেগে কাপড়-চোপড় নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এসব কারণে আমরা ব্রিজ ব্যবহার করি না।
এরআগে যানজট মুক্ত নগরী গড়ে তোলার কথা বলে সিলেটে প্রথম কোনো ফুটওভারব্রিজ নির্মাণ করা হয়। ২০১৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় এই ‘বন্দর বাজার ফুটওভারব্রীজ’ উদ্বোধন করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। ‘ফুটওভারব্রিজ প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করা হয় বাংলাদেশ ইস্পাত অ্যান্ড প্রকৌশল কর্পোরেশনের নিজস্ব কোম্পানি ‘চিটাগাং ড্রাই ডক লিমিটেড’ এর মাধ্যমে। ১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা ব্যয়ে এ পদচারী-সেতু নির্মাণ করা হয়। ২০১৫ সালের ২১ মে সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়। চার মাসের মাথায় নির্মাণকাজ শেষে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়।
কিন্তু যে আশা নিয়ে এটি চালু হয়েছিলো তার উল্টোটাই ঘটছে। একাধিকবার বিক্রির উদ্যোগ নিয়েও উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় সেতুটি এখন সিলেট সিটি করপোরেশনের গলার কাঁটা হয়ে আছে।