বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ফাঁকা গ্যালারি, সমালোচনা
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ৯:৩৪:৫৭ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক : দীর্ঘ ৪ বছর আবার শুরু হয়েছে আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপের আসর। এবারের বিশ্বকাপের আয়োজক ভারত। ফলে এক যুগ পর আবার উপমহাদেশের মাটিতে বসেছে একদিনের ক্রিকেটের বিশ্বযজ্ঞ। ক্রিকেটপাগল দেশ হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই ভারতের কাছ থেকে বাড়তি প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজিত না হওয়ায় শুরুতেই ভিমড়ি খেতে হয়। এবার মাঠের খেলায়ও শুরুতে হতাশ করলো আয়োজক।
ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপের ত্রয়োদশ আসরের পর্দা উঠেছে। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় দুই দল। একে তো ওয়ানডে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ তার ওপর মুখোমুখি গতবারের দুই ফাইনালিস্ট। ধারণা করা হচ্ছিল, ম্যাচটি ঘিরে দর্শকদের আগ্রহ থাকবে। কিন্তু মাঠের চিত্রে দেখা গেল সম্পূর্ণ বিপরীত ছবি।
আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামটির দর্শক ধারণক্ষমতা ১ লাখ ৩২ হাজার। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচের আবহের বিবেচনায় বিশ্বের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় স্টেডিয়ামকেই ভেন্যু হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ম্যাচটি দেখতে কাকপক্ষীও তেমন ভিড় করেনি। ম্যাচ শুরুর সময় গ্যালারিতে সর্বসাকুল্যে চার-পাঁচ হাজারের মতো দর্শক ছিল। পরে অবশ্য দর্শক কিছুটা বাড়ে।
বলে রাখা ভালো, এবারের বিশ্বকাপের টিকেট বিক্রির প্ল্যাটফর্ম বুক মাই শো ওয়েবসাইটে ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার উদ্বোধনী ম্যাচের সব টিকেট বিক্রি হয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তার ওপর গত মাসে ভারতের পার্লামেন্টে নারী সংরক্ষণ বিল পাস হওয়া উপলক্ষে ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার নারী দর্শকের খেলা দেখার জন্য ফ্রি টিকেটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল।
কিন্তু এত কিছুর পরও স্টেডিয়ামের গ্যালারি দর্শকবিহীন অবস্থায় খাঁ খাঁ করেছে। ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের ফাঁকা গ্যালারির ছবি বেশ ভাইরাল হয়েছে। অনেকে বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নিলেও কেউ কেউ এ কারণে সমালোচনা করে আয়োজক ভারতের ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) এবং ম্যাচের টিকেট বিক্রির প্ল্যাটফর্মকে এক হাত নিয়েছেন।
বুক মাই শো ওয়েবসাইট আর বিসিসিআইয়ের উদ্দেশে এক্সে (সাবেক টূইটার) রাজিভ নামের এক ব্যক্তি বলেন, “পুরো স্টেডিয়াম ফাঁকাই থাকলে আপনারা কাদের কাছে টিকেট বিক্রি করেছেন? ওয়েবসাইটে সব টিকেট বিক্রি হয়ে যাওয়ার কথা বলা হলো। অথচ পুরো স্টেডিয়াম খালি থাকে কীভাবে?”
সেই পোস্টের ফলো আপ টুইটে এক ব্যবহারকারী বলেন, “মিনিটের মধ্যেই ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড ম্যাচের টিকেট শেষ হয়ে যাওয়ার কথা বলেছিল বুক মাই শো। মানুষ এত আগ্রহী যে এক লাখের মতো টিকেট মুহূর্তেই শেষ হয়ে গেছে। তাহলে তারা কাদের কাছে টিকেট বিক্রি করলো? ভূত-পেত্নিরা ম্যাচ দেখছে?”
আরেক ব্যবহারকারী বলেন, “মাত্র কয়েকশ লোকের উপস্থিতিতে আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের পর্দা উঠতে দেখে হতাশ লাগছে।”
অনেকে আবার গ্যালারি ফাঁকা দেখানোর কারণ হিসেবে স্টেডিয়ামের বিশাল পরিমাণ দর্শক ধারণক্ষমতার কথা উল্লেখ করেন। ভালো পরিমাণ দর্শক থাকলেও স্টেডিয়ামের গ্যালারি ফাঁকা ফাঁকাই লাগবে বলে দাবি করেন তারা। আবার অনেকে ভারতের ম্যাচ না থাকাকেও এ দর্শকবিহীন অবস্থার জন্য দায়ী করেন।
এক ব্যবহারকারী বলেন, “এটা এক লাখ ত্রিশ হাজার দর্শক ধারণাক্ষমতার স্টেডিয়াম। ৪০ হাজার দর্শক থাকলেও গ্যালারি দেখতে ফাঁকাই লাগবে।” আরেক ব্যবহারকারী বলেন, “স্টেডিয়ামের দর্শক ধারণাক্ষমতা এক লাখ ৩২ হাজার। মাত্র গ্যালারির মাত্র ১০% পূর্ণ হলেও ১৩ হাজার ২০০ জন মানুষ থাকবে। দুই দলের (ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড) জন্য এটাই যথার্থ।” অপর এক ব্যবহারকারী বলেন, “নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম অনেক বড় এবং এখানে ভারতের ম্যাচ নেই। আহমেদাবাদের হোটেলগুলো আগে থেকেই বুকড।”
উল্লেখ্য, আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের মোট পাঁচটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ১৪ অক্টোবর এখানে মুখোমুখি হবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তান। আগামী ১৯ নভেম্বর আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপের এবারের আসরের ফাইনালও এখানেই গড়াবে।