অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজারে নিম্নমুখিতা অব্যাহত
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ অক্টোবর ২০২৩, ৮:৫৩:০১ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: আন্তর্জাতিক বাজারে টানা তৃতীয় দিনের মতো বৃহস্পতিবারও অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম কমেছে। এদিন পণ্যটির বাজারে সবচেয়ে বড় প্রভাবক ছিল যুক্তরাষ্ট্রে মজুদ বৃদ্ধির খবর। এ তথ্যে সরবরাহ নিয়ে বাজার সংশ্লিষ্টদের উদ্বেগ কমায় দাম কমেছে পণ্যটির। খবর রয়টার্স।
আইসিই ফিউচার্স এক্সচেঞ্জে বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম কমেছে ব্যারেলে ৪৩ সেন্ট। ব্যারেলপ্রতি মূল্য স্থির হয়েছে ৮৫ ডলার ৩৯ সেন্টে। একই সময় নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে (নিমেক্স) মার্কিন বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম কমেছে ব্যারেলে ৫৩ সেন্ট। প্রতি ব্যারেলে দাম নেমেছে ৮২ ডলার ৯৬ সেন্টে। সম্প্রতি দাম ২ শতাংশ কমে গেলেও উভয় বাজার আদর্শেই সাপ্তাহিক দাম বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মজুদের পরিমাণ রয়টার্সের প্রত্যাশিত জরিপকেও ছাড়িয়ে গেছে। জরিপে পাঁচ লাখ ব্যারেল মজুদ বাড়ার প্রত্যাশা করা হয়েছিল। আমেরিকান পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউটের (এপিআই) পরিসংখ্যানের বরাত দিয়ে বাজার সূত্র জানিয়েছে, মার্কিন অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মজুদ প্রায় ১ কোটি ২৯ লাখ ব্যারেল বেড়েছে।আইএনজি বিশ্লেষকরা বলেছেন, ‘একদিকে এপিআইয়ের মজুদ বাড়ার তথ্য সামনে এসেছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে পরিশোধনাগারগিুলোয় রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম চলছে। বিশ্বর বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে পণ্যটির চাহিদা এখন স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কম। এরই ধারাবাহিকতায় দাম কমেছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের।’বিশ্লেষকরা যুক্তরাষ্ট্রে পেট্রলের মজুদ আট লাখ ব্যারেল কমার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। তবে উল্টো জ্বালানিটির মজুদ ৩৬ লাখ ব্যারেল বেড়েছে। দেশটিতে আরো কিছুদিন জ্বালানির চাহিদা মন্থর যেতে পারে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।জেপি মরগানের বিশ্লেষকরা বলেছেন, ‘মূল্যস্ফীতির কারণে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে গেছে। ক্রেতারা খরচ বেড়ে যাওয়ায় ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পেট্রল ব্যবহারকারী পাঁচটি অঞ্চলের মধ্যে শীর্ষে ক্যালিফোর্নিয়া। রাজ্যটিতে জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিদিন পেট্রলের চাহিদা এক লাখ ব্যারেল কমেছে, যা সাত মাসের দৈনিক গড় ব্যবহার ১৪ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেলের চেয়ে কম।
বাজারগুলো ইউএস এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ইআইএ) থেকে আরো একটি মজুদ তথ্য আসার অপেক্ষা করছে। আশা করা হচ্ছে, তাতে মজুদ সংখ্যা বাড়ার তথ্য এলে দাম আরো কিছুটা নিম্ন মুখী হতে পারে।এদিকে প্রধান জ্বালানি তেল উত্তোলনকারী মধ্যপ্রাচ্যে ৭ অক্টোবর থেকে গোলযোগ শুরু হওয়ায় তেলের বৈশ্বিক সরবরাহ নিয়েও উদ্বেগ দেখা দেয়। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে মজুদ বাড়ার এ তথ্য সংশ্লিষ্টদের দুশ্চিন্তা কমাতে সাহায্য করেছে।এএনজেডের বিশ্লেষকরা বলেছেন, ‘ইসরায়েল-হামাস সংঘর্ষে জ্বালানি তেলের বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। এমন লক্ষণ স্পষ্ট হওয়ায় জ্বালানি তেলের দরপতন ঘটেছে। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার সংঘাতের কারণে ঝুঁকি প্রিমিয়াম ক্রমেই কমছে।’এর আগে শনিবার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর শীর্ষস্থানীয় জ্বালানি তেল সরবরাহকারী সৌদি আরব, ইরানসহ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। মাত্র দুদিনের ব্যবধানে গত সোমবার ব্রেন্ট ও ডব্লিউটিআইয়ের দাম গড়ে ব্যারেলপ্রতি প্রায় ৪ শতাংশ বেড়ে যায়।