গাজা পরিস্থিতি ভয়াবহ, মৃত্যু দেড় হাজার
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ অক্টোবর ২০২৩, ৯:৩০:৪৮ অপরাহ্ন
গাজা ঐতিহাসিকভাবে ফিলিস্তিনিদের ভূমি : পুতিন
জালালাবাদ রিপোর্ট : গাজা এখন সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ। টানা ছয়দিনের বিমান হামলায় সেখানকার মানবিক পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর দিকে মোড় নিচ্ছে। শুক্রবার ইসরায়েলের আগ্রাসনে গাজায় মৃত্যু দেড় হাজার ছাড়িয়েছে।
ইসরায়েলের অবরোধে খাবার, পানি ফুরিয়ে আসতে থাকায় গাজায় ‘ভয়াবহ’ পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)।গাজার একমাত্র বিদ্যুৎকেন্দ্র জ্বালানির অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। সেখানকার অধিবাসীরা এখন জেনারেটরের ওপর নির্ভর করছে। ইসরায়েল বলেছে, হামাস জিম্মি করা ইসরায়েলিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত গাজায় জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও পানি দেওয়া হবে না।
এরমাঝে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজার উত্তরাঞ্চলীয় ১১ লাখ মানুষের সবাই যেন বাড়িঘর ছেড়ে সরে যায়, ইসরায়েল এমনটি চাইছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জাতিসংঘকে বলেছে, গাজা উপত্যকার উত্তরের সবাই যেন আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দক্ষিণ গাজায় স্থানান্তর হয়। এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মুখপাত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
জাতিসংঘের তথ্য মতে, উত্তর গাজায় অন্তত ১১ লাখ মানুষ রয়েছে, যা গাজা উপত্যকার গোটা জনগোষ্ঠীর প্রায় অর্ধেক। গাজা ও জেরুসালেমের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় এই জরুরি আহ্বান জানায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। তবে ২৪ ঘণ্টায় এত বড় জনগোষ্ঠীর স্থানান্তরকে ‘অসম্ভব’ বলা হয়েছে জাতিসংঘের মুখপাত্রের বিবৃতিতে।
ইসরায়েল স্থলপথে বড় ধরনের আগ্রাসনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, এরই অংশ হিসেবে লোকজনকে সরে যেতে বলছে। এরই মধ্যে গাজা সীমান্তে ভারী ভারী যুদ্ধ সরঞ্জাম ভিড়িয়েছে ইসরায়েল। সেনা মোতায়েনও করেছে লাখ লাখ।শনিবার ভোরে ইসরায়েলে হামাসের উপর্যুপরি রকেট হামলার পরই সংঘাত শুরু হয়। গাজায় এক হাজার ৫৩৭ জনের বেশি ফিলিস্তিনি এবং অন্যদিকে এক হাজার ৩০০ জনের বেশি ইসরায়েলি এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন। দেড় শতাধিক ইসরায়েলিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে গেছে হামাস। তবে হামাস এ সংখ্যা আরও বেশি বলে দাবি করেছে।
গাজায় হাজার হাজার বোমা :
ইসরায়েল বলেছে, গত ছয় দিনে গাজায় হামাসের স্থাপনা লক্ষ্য করে চার হাজার টন ওজনের প্রায় ছয় হাজার বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে। বিমান হামলায় মোট ৩৬ হাজারের বেশি স্থাপনায় আঘাত হেনেছে।
প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দেশটির পার্লামেন্টে যুদ্ধকালীন মন্ত্রীসভার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে বলেছেন, কঠিন সময় আসছে।
জাতিসংঘ বলেছে, গাজায় শোচনীয় অবস্থা চলছে কারণ খাবার এবং পানি দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া প্রায় ৫০ হাজার গর্ভবতী নারী প্রয়োজনীয় কোন সেবা গ্রহণ করতে পারছে না।
এদিকে, ফিলিস্তিনিদের গাজা ছেড়ে যাওয়ার ইসরাইলি নির্দেশের সমালোচনা করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। তিনি বলেন, এমন পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে শান্তি অর্জন সম্ভব নয়। এটি সেই ভূমি যেখানে ফিলিস্তিনিরা বাস করে। গাজা ঐতিহাসিকভাবে ফিলিস্তিনিদের ভূমি। এ খবর দিয়েছে মিডল ইস্ট মনিটর।
এদিকে ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বিশে^র বিভিন্ন দেশ প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছে। তবে চলমান সংঘাতে বাংলাদেশের আরও জোরালো ও শক্ত অবস্থান চায় ফিলিস্তিন। ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান বাংলাদেশের কাছে আরও জোরালো ভূমিকা প্রত্যাশা করেছেন।