সিলেটে ভাবী হত্যায় দেবর দম্পতির যাবজ্জীবন
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ অক্টোবর ২০২৩, ৭:০৪:৪৭ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটে সোনারা বেগম হত্যা মামলায় স্বামী ও স্ত্রী’র যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সাথে রায়ে উভয়কে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আসামিরা আদালতের এজলাস কক্ষে উপস্থিত ছিলেন।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ও আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন।
দণ্ডিতরা হলেন, সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের ফরফরা গ্রামের আব্দুল করিম (৪১) ও তার স্ত্রী শিরিনা বেগম (৩৩)। এছাড়া পৃথক ধারায় তাদেরকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, এক হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো একমাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আদালত সূত্র জানায়, জৈন্তাপুর উপজেলার ফরফরা গ্রামের মো: ওয়াহাব আলীর সঙ্গে সৎ ভাই আব্দুল করিমের জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। তাই ওয়াহাব ও তার স্ত্রী এবং তাদের পক্ষে থাকা প্রতিবেশী তেরাব আলীকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এরই জের ধরে ২০২১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ভোরে মসজিদে ফজর নামাজ পড়ে ফেরার পথে তেরাব আলীর ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে ছুরিকাঘাত করেন আব্দুল করিম ও তার স্ত্রী শিরিনা বেগম। তার চিৎকারে স্ত্রী সোনারা বেগম বেরিয়ে ঘটনাটি দেখে প্রাণভয়ে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। কিন্তু দণ্ডিত আব্দুল করিম সস্ত্রীক দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকলে পেছনে রান্নাঘরের দরজা দিয়ে সোনারা বেগম পালাতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে পড়ে যান। তখন সৎ ভাইয়ের স্ত্রী সোনারা বেগমকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন আব্দুল করিম ও তার স্ত্রী শিরিনা।
ঘটনার পরদিন ওই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর নিহতের ছেলে জাহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে জৈন্তপুর থানায় হত্যা মামলা (নং-২০(৯)২১) দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার সাবেক উপ-পরিদর্শক (এসআই) সিরাজুল ইসলাম ২০২২ সালের ১৯ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (নং-১৩০) দাখিল করেন।
২০২২ সালের ৬ অক্টোবর মামলাটি আদালতে বিচারের জন্য দায়রা ৯২৩/২২ মূলে রেকর্ড করা হয়। একই বছরের ১৯ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর বিচারকার্য শুরু হয়। দীর্ঘ শুনানিকালে ২৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ২১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে স্বামী ও স্ত্রী পরস্পর যোগসাজসে হত্যাকাণ্ড সংগঠিত করায় বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন। আসামিদের পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট আকমল খান।