সিলেটে ইমাম সমিতির বিক্ষোভ ও গণমিছিল–ফিলিস্তিনে ইসরাইলী বর্বরতার প্রতিবাদ
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ অক্টোবর ২০২৩, ৯:২২:০৮ অপরাহ্ন
ফিলিস্তিনের গাজায় নিরীহ নিরস্ত্র স্বাধীনতাকামি ফিলিস্তিনিদের উপর ইহুদিবাদী ইসরাইলী বাহিনীর বর্বর গণহত্যার প্রতিবাদে সিলেটে বিক্ষোভ সমাবেশ ও গণমিছিল করেছে জাতীয় ইমাম সমিতি সিলেট মহানগর শাখা। শুক্রবার বাদ জুমআ নগরীর ঐতিহাসিক কোর্ট পয়েন্টে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা হাবীব আহমদ শিহাব। সমিতির মহানগর সেক্রেটারি মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, জয়েন্ট সেক্রেটারি মাওলানা মুফতি আব্দুর রহমান শাহজাহান ও প্রচার সম্পাদক মাওলানা মাছুম আহমদের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে হাজার হাজার মুসল্লী অংশ নেন।
জুমআর নামাজের পর থেকেই সিলেট মহানগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে ইমাম সাহেবদের নেতৃত্বে এবং বিভিন্ন ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সামাজিক রাজনৈতিক জনপ্রতিনিধিদের নেতৃত্বে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের একের পর এক বিশাল বিশাল মিছিল কোর্ট পয়েন্টে জমা হতে থাকে। বিকাল ৩ টায় সমাবেশ শেষ হওয়া পর্যন্ত অনেকে মিছিল সহকারে এসে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে শরিক হয়েছেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন- যুগ যুগ ধরে ইসরাইলের ইহুদীরা ফিলিস্তিন দখল করে আছে। সেখানে নিরিহ ফিলিস্তিনিদের উপর নির্মম নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে আসছে। অথচ বিশ্বের কোন মানবাধিকারের ফেরিওয়ালারা কোন কথা বলতে দেখা যায়নি। কিন্তু যখনই ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মানুষের পক্ষে আত্মরক্ষামুলক কোন কাজ করা হয় তখনই ইহুদীদের মিত্র আমেরিকা ও তাদের দালাল পশ্চিমা দেশগুলো মানবাধিকারের দুহাই তুলে সন্ত্রাসী ইহুদীদের আরো উস্কে দেয়। যার ফলে তারা ফিলিস্তিনের নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ নির্বিচারে সবাইকে হত্যা করে। আহত, অসুস্থ রোগীদের পর্যন্ত হাসপাতালে বোমা মেরে হত্যা করছে। ফিলিস্তিনে অবস্থিত মুসলমানদের পবিত্র স্থান মসজিদুল আকসা এর ঢুকেও মুসলমানদেরকে হত্যা করতেছে এবং মসজিদকে ধ্বংস করছে।
বক্তারা বলেন- এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘসহ ইসরায়েলের মিত্র সকল রাষ্ট্রকে চিন্তা করতে হবে এরকম বর্বর গণহত্যা মানবাধিকার লঙ্ঘন যুদ্ধাপরাধে মত ঘৃণিত কাজের নগ্ন পক্ষাবলম্বন করে তারা নিজেদেরকে কি মানবতার শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করছেন? কেন তারা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলছেন না? এ সকল অপরাধ মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গণহত্যার দায় কি তারা নিবেন? তারা যদি সত্যিকার অর্থে মানবাধিকার এবং মানবতার পক্ষের বলে নিজেদেরকে মনে করেন তাহলে তাদের উচিত ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার জন্য এই অত্যাচার থেকে মুক্ত করার জন্য জাতিসংঘের মাধ্যমে স্থায়ী সমাধানের ব্যবস্থা করা। মসজিদে আকসাকে নিরাপদভাবে মুসলমানদের জন্য ছেড়ে দেওয়া। তা না হলে মুসলমান সকল রাষ্ট্রগুলোকে একজোট হয়ে মানবতার পক্ষে মজলুমের পক্ষে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা উদ্ধারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা হাবীব আহমদ শিহাব বলেন- সকল মুসলমানগণ ইসরাইলি সন্ত্রাসীদের পণ্য বর্জন করতে হবে। এ সকল পণ্য বিক্রি করে বিশ্বের মার্কেট থেকে মুনাফা অর্জন করে এই টাকা দিয়েই গারা মুসলমানদেরকে নির্যাতন ও হত্যা করছে। সকল মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে ইসরাইলের দালালদের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক বন্ধ করে তাদের এম্বাসি বাতিল করে তাদের উপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করতে হবে। সকল ইসলামী রাষ্ট্রগুলো আল আকসা উদ্বারের জন্য এবং ফিলিস্তিন স্বাধীন করার জন্য জিহাদের আহ্বান করার সময় এসেছে।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- সাবেক এমপি এডভোকেট মাওলানা শাহিনুর পাশা চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা: মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল, বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন ও রাজনীতিবিদ মাওলানা রেজাউল করিম জালালি, শায়খুল হাদীস আতাউর রহমান কোম্পানীগঞ্জী, মাওলানা খলিলুর রহমান, মাওলানা মুস্তাক আহমদ খান, সিলেট জেলা ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা এহসান উদ্দিন, আলেমে দ্বীন মাওলানা তাজুল ইসলাম হাসান, মাওলানা শাহ আশরাফ আলী মিয়াজানী, মাওলানা নূর আহমদ ক্বাসিমী, বায়তুল আমান জামে মসজিদের ইমাম মুফতি বেলাল আহমদ, মাওলানা জামাল আহমদ আজমী, হাফিজ মাওলানা মিফতাহুদ্দীন আহমদ, প্রাথমিক শিক্ষক পরিষদ সিলেট বিভাগের সভাপতি ওলিউর রহমান, মুতাওয়াল্লী আফছর আহমদ, ১৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলার আব্দুল মুহিত জাবেদ ও সিলেট কল্যাণ সমিতির সভাপতি এহসানুল হক তাহের প্রমূখ।