সম্প্রীতির অনন্য নজির : বিয়ানীবাজারে একই আঙ্গিনায় মন্দির-মসজিদ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ অক্টোবর ২০২৩, ৫:৩৯:০৯ অপরাহ্ন
তোফায়েল আহমদ, বিয়ানীবাজার: একপাশে চলছে পূজো, অন্যপাশে চলছে নামাজ। আজান ও নামাজের সময় বন্ধ থাকে উলুধ্বনি, আবার নামাজ শেষ হলেই শুরু হয় পূজোর কাজ। এভাবে ধর্মীয় সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যুগ যুগ ধরে চলছে পৃথক দুটি ধর্মীয় উপাসনালয়।ধর্মীয় সম্প্রীতির এমন উজ্জ্বল নিদর্শন বিয়ানীবাজার উপজেলার তিলপাড়া ইউনিয়নের শানেস্বর বাজারে বিদ্যমান। ওই বাজারের একই উঠানে জামে মসজিদ ও সার্বজনীন পূজামন্ডপ রয়েছে। যে যার মতো ধর্ম পালন করে চলেছেন।
স্থানীয়রা জানান, সোনাই নদী তীরবর্তী শানেস্বর বাজারে প্রায় ৭০ বছর আগে কাছাকাছি সময়ে মসজিদ ও মন্দির স্থাপন করা হয়। নদী দিয়ে চলাচলকারী বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ধর্মপ্রাণ মুসলমান ব্যবসায়ীরা নামাজ পড়ার জন্য মন্দিরের পাশেই একটি ছোট ঘর তোলেন। আর সেটির নামকরণও করা হয় শানেস্বর বাজার জামে মসজিদ হিসেবে। ওই সময় থেকে এক উঠোনে চলছে দুই ধর্মের দুই উপাসনালয়। এখন পর্যন্ত মন্দির-মসজিদ নিয়ে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। মন্দির ও মসজিদ দেখতে প্রতিদিন দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসছে সাধারণ মানুষ।
সম্প্রীতির এমন উদাহরণ সারা দেশের মানুষের জন্য অনুকরনীয় জানিয়ে শানেস্বর বাজার মসজিদ কমিটির সভাপতি আইয়ুব আলী জানান, দীর্ঘদিন থেকে আমরা পরস্পরের সহযোগিতায় একই আঙ্গিনায় ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রেখে চলেছি। মন্ডপ কর্তৃপক্ষও আমাদের আজান ও নামাজের সময়ে পূজোর কর্মকান্ড স্থগিত রাখেন।শানেস্বর বাজার সার্বজনীন পূজা মন্ডপের সভাপতি জানান, দীর্ঘ ৭০ বছরে একবারও আমাদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা ঘটেনি। আমরা উৎসবে মুসলিমদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা পেয়েছি। এছাড়া প্রশাসনের সর্বোচ্চ সহযোগিতার মাধ্যমে প্রতিবারের ন্যায় এবারো দুর্গোৎসব শেষ হবে।
সুশীল সমাজের প্রতিনিধি সাংবাদিক ও সংস্কৃতিকর্মী আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, বিয়ানীবাজারের সবচেয়ে বেশী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাস এই এলাকায়। সম্প্রীতির এই এলাকার একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ শানেস্বর বাজার জামে মসজিদ ও শানেস্বর বাজার পূজামন্ডপ।শানেশ্বর বাজার পূজা মন্ডপ পরিদর্শনে আসা বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ দেবদুলাল ধর জানান, সম্প্রীতির এমন নজির যেনো আমাদের দেশের প্রতিটি অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ুক। তিনি বলেন, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নির্বিঘ্নে উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা চলছে।