প্রতিমা বিসর্জনে শেষ হলো দুর্গোৎসব
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ অক্টোবর ২০২৩, ৮:৩৫:১৯ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : বিজয়া দশমী ও প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা আজ (মঙ্গলবার) চোখের জলে বিদায় দেন জগজ্জননী দেবী দুর্গাকে। সেই সঙ্গে আসছে বছর আবারও এই মর্ত্যলোকে ফিরে আসবেন মা- এই আকুল প্রার্থনাও জানিয়েছেন তারা।
এরআগে মণ্পডগুলোতে চলে সিঁদুর খেলা আর আনন্দ-উৎসব। হিন্দু সধবা নারীরা প্রতিমায় সিঁদুর পরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি নিজেরা একে অন্যকে সিঁদুর পরিয়ে দেন। চলে মিষ্টিমুখ, ছবি তোলা আর ঢাকের তালে তালে নাচ-গান।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৩টায় শুরু হয় বিজয়া শোভাযাত্রা। নগরীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে চাঁদনীঘাটের সুরমা তীরে গিয়ে শেষ হয় শোভাযাত্রা। শঙ্খ আর উলুধ্বনি, খোল-করতাল-ঢাকঢোলের সনাতনী বাজনার সঙ্গে দেবী-বন্দনার গানের মধ্য দিয়ে শত শত মানুষ এই শোভাযাত্রায় অংশ নেন। বিকেল সাড়ে ৫টায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন। উদ্বোধন করেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
এদিকে প্রতিমা বিসর্জনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাঁদনীঘাট এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ, র্যাব মোতায়েন করা হয়। এছাড়া সাদা পোশাকেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দেখা যায়।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অনুযায়ী, দশভ‚জা দেবী মহালয়ার দিন ‘কন্যারূপে’ পৃথিবীতে আসেন। আর দশমার দিন বিসর্জনের মাধ্যমে এক বছরের জন্য বিদায় জানানো হয় তাকে। দেবীর আগমন ও প্রস্থানের মাঝে আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী থেকে দশমী তিথি পর্যন্ত মাঝের পাঁচদিন নানা আয়োজনে চলে দুর্গোৎসব। দিনপঞ্জিকা অনুসারে এ বছর দুর্গাদেবী স্বামীর ঘর স্বর্গ ছেড়ে মর্ত্যে পিতৃগৃহে পদার্পণ করছেন ঘোটকে (ঘোড়া) চড়ে। দুর্গাদেবী ভক্তদের কাঁদিয়ে ঘোটকে (ঘোড়া) চড়ে মর্ত্যলোক ছেড়ে চলে গেলেন কৈলাসে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এবার সিলেট মহানগরীতে মোট ১৫১টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এরমধ্যে সার্বজনীন মণ্ডপ ছিলো ১৩৪ ও পারিবারিক মণ্ডপ ছিলো ১৭টি। এছাড়া সিলেট জেলায় ৪৬৬ মণ্ডপে দুর্গাপূজা হয়। এরমধ্যে সার্বজনীন মণ্ডপ ৪৩৫ এবং পারিবারিক মণ্ডপ ছিলো ৩১টি।
এ দিকে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন মহানগর প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, শারদীয় দূর্গা উৎসবের শেষ দিনে নগরীর ঐতিহ্যবাহী চাদনী ঘাটের বাংলাদেশ পূজা উদযাপন সিলেট মহানগর শাখা কর্তৃক প্রতিমা বিজর্সন কার্যক্রমের শুভ সূচনা করেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এ সময় তিনি বলেন, আধ্যাধিক নগরী সিলেট। ধর্মীয় সম্প্রতির এক উজ্জ্বল উদাহরণ। সুদীর্ঘকাল থেকে এই নগরী অঞ্চলের মানুষ এক অন্যের ধর্মীয় উৎসবে অংশ গ্রহণ করে আনন্দ ভাগাভাগি করে উৎসবের সর্বাঙ্গীন সৌন্দর্যকে বহুগুনে বাড়িয়ে তুলে। এটি সিলেটকে দেশের অন্যান্য এলাকার থেকে সতন্ত্র মর্যাদা দিয়েছে। আধ্যাধিক নগরী সিলেটসহ এ অঞ্চলের সম্প্রতি রক্ষায় আমরা বদ্ধ পরিকর।
সংগঠনের মহানগর সভাপতি রজত কান্তি গুপ্তের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এপেক্সিয়ান চন্দন দাস, বাবলু দেব এবং এডভোকেট দেবব্রত চৌধুরী লিটনের যৌথ পরিচালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র আয়োরুজ্জামান চৌধুরী। শারীরিক অসুস্থ থাকায় প্রেরিত লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষ স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম ও অনুষ্ঠান পালন করবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা। বর্তমান সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি রক্ষায় অত্যন্ত আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
সংগঠনের মহানগর সভাপতি রজত কান্তি গুপ্তের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এপেক্সিয়ান চন্দন দাস, বাবলু দেব এবং এডভোকেট দেবব্রত চৌধুরী লিটনের যৌথ পরিচালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র আয়োরুজ্জামান চৌধুরী। শারীরিক অসুস্থ থাকায় প্রেরিত লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষ স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম ও অনুষ্ঠান পালন করবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা। বর্তমান সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি রক্ষায় অত্যন্ত আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
নগরীর চাদনীঘাটে সম্প্রতির সুবোধ মঞ্চে উপস্থিত হয়ে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, ড. হিমান্দ্রি শেখর রায়, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ ইলিয়াস শরীফ, বিপিএম (বার) পিপিএম, মহানগর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক, কাউন্সিলর জগদ্বীশ চন্দ্র দাস, জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট রনজিত সরকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা ভবতোষ রায় বর্মন রানা, সিনিয়র সাংবাদিক আল-আজাদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সহধর্মীনি সেলিনা মোমেন, ড. দিলিপ কুমার দাস চৌধুরী, তপন মিত্র, সুদীপ দেব।
পূজা উদযাপন পরিষদ ও হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এডভোকেট মৃত্যুঞ্চয় ধর ভোলা, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক রজত কান্তি ভট্টাচার্য্য, ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মলয় পুরকায়স্থ, জেলা সভাপতি এডভোকেট প্রদীপ কুমার ভট্টাচার্য্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোপিকা শ্যাম পুরকায়স্থ, সাধারণ সম্পাদক কৃপেশ পাল, মহানগর সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ দেব, সুব্রত দেব, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রঞ্জন ঘোষ, বিশ্বজিৎ গুন, এডভোকেট অরবিন্দু দাস গুপ্ত, বিরেশ দেবনাথ, নন্দন পাল, মনমোহন দেবনাথ, ভৈরব চন্দ্র নাথ, দিপংকর দাস, ধনঞ্জয় দাস ধনু, মিথিল পাল প্রমুখ।