কাল ২৮ অক্টোবর : শেষ মুহূর্তে নানা নাটকীয়তা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ অক্টোবর ২০২৩, ৪:০৮:২৬ অপরাহ্ন
জালালাবাদ রিপোর্ট : জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সপ্তাহ দুয়েক আগে রাজধানী ঢাকায় কাল বিএনপি-জামায়াতের মহাসমাবেশ ও আওয়ামীলীগের পাল্টা সমাবেশ নিয়ে চলছে নানা নাটকীয়তা, চলছে উত্তেজনা। অন্যদিকে কঠোর অবস্থানে পুলিশ। এ অবস্থায় শেষ মুহূর্তে নাটকের কেমন মঞ্চায়ন হবে-সেদিকেই তাকিয়ে রাজনীতি সচেতন মানুষ।
কাল ২৮ অক্টোবর দেশের বড় তিন দলের কর্মসূচি নিয়ে যেসব আলাপ-আলোচনা চলছে এবং গণমাধ্যমে যে ভঙ্গিতে খবরাখবর আসছে, তাতে জনসাধারণের মনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। আতঙ্ক-শঙ্কাও কাজ করছে। একে অপরের প্রতি উত্তেজনাপূর্ণ বক্তব্য, বাক্যবাণ ছোড়াছুড়িতেও সংঘাতপূর্ণ একটা ইঙ্গিত দেখা দিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। আবার এর মাঝে নানা নাটকও মঞ্চস্থ হতে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ।
বুধবার পুলিশের পক্ষ থেকে বিএনপিকে দেয়া এক চিঠিতে সমাবেশের বিকল্প দুটি ভেন্যুর নামসহ সাতটি তথ্য চাওয়া হয়েছিলো। ওই চিঠির জবাবে বৃহস্পতিবার দুপুরে পল্টন থানার ওসির কাছে চিঠি পাঠান বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এতে বলা হয়, ২৮ অক্টোবরের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ নয়াপল্টনে বিএনপির প্রধান কার্যালয়ের সামনেই আয়োজনের সব প্রস্তুতি এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। অন্য কোনো ভেন্যুতে যাওয়া সম্ভব হবে না। পুলিশকে বিএনপি আরও জানায়, সমাবেশে এক থেকে সোয়া লাখ মানুষের সমাগম হবে।
ওদিকে পুলিশ একই ধরনের চিঠি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকেও পাঠিয়েছে, যেখানে বায়তুল মোকাররমের বিকল্প দুটি জায়গার নাম চাওয়া হয়েছে। তবে দলটির নেতারা ইতোমধ্যেই জানিয়েছেন যে তারা তাদের নির্ধারিত জায়গাতেই সমাবেশ করতে চান। দলটি বলেছে, ওই সমাবেশে প্রায় দুই লাখ লোকের সমাগম হবে।
তবে পুলিশ বলছে, দুই দলের কাউকেই এখনো অনুমোদন দেয়া হয়নি। ডিএমপির নির্ধারিত স্থানেই সমাবেশ করতে হবে দলগুলোকে। না হলে পুলিশ যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।
ওদিকে, আগামীকাল ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ডাকা সমাবেশের বিষয়ে জিরো টলারেন্স দেখানোর কথা জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। কোনোভাবেই ঢাকা শহরে জামায়াতকে সভা-সমাবেশ করতে দেয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত তাদের। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার।
বিপ্লব কুমার বলেন, জামায়াতের বিষয়ে ডিএমপির অবস্থান লাউড অ্যান্ড ক্লিয়ার। জামায়াতকে ঢাকা শহরের কোথাও সভা-সমাবেশ করতে দেয়া হবে না। জামায়াত স্বাধীনতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত দল। দলটির নিবন্ধন হাইকোর্টের নির্দেশে নির্বাচন কমিশন বাতিল করেছে। সুতরাং জামায়াতকে কোনো ধরনের স্পেস দেয়ার সুযোগ নেই।
তবে জামায়াত বলছে, সংসদ ভেঙে দিয়ে সরকারের পদত্যাগ এবং কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে আগামীকাল ২৮ অক্টোবর মতিঝিলের শাপলা চত্বরেই শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ করবে জামায়াতে ইসলামী। বৃহস্পতিবার দুপুরে ভার্চুয়াল জরুরি সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান এ ঘোষণা দেন। আর এই মহাসমাবেশ সফলে প্রশাসন এবং দেশবাসীর সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
এদিকে, মহাসমাবেশকে সামনে রেখে পুলিশ ধরপাকড় শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি ও জামায়াত নেতারা। অনেক নেতা-কর্মীর বাড়ি বাড়ি পুলিশি অভিযানের অভিযোগও করেছেন তারা। বুধবার জামায়াতের প্রচার সম্পাদক ও সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী মতিউর রহমান আকন্দকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে পুলিশ বলছে, নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই পুরোনো মামলার আসামি গ্রেপ্তার চলছে।