ব্যস্ত নগরীতে আরও ব্যস্ততা
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ অক্টোবর ২০২৩, ৬:৫৩:০৫ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: রোববারের হরতালের পর মাঝে একদিন বাদদিয়ে মঙ্গলবার থেকে টানা তিনদিনের অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। ফলে সোমবার হঠাৎ যেন প্রচন্ড ব্যস্ত নগরে পরিণত হয় সিলেট। অন্যদিন দোকানপাট খুলতে খুলতে সকাল ১১টা পেরিয়ে গেলেও এদিন দেখা যায় ৯টার পর থেকেই সাঁটার ওঠা শুরু করেন অনেক দোকানি। সকাল সাড়ে দশটার মধ্যে নগরীর জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা, বন্দরবাজার, রিকাবিবাজারে দেখা যায় প্রায় সবগুলো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে গেছে। শুরু হয়ে গেছে বিক্রি বাট্টাও।
জিন্দাবাজার প্যারিস ম্যানসনের ব্যবসায়ী আলিম উদ্দিন বলেন দীর্ঘদিন পর হরতালের কারণে রোববার কোনো মার্কেট খুলেনি, ফলে কোনো ব্যবসা হয়নি। অনেক কাস্টমার ফোন দিয়ে দোকান খোলা হবে কিনা জানতে চান। কিন্তু দোকান খোলা না থাকায় তারা আসতে পারেন নি। তাই সোমবার অন্যদিনের চেয়ে আগেই দোকান খোলা হয়েছে। আগেরদিনের ক্রেতারাও যোগাযোগ করে চলে এসেছেন। পরদিন মঙ্গলবার থেকে অবরোধ থাকায় পরিস্থিতি কী দাঁড়ায় কারো জানা নেই, তাই সকাল থেকেই লোকজন একদিনেই তাদের কাজ সেরে নিতে চাইছেন। পরে কয়দিন আটকে থাকতে হয় তা কারো জানা নেই।
সকাল থেকেই কেবল শহর নয় শহরের বাইরে থেকেও অনেক লোকসমাগম ঘটে সিলেটে। দুপুর ১২টার দিকে নগরীর কোর্ট পয়েন্ট ও মধুবনের সামনে দেখা যায় অপেক্ষমান যাত্রীদের বিশাল জটলা ও হুরোহুরি। সবাই সিএনজি অটোরিকশার জন্য অপেক্ষা করছেন। সিএনজি অন্যান্য দিনের মতো থাকলেও যাত্রীর সংখ্যা বেশি থাকায় স্ট্যান্ডে গাড়ি এসে থামার সাথে সাথেই তারা কে কার আগে উঠার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
এখানে কথা হয় গোলাপগঞ্জের নাজমুল ইসলাম নামে এক তরুণের সাথে। তিনি বলেন শনিবার রাতে হঠাৎ করে তার মোবাইল নষ্ট হয়ে যায়। পরদিন হরতাল থাকায় মার্কেট বন্ধ থাকায় তা সারাতে পারেন নি। করিমউল্লাহ মার্কেটে তার পরিচিত মোবাইল মেরামতের দোকানে বারবার ফোন দিয়ে খোঁজ নিয়েছেন দোকান খুলেছে কিনা। কিন্তু দোকান না খোলায় আজ নয়টার মধ্যে বাড়ি থেকে রওয়ানা দিয়েছেন। নাজমুল বলেন অন্যদিন ঘুম থেকে উঠতেই ১১টা বেজে যায়। মোবাইল সারাতে সাধারণত দুপুরের পর খেয়ে দেয় আস্তেধীরে বের হতেন। কিন্তু মঙ্গলবার থেকে টানা অবরোধের কথা শুনে আর দেরি করেননি। সকালেই চলে এসেছেন এখন ১২টার মধ্যে কাজ শেষ করে ফিরে যাচ্ছেন। গোলাপগঞ্জ গিয়ে শুক্রবার পর্যন্ত ঘরের বাজার করে বাড়ি ফিরবেন। শুধু নাজমুল না এখানে অপেক্ষমান অনেকেরই প্রায় একই বক্তব্য। অজানা শঙ্কায় তারা আগেবাগে জরুরি কাজ সেরে ফিরে যাচ্ছেন।
করিম উল্লাহ মার্কেটে একটি দোকানে কথা হয় মোবাইল মোরমতকারী আলামিনের সাথে। তিনি বলেন হরতাল আর অবরোধের কারণে অনেক কাস্টমার রাত থেকেই ফোন দিচ্ছিলেন সকালে তাড়াতাড়ি আসার জন্য। অন্যদিন ১২টার পর ধীরে ধীরে কাজ শুরু করলেও সোমবার ১০টার দিকেই দোকান খুলে কাস্টমারের ভিড় দেখা গেছে। করিম উল্লাহ মার্কেটে এটা খুব বিরল। সাধারণত দুপুরে খাবারের পর থেকে লোকজন আসেন কিন্তু আজ তা বিপরীত দেখা গেছে।