অবরোধের প্রভাব বাজারে
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ নভেম্বর ২০২৩, ৭:৩৩:৪৮ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: সারাদেশের মতো সিলেটেও অবরোধের প্রভাব পড়েছে বাজারে। এই প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে সবজিতে। তিনদিনের অবরোধের দুইদিনেই প্রায় সবগুলো সবজির দাম ২০ টাকার মতো বেড়ে গেছে। কোথাও কোথাও বিক্রেতারা তাদের সুবিধামতো দাম হাঁকছেন। সবজির সাথে একলাফে বেড়েছে আলু ২০ ও পেঁয়াজের দাম ৫০ টাকা করে। এরসাথে আগে থেকেই আছে নিত্যপণ্যের উর্ধ্বগতি। ফলে সবকিছু মিলিয়ে মানুষের অবস্থা চিড়াচ্যাপ্টা যেন।
টানা তিন দিনের অবরোধের দ্বিতীয় দিনে বুধবার দেড় থেকে দ্বিগুণ বেড়েছে পরিবহন খরচ। বাজার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এক দিনে প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে পণ্য পরিবহনের খরচ। যা সরাসরি প্রভাব ফেলেছে পণ্যের দামে। সবজির ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি সবজির দাম বেড়েছে ২০ টাকার মতো। গ্রাহক কম থাকায় বেচাবিক্রিও কমেছে আড়তগুলোতেও। খরচ বেশি পড়ায় অনেক ব্যাপারী সবজি নিয়ে আসেননি।
নগরীর বন্দর বাজরে এক ক্রেতা বলেন রোববার ফুলকপি কিনলাম ৪০ টাকা সোমবারে এসে দেখি ৬০ টাকা আবার বুধবারে ৮০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা থেকে সোমবার ৫০ টাকা বুধবারে একজন বলে ৭০ টাকা আবার আরেকজন ১০০ টাকা। বাজারের এমন হাল আমাদের মাতাল করে দিচ্ছে। ২০/৩০ টাকা যেন কোনো টাকাই না। এভাবে দাম কীভাবে বাড়ে। আমাদের মনে হচ্ছে বাজারে কোনো মনিটরিং নেই। যার যা ইচ্ছা তা করছে বিক্রিতা আর সিন্ডিকেট। ক্রেতারা এখানে অসহায়।
বিক্রেতারা দাম বাড়ার ব্যাপারে কোনো স্পষ্ট কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তারা বলেন আড়তে সরবরাহ কম এবং দাম বেশি। তাই আমরাও বেশি দামে কিনে আনি। দামের তারতম্যের ব্যাপারে বলেন জায়গার দিনওয়ারি হিডেন টেক্স দিতে হয়। টেক্স ছাড়া ভ্যান বা ঠেলা নিয়ে বসা যায় না। যে জায়গার ট্যাক্স বেশি সেখানে দামও বেশি।
এদিকে আড়তগুলোতে দেখা যায় অধিকাংশ সবজি আসে বিভিন্ন জেলা থেকে। সেখানে কৃষক পর্যায় থেকে সবজি কেনার পর ব্যাপারীরা সবজি আড়তে পাঠান। ট্রাকে করে এসব সবজি আনতে স্বাভাবিক সময়ে প্রতি ট্রাকে ২৮ থেকে ৩২ হাজার টাকার খরচ হয় ব্যাপারীদের।তবে অবরোধের কারণে অন্য জেলা থেকে সবজি নিয়ে আসতে চাইছেন না ট্রাকচালক ও ব্যাপারীরা। যেসব ট্রাক আসতে রাজি হচ্ছে, তারা ভাড়া চায় ৫০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ শুধু পণ্য পরিবহনে স্বাভাবিকের তুলনায় দেড় থেকে দ্বিগুণ ভাড়া খরচ হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, বেগুন, পটোল, ঝিঙা, কাঁকরোল, ঢেড়স, চিচিঙ্গা, বাঁধাকপি, ফুলকপি ইত্যাদি সবজি এক থেকে দুই দিনের বেশি মজুত করা যায় না। এর বেশি হলে এসব সবজি নষ্ট হতে শুরু করে। ফলে বাড়তি ভাড়া দিয়ে হলেও ব্যাপারীরা বিক্রির উদ্দেশ্যে আনছেন।পাইকারি পর্যায়ে দাম বাড়লে স্বাভাবিকভাবে তা খুচরা বাজারে প্রভাব ফেলবে। আড়তদারেরা বলছেন, ব্যাপারীদের অনেকেই লোকসান দিয়ে সবজি বিক্রি করেছেন। সেই দামেই কমিশনের ভিত্তিতে বিক্রি করেছেন আড়তদারেরা।