রাজনৈতিক অস্থিরতায় পতনে শেয়ারবাজার
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ নভেম্বর ২০২৩, ৬:৪৭:১০ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় মধ্যে দেশের শেয়ারবাজারে দরপতন চলছেই। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচক কমেছে। সেই সঙ্গে দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান।
এর আগে ২৮ অক্টোবর ঘিরে রাজনৈতিক অস্থিরতায় শঙ্কায় গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি লেনদেন কমে ৩০০ কোটি টাকার ঘরে চলে আসে।
আগে থেকেই মানুষের মনে রাজনৈতিক সংঘাতের যে শঙ্কা দানা বেধে ছিল তা ২৮ অক্টোবর বাস্তবে রূপ নেয়। বিএনপির সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে একজন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত দুজন মারা যাওয়ার সংবাদ পাওয়া যায়।
সমাবেশের দিন সংঘাতের মধ্যেই চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার সারাদেশে হরতালের ডাক দেয় বিএনপি। পরবর্তীতে জামায়াতে ইসলামীও হরতালের ডাক দেয়। এই দুই দলের হরতালের মধ্যে রোববার শেয়ারবাজারে স্বাভাবিক কার্যক্রম চললেও দরপতন হয়। তবে লেনদেনের পরিমাণ বাড়ে।
হরতালের পর বিএনপি এবং জামায়াতের পক্ষ থেকে ৩১ অক্টোবর এবং ১ ও ২ নভেম্বর অবরোধ কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। অবরোধ কর্মসূচির প্রথম দিন মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে স্বাভাবিক কার্যক্রম চলে। সেই দাম বাড়ার তালিকায় বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান নাম লেখানোর পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেন বেড়ে ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়।
তবে অবরোধের দ্বিতীয় দিন বুধবার শেয়ারবাজারে আবার দরপতন হয়। সেই সঙ্গে লেনদেন কমে ৩০০ কোটি টাকার ঘরে চলে আসে। মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি দাম কমার তালিকায় নাম লেখায় বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান।
এ পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মিলে। কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাজারের চিত্র বদলে যায়।
দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। ফলে একদিকে দাম কমার তালিকা বড় হয়, অন্যদিকে সবকটি মূল্যসূচক কমে দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে ৫৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৮৪টির এবং ১৭৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৫ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৬৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৫৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ২৩ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৩৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকটি মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৪৩ কোটি ৬ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৩৭২ কোটি ২৭ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন ৭০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে বাজারটিতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪৫ কোটি ৮২ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এমারেল্ড অয়েলের ৩৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ওরিয়ন ইনফিউশ, মিরাকেল ইন্ডাস্ট্রিজ, সমরিতা হাসপাতাল, বিচ হ্যাচারি, জেমিনি সি ফুড, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ এবং খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ১৫০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ৪৮টির এবং ৬৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।