নির্বাচন পর্যন্ত মাঠে থাকতে চায় আ’লীগ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ নভেম্বর ২০২৩, ১২:৩৫:২৯ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক : আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত টানা রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। রাজপথ নিজেদের দখলে রেখে শক্তি দেখানো ও বিরোধী দলগুলোর সরকার পতনের আন্দোলন মোকাবিলা করাই এর অন্যতম লক্ষ্য। এতদিন বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর কর্মসূচির বিপরীতে পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে শান্তি সমাবেশ, মহাসমাবেশসহ বেশকিছু কর্মসূচি পালন করেছে দলটি। তবে এবার আর কোনো পাল্টা কর্মসূচিতে যেতে চায় না দলটি। তাই নির্বাচন পর্যন্ত টানা কর্মসূচি পালনের বার্তা দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের যুক্তি- নির্বাচন পর্যন্ত সরকার পতনের আন্দোলন চালিয়ে যেতে চায় বিরোধী দলগুলো। তাদের আন্দোলন মোকাবিলা করতে রাজপথে থাকার কোনো বিকল্প নেই। তাই প্রতিদিনই শান্তি সমাবেশ পালন করা হবে। আগে রাজধানীকেন্দ্রিক এ ধরনের কর্মসূচির ওপর জোর দেয়া হলেও এবার দেশব্যাপী শান্তি সমাবেশের নামে রাজপথে নেতাকর্মীদের থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গতকাল সংসদ অধিবেশন শেষ হয়েছে। এরপরই দলীয় এমপিদের নিজ নিজ এলাকায় অবস্থানের নির্দেশ দিয়েছে দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা।
তাদের জানানো হয়েছে, দলের মধ্যে বিভেদ মিটিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে থাকতে হবে। নিজেদের এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। সরকার পতনের অংশ হিসেবে ডাকা যে কোনো কর্মসূচি ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন এমপি বলেন, যেভাবে সরকার পতনের জন্য বিরোধী দলগুলো মাঠে নেমেছে তাতে আমাদেরও মাঠে থাকাটা জরুরি হয়ে পড়েছে। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- মাঠ ছাড়া যাবে না। কারণ আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বিপুল ভোটে জয়ী হতে হবে। তার আগ পর্যন্ত বিরোধী দলগুলোর কর্মসূচি কঠোরভাবে দমন করতে হবে। নির্বাচন পর্যন্ত কর্মসূচি নিয়ে এরইমধ্যে দলের পক্ষ থেকে লিখিত নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যরিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে-বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, নাশকতা ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে দেশব্যাপী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ কর্মসূচি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।এদিকে ৩০শে অক্টোবর ২০২৩ সকালে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক যৌথসভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি আওয়ামী লীগ ও সকল সহযোগী সংগঠনের জেলা/মহানগর ও উপজেলা/থানা/পৌর শাখাসমূহকে ব্যাপকভাবে কর্মসূচি পালনের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।
এতে আরও বলা হয়, বিএনপি-জামায়াত অপশক্তি তথাকথিত হরতাল, অবরোধ ও সমাবেশের নামে যাতে নাশকতামূলক কর্মকা-ের মাধ্যমে জনগণের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এবং অপতৎপরতা করতে না পারে সেজন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী নেতাকর্মী সমর্থকদের সর্বাত্মক সতর্ক অবস্থানে থেকে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য আহ্বান জানানো যাচ্ছে। দলের এ নির্দেশনার অংশ হিসেবে এখন প্রতিদিনই রাজপথে অবস্থান করছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।গত মঙ্গলবার থেকে শুরু করে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টানা অবরোধ পালন করে বিএনপি ও জামায়াত। ওই তিনদিনই রাজপথে সতর্ক পাহারায় ছিল আওয়ামী লীগ। তারা মহল্লায় মহল্লায়, মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়ে নিজেদের সতর্ক কর্মসূচি পালন করে। বিএনপি-জামায়াতের অবরোধের শেষদিনেও রাজধানীতে সতর্ক পাহারায় ছিল ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। নাশকতা ঠেকাতে গুলিস্তানে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয় দলটির নেতারা। বৃহস্পতিবার (২রা নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে নেতাকর্মীদের আসতে দেখা যায়। বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তাদের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। অবস্থান নেয়া আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জানান, বিএনপি নাশকতার নামে নির্বাচন বানচাল করতে চায়। তারা জনগণের জানমালের ক্ষতি করতে চায়। তারা দেশকে একটি অস্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে যেতে চায়। আমরা তাদের এই সহিংসতার বিরুদ্ধে এবং জনগণের জান-মালের রক্ষায় শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। আমরা সতর্ক পাহারায় আছি।