হরতাল-অবরোধের শংকায় বাজারে ক্রেতা হুড়োহুড়ি
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ নভেম্বর ২০২৩, ১২:১০:৫৪ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীর ডাকা অবরোধের প্রভাবে পণ্যসংকট হবে এমন আতঙ্কে সিলেটের বাজারে ক্রেতারা কেনাকাটা করতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন। আর এই সুযোগে কিছু ব্যবসায়ী পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে কিছু ব্যবসায়ী খাদ্য মজুত করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। তবে এ ক্ষেত্রে নীরব বাজার নিয়ন্ত্রণে দায়িত্বে থাকা কর্তা-ব্যক্তিরা।
শনিবার দুপুরে সিলেট নগরীর কালিঘাট উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। কে কার আগে বাজার সদাই নেবেন এমন প্রতিযোগিতা চলতে দেখা গেছে। বাজারের দোকানগুলোয় ক্রেতাদের ভিড়ে ঠাসা। কেউ দরদামের তোয়াক্কা করছেন না। সবাই চাইছেন বাড়তি চাল, ডাল, নিত্যপণ্য। এমন অবস্থায় নগরীর বন্দরবাজারসহ অন্যান্য নিত্যপণ্য মার্কেটের পরিস্থিতি এমন যেন দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে সামনে রেখে সবাই ব্যস্ত সপ্তাহের খাবার কিনে মজুত করতে। দোকানিরাও গলদঘর্ম। দোকানগুলোয় কদিন আগেও এক কেজি আলুর দাম ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। কিন্তু গত এক সপ্তাহে তা এক লাফে ৫০ টাকা থেকে ৫৫ টাকা হয়ে গেছে।
গত দুই সপ্তাহ ধরে বাজারে আলু, পেঁয়াজ ও নিত্যপ্রয়োাজনীয় পণ্যের দাম যেভাবে বাড়ছে, তা নিয়ে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ ক্ষুব্ধ। এ অবস্থায় বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির দায় নিতে নারাজ খুচরা বিক্রেতারা। বাজারে হঠাৎ এমন অস্থিরতায় ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। তারা বলছেন, সরকার যেখানে দাম কমিয়েছে বিক্রেতারা সেটা না কমিয়ে উল্টো দাম বাড়িয়ে বাজার অস্থির করে দিচ্ছে। সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় ব্যবসায়ীরা এমন সিন্ডিকেট করতে পারছেন বলে মনে করছেন তারা।
নগরীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে দাম বেড়েছে মাছ, মুরগি, ডিম, কাঁচামরিচসহ বিভিন্ন সবজির। মাছ-গোশত-সবজিসহ সব নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়তি থাকায় কেনাকাটায় হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা। বাজারে আলু প্রতি কেজি ৫০ টাকা, দেশী পেঁয়াজ ১২০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৯০ টাকা, দেশী আদা ২৪০ টাকা, দেশী রসুন ২৪০ টাকা, চীনা রসুন ১৬০ টাকা, প্যাকেট আটা ৬৫ টাকা, প্যাকেট ময়দা ৭৫ টাকা, খোলা চিনি ১৩০ টাকা, প্যাকেট চিনি ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মোটা দানার মসুর ডাল ১০৫ টাকা ও ছোট দানার মসুর ডাল ১৪০ টাকা কেজি নেয়া হচ্ছে।
বাজারে মাছের দামও চড়া। বড় রুই ও কাতল প্রতি কেজি ৩৮০-৪২০ টাকা, বড় তেলাপিয়া মাছ ২২০ টাকা, বোয়াল ৬০০ টাকা, চাষের শিং মাছ ৩৫০ টাকা, কৈ ৩৫০, পাঙ্গাশ ১৮০-২০০ টাকা, চিংড়ি (ছোট) ৬০০ টাকা, চিংড়ি (বড়) ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর মেন্দিবাগ এলাকার হোটেল ব্যবসায়ী জানান, মাছ-মাংস, সবজিসহ সব পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে হোটেলে খাবারের মূল্যবৃদ্ধি না করে পারছি না। অথচ প্রায়ই কাস্টমারে সঙ্গে খাবারের মূল্য নিয়ে বাকবিতণ্ডা করতে হচ্ছে।
খুচরা মুদি দোকানদার এনাম হোসেন বলেন, মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে বেশ কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। স্থানীয় প্রশাসন নিয়মিত মনিটরিং করলে দ্রব্যমূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
এক ক্রেতা বলেন, অবরোধের কারণে বাজারে সরবরাহের ঘাটতি হতে পারে এবং দোকানপাট বন্ধ হয়ে যেতে পারে এই আশঙ্কায় অগ্রিম বাজার-সওদাও করে রেখেছি। দাম অনেক বাড়তি। সে চিন্তা করার এখন সময় নেই। না খেয়ে তো আর থাকা যাবে না! তাই কয়েকদিনের বাজার-সওদা করে রাখছি।