সাজা স্থগিত করে আসামিকে কোরআন পড়তে বললেন বিচারক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ নভেম্বর ২০২৩, ৭:৩২:৩৩ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: মাদক মামলায় মো. ইয়াকুব আজাদ (৩৫) নামে এক আসামির সাজা স্থগিত করে পবিত্র কোরআনের সূরা বাকারা, মায়েদা এবং নিসা ভালো করে পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তাকে ৫০টি গাছ লাগাতে এবং মাদ্রাসায় ভালোমানের কিছু ধর্মীয় বই উপহার দিতে বলা হয়েছে। রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬’র বিচারক মঞ্জুরুল ইমাম এ মামলার সাজা স্থগিত করে এ আদেশ দেন। ইয়াকুব আজাদ নোয়াখালীর চাটখিল থানার পশ্চিম শোশালিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
রোববার আপিল শুনানির জন্য আদালতে দিন ধার্য ছিল। আইনজীবী জায়েদুর রহমানের মাধ্যমে আসামি ইয়াকুব আজাদ প্রবেশন আইন অনুযায়ী দোষ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। শুনানিকালে কাঠগড়ায় থাকা আসামির কাছে বিচারক জিজ্ঞাসা করেন, ‘আপনার (আসামি) ছেলে-মেয়ে আছে।’ জবাবে আসামি জানান, ‘এক ছেলে মাদ্রাসায় হাফেজি পড়ে, আর মেয়ে ছোটো।’ তখন বিচারক জিজ্ঞাসা করেন, ‘ঘর পবিত্র করার জন্য ছেলেকে হাফেজি পড়াচ্ছেন, সে আপনার জন্য দোয়া করবে, মরে গেলে জানাজা পড়াবে, আর আপনি ইয়াবা মামলার আসামি।’ এরপর বিচারক বলেন, ‘আপনি কি পড়ালেখা করেছেন।’ তখন আসামি বলেন, ‘আমি মাদ্রাসা থেকে ফাজিল পাস করেছি।’ এরপর বিচারক বলেন, ‘ছেলে মাদ্রাসায় পড়ে, আপনি মাদ্রাসা থেকে ফাজিল পাস। আপনি কেন ইয়াবার মামলার আসামি হলেন।’ তখন আসামি বলেন, ‘স্যার আমাকে ইয়াবা দিয়ে মামলা দিয়েছে।’ এরপর বিচারক বলেন, ‘পবিত্র কোরআনের কোনো সূরায় মাদক সম্পর্কে বলা আছে জানান। সূরা, বাকারা, মায়েদা ও নেছা ভাল করে পড়বেন। এর মধ্যে পাবেন মাদক সম্পর্কে বলা কথা।’
এরপর বিচারক বলেন, ‘আপনার সাজা স্থগিত করা হলো। আর প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধায়নে থেকে আপনি (আসামি) ৫০টি গাছ লাগাবেন, পবিত্র কোরআনের সূরা বাকারা, মায়েদা এবং নিসা ভাল করে পড়বেন। আপনার ছেলে যে মাদ্রাসায় পড়ে সে মাদ্রাসায় ভালমানের কিছু বই উপহার দিবেন। তবে এমন বই দিয়েন না, যে বই পড়ে আবার মানুষ জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ে।’ ওই আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর বিপুল চন্দ্র দেবনাথ ব্যতিক্রমধর্মী এ রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১০ সালের ৩ নভেম্বর শাহবাগ থানার হোটেল আপ্যায়নের পূর্বপাশ থেকে ইয়াকুবকে ৫ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। ওইদিনই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক কাজী হাবিবুর রহমান মামলা করেন। মামলাটি তদন্তের পর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক এসএম এলতাস উদ্দিন ওই বছরের ৯ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।