সিলেটে বিক্ষিপ্ত পিকেটিং গাড়িতে আগুন-ভাঙচুর
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ নভেম্বর ২০২৩, ৮:৩০:৫২ অপরাহ্ন
দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি
স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীর ডাকা দ্বিতীয় দফার অবরোধের প্রথম দিনে সকাল থেকে সিলেটের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে ঝটিকা মিছিল, পিকেটিং, গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে নেতা-কর্মীরা। এছাড়া মহাসড়কে ইটের টুকরা বিছিয়ে ও গাছের শুকনা ডালে আগুন ধরিয়ে যান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটায় অবরোধ সমর্থকরা। এ সময় তাদের অনেকের গামছা দিয়ে মুখ বাঁধা এবং মাথায় ছিল হেলমেট। তবে এসব ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।
এদিকে অবরোধের প্রথম দিন সিলেটে ২৫ নেতা-কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী।
রোববার সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সিলেট থেকে দূরপাল্লার কোনো যাত্রীবাহী বাস ছেড়ে যায়নি বলে খবর পাওয়া যায়। নগরেও তুলনামূলকভাবে যান চলাচল কম ছিলো। ফলে কর্মস্থলমুখী যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ সড়কে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিতি ছিলো।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বেলা পৌনে ১১টায় দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোগলাবাজার পারাইরচক জলকরকান্দি এলাকায় পিকআপ ভ্যানে আগুন দেয় অবরোধ সমর্থনকারীরা। এ সময় পিকআপের সামনের কাঁচও ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় মোটরসাইকেলসহ অবরোধ সমর্থনকারী দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ।
এরআগে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপি এবং জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের লালাবাজার ভরাউট এলাকায় ইট আর ইটের টুকরা বিছিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় তাদের অনেকের মুখ ছিল গামছা দিয়ে বাঁধা এবং মাথায় ছিল হেলমেট। নেতা-কর্মীরা ইট আর ইটের টুকরা বিছিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। প্রায় আধা ঘন্টা সেখানে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগ বিরোধী নানা শ্লোগান দেন।
একই সময়ে নগরের নাইওরপুল থেকে কুমারপাড়া সড়কে পিকেটিংয়ের পাশাপাশি বিক্ষোভ মিছিল করে বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীরা। বেলা ১২টার দিকে নগরীর মেন্দিবাগ এলাকার শাহজালাল ব্রিজের উপর একটি কাভার্ডভ্যান ভাঙচুর করে ছাত্রদল কর্মীরা।
এরআগে সিলেট-জকিগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের মানিকপুর ও নগরের কাজলশাহ এলাকায় গাছের শুকনা ডালে আগুন ধরিয়ে পিকেটিং করেন বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। প্রায় একই সময় শাহপরান এলাকায়ও সিলেট-তামাবিল সড়কে অবরোধের সমর্থনে পিকেটিং করে বিএনপি নেতা-কর্মীরা। এ সময় সেখানে গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ধাওয়া দিলে অবরোধ-সমর্থকেরা পালিয়ে যান।
বিকেল ৩টায় মিরাবাজার এলাকায় বিএনপি নেতা ছিদ্দিকুর রহমান পাপলু ও যুবদল নেতা উমেদুর রহমান উমেদের নেতৃত্বে যুবদল ও ছাত্রদল কর্মীরা পিকেটিং করে। এ সময় তারা সরকারবিরোধী বিভিন্ন শ্লোগান দেন।
এছাড়া অবরোধের প্রথম দিনে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টের পাশাপাশি ঢাকা-সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা।
মহানগরীর মতো সিলেটের সবকটি উপজেলা অবরোধের সমর্থনে পিকেটিং করে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা। সকালে বিয়ানীবাজারে অবরোধ করে পিকেটিং করে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এ সময় তারা রাস্তায় গাছ ফেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়া গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং এলাকায় একটি অটোরিকশা ভাঙচুর করে পিকেটারেরা।
সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে অবরোধ কর্মসূচি করছে। সরকার পদত্যাগ না করা পর্যন্ত দেশের মানুষের স্বার্থে বিএনপি নানা কর্মসূচি দেবে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ছাড়া দেশে কোনো পাতানো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার মো: আজবাহার আলী শেখ বলেন, অবরোধ চলাকালে যেকোনো ধরনের নাশকতা ও জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি র্যাব-বিজিবি কাজ করছে। মহাসড়কসহ নগরীর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।